“দুপুরের পরপরই সব ঠিকঠাক হয়ে যায়। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি।”
Published : 19 Sep 2024, 08:28 PM
গাজীপুরের টঙ্গীতে বকেয়া বেতনসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ করেছেন পোশাক কারখানার শ্রমিকরা।
শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলম জানান, বৃহস্পতিবার সকালে বেতনের দাবিতে পোশাক শ্রমিকরা কর্মবিরতি শুরু করেন। বিকাল ৫টা পর্যন্ত কর্মবিরতি করে চলে যায় তারা।
তিনি বলেন, “শ্রমিক অসন্তোষের জেরে টঙ্গীতে কয়েকটি পোশাক কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। তবে দুপুরের পরপরই সব ঠিকঠাক হয়ে যায়। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলার খবর পাওয়া যায়নি। যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে এবং সেনাবাহিনীর টহল অব্যাহত রয়েছে।”
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে শিল্প পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে টঙ্গীর সাতাইশ রোড এলাকায় ‘এসআরপি লিমিটেড’ কারখানার প্রায় দুইশ শ্রমিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। পরে শিল্প পুলিশ গিয়ে তাদের কাজে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানালে শ্রমিকরা অগাস্ট মাসের বেতন দাবি করেন। পরে পুলিশ মালিক পক্ষের সঙ্গে ‘সমঝোতার ভিত্তিতে’ বেলা ৩টার দিকে শ্রমিকদের কর্মস্থলে যোগদানের আহ্বান করেন।
এর আগে সকাল ৮টা থেকে টঙ্গীর বিসিক এলাকার ‘এ্যামটারনেট গ্রুপ লিমিটেডের’ প্রায় তিন হাজার শ্রমিক কারখানায় কর্মবিরতি পালন করেন। এরপর বেতন-ভাতার দাবিতে তারা বিক্ষোভ করলে সেনাবাহিনীর সদস্যরা মালিক পক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর দুই পক্ষের ‘সমঝোতার ভিত্তিতে’ শ্রমিকরা কাজে যোগ দেন।
কর্মবিরতি পালন করেছেন টঙ্গী পূর্ব থানার পাগার এলাকায় ‘শিশির নিটিং অ্যান্ড ডাইং’ লিমিটেডের এর ১২’শ শ্রমিক। বকেয়া বেতনের দাবিতে ‘সিজন্স ড্রেসেস লিমিটেড’ পোশাক কারখানার শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করছেন।
গাজীপুরে বকেয়া বেতনের দাবিতে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
শ্রমিকরা জানান, বিভিন্ন দাবিতে কয়েকদিন ধরে আন্দোলন করছেন তারা। মঙ্গলবার মালিকপক্ষ জুলাই মাসের অর্ধেক বেতন পরিশোধ করেছেন; বাকি অর্ধেক বেতন পরিশোধ করেনি। তারা বকেয়া বেতন পরে পরিশোধ করার প্রতিশ্রতি দিলেও শ্রমিকরা মানতে নারাজ। তাদের দাবি, বকেয়া বেতন পরিশোধ করে কাজে নিতে হবে।
তারা বলেছেন, কিছু কারখানার মালিক পক্ষ থেকে শ্রমিকদের দাবি মেনেও নিয়েছেন। কিন্তু যেসব পোশাক কারখানার মালিকরা শ্রমিকদের সঙ্গে আলোচনা না করে কারখানা বন্ধ করে রেখেছে বা শ্রমিকদের দাবি মেনে নিচ্ছে না, সেসব পোশাক কারখানায় শ্রমিকরা আন্দোলন এবং কর্মবিরতি পালন করেছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার (টঙ্গী অঞ্চল) মোশাররফ হোসেন জানান, এসআরপি সোয়েটার লিমিটেডের প্রায় দুই শতাধিক শ্রমিক অগাস্ট মাসের বকেয়া বেতনের দাবিতে উৎপাদন বন্ধ করে কারখানার ভেতরে কর্মবিরতি পালন করছেন। শিশির নিটিং অ্যান্ড ডাইং লিমিটেড কারখানার ১ হাজার ২৫০ শ্রমিক একই দাবিতে কারখানার প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয়। পরে ঘটনাস্থলে শিল্প পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এছাড়া সিজন্স ড্রেসস লিমিটেড পোশাক কারখানার শ্রমিকদের রোববার বকেয়া আর্ধেক বেতন পরিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল কারখানা কর্তৃপক্ষ। ঘোষণার দিন তারা মেনে নিলেও আজ আবার তারা কারখানার ভেতরে কাজ বন্ধ করে কর্মবিরতি পালন করে বলে জানান মোশাররফ।