একুশের প্রথম প্রহরে বৃষ্টিতে কিছুটা ভোগান্তি হলেও তা উপেক্ষা করেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শহীদ মিনারে আসা মানুষ।
Published : 21 Feb 2024, 10:17 AM
শীতের বিদায়ের পর প্রথম বৃষ্টি হয়েছে নেত্রকোণায়। মাঝারি পরিমাণের এ বৃষ্টিতে কৃষকদের মাঝে ছড়িয়েছে খুশির বার্তা।
মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে শুরু হয়ে থেমে থেমে রাতভর চলা এই বৃষ্টির পর চাষীরা জানিয়েছেন, এমন বৃষ্টি বোরো ধানের ক্ষেতে থাকা গাছের জন্যে ভাল হবে। সেচ কম লাগায় খরচও কিছুটা কমবে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নুরুজ্জামানও বলেন, “মওসুমে প্রথম এ বৃষ্টি বোরো চাষীদের খুবই উপকারে আসবে। এই সময়ে এ ধরনের বৃষ্টি চাষী ও আমাদের কৃষি বিভাগের জন্য সৌভাগ্যের। ফলন ভাল হয়।”
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে হঠাৎ করেই আকাশে বিদ্যুৎ চমকাতে থাকে। সাথে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি ঝরতে থাকে। সোয়া ১১টার দিকে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে থাকে।
পরে আধাঘণ্টা বৃষ্টি হওয়ার পর থেমে থেমে ঝড়ো হাওয়ার সঙ্গে বৃষ্টি চলে রাতভর। ভোরের দিকে তা থামলেও বুধবার সকাল সাড়ে ৯টা নাগাদও আকাশ মেঘলা ছিল।
রাতে হঠাৎ শুরু হওয়া বর্ষণের সময় বাইরে থাকা শহরবাসি ভিজেই দ্রুত বাসায় ফিরতে থাকেন।
এছাড়া একুশের প্রথম প্রহরে এমন বৃষ্টিতে কিছুটা ভোগান্তি পোহাতে হলেও তা উপেক্ষা করেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন শহীদ মিনারে আসা মানুষ।
জেলা প্রেসক্লাবের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান বলেন, মধ্যরাতের এমন বৃষ্টি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণে সামান্য ব্যাঘাত ঘটালেও তা বাধা হতে পারেনি।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, জেলার হাওরাঞ্চলে প্রায় ১ লাখ ৮০ হাজার কৃষক এবার ৪১ হাজার হেক্টরের বেশি বোরো ধানের আবাদ করেছেন বলে। আর জেলায় মোট সাড়ে তিন লাখ চাষী বোরো আবাদ করেছেন ১ লাখ ৮৫ হাজার হেক্টর জমি।
এই বোরো আবাদের সিংহভাগ জমিই ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে ফলানো হয় ফসল। এতে কৃষকের খরচ বাড়ার পাশাপাশি ওই পানির আয়রনে জমির অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব নষ্ট হয়ে কমছে উর্বরা শক্তি। এসব কারণেই বোরো আবাদের সময়টাতে বৃষ্টি হলে সেচ খরচ বাঁচে আর জমির স্বাস্থ্যও থাকে ভাল, আর তাই কৃষক ও কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা উচ্ছ্বসিত হন।
সদর উপজেলার লক্ষ্মীগঞ্জ গ্রামের কৃষক আয়েন উদ্দিন বলেন, “রাতে যে বৃষ্টি হইছে তা আমরার ধানের লাইগ্যা অনেক ভালা অইবো। সেচ কম লাগবো। জমি অনেকটাই ভিজেছে। ধান গাছও পুরোটা ভিজেছে। সেচের পানির থেইক্যা বৃষ্টির পানি কম হলেও বেশি উপকারে আসে খেতের লাইগ্যা।
একই কথা বললেন কুনিয়া গ্রামের আরেক কৃষক জমির উদ্দিন। তিনি বলেন, “এইবায় যদি মাঝেমধ্যে বৃষ্টি হয় তাইলে আমরার বোরো ধানের লাইগ্যা অনেক ভালা অইবো।”
হাওর উপজেলা খালিযাজুরীর বোয়ালী গ্রামের কৃষক ইনছান মিয়া বলেন, “রাইতের বৃষ্টিটা দারুণ কামে লাগবো। খেত ভিজেছে। এখন সকাল সাড়ে ৮ টার মতো বাজে। আকাশ মেঘলা। আকাশের ভাবসাব দেখে মনে হইতাছে আরো বৃষ্টি হবে। এখনের এই বৃষ্টি আমরার ফসলের লাইগ্যা ভালা।”