এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়।
Published : 13 Feb 2025, 09:37 PM
আড়াই মাসের ব্যবধানে আবার বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক শুচিতা শরমিনের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় আন্দোলনকারীরা উপাচার্যের কার্যালয় তালা ঝুলিয়ে দেন।
বৃহস্পতিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড ফ্লোর থেকে শিক্ষার্থীদের একটি বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, “শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের দপ্তরে তালা দিয়েছেন। তবে কোনো দাবি উপস্থাপন করেনি। তাই বিষয়টি বলতে পারব না।”
তবে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আগের দাবিগুলো পূরণে উপাচার্য একমাসের বেশি সময় নিলেও তা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছে। এ ছাড়া তিনি বেশ কিছু বিতর্কিত কর্মকাণ্ড করেছেন। এসব বিষয়ে আবার তার পদত্যাগ চেয়ে কার্যালয়ে তালা দেওয়া হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম বলেন, কয়েকদিন আগে উপাচার্যবিরোধী একটি আন্দোলন হয়েছিল। সেখানে কিছু শর্ত দেওয়া হয়েছিল। সেই সময় উপাচার্য বলেছিলেন, দাবি পূরণ করবেন। কিন্তু পরবর্তীতে তিনি কোনও কথাই রাখেননি।
তাই শিক্ষার্থীদের এক দফা, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে এই কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
তিনি বলেন, “উপাচার্য সিন্ডিকেট সভা থেকে অবৈধভাবে দুইজন সদস্যকে বাতিল করেছেন। এমন একটি কাজ তিনি করেছেন বা করতে যাচ্ছেন; যা আমরা মেনে নিতে পারছি না।”
এ সময় শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে ছয়টি দাবি উত্থাপন করা হয়। দাবিগুলো হলো-
১. মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও নিয়ম বহির্ভূত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট রেজিস্ট্রারকে বহাল রেখে অসাধু সুবিধা দেওয়ার জন্য পাতানো গোপন সিন্ডিকেট সভার আহ্বান।
২. ২৯ জুলাই বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে হামলায় অংশ নেওয়া নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের আগাম জামিন পাওয়া ও ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ না হওয়া।
৩. নিয়মবহির্ভূতভাবে দুইজন সিন্ডিকেট সদস্যকে বাদ দিয়ে চিহ্নিত আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের নিয়ে পাতানো গোপন সিন্ডিকেটের নাটক মঞ্চস্থ করা।
৪. আইন ও সংবিধানের দোহাই দিয়ে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের স্বপদে বহাল রেখে মূল পদে আনার ‘কুচক্রী পাঁয়তারা’ চালানো।
৫. গত ৬ মাসেও ২২ দফার কোনো রকম প্রতিফলন করতে ব্যর্থ হওয়া।
৬. ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের অবাধ বিচরণ, মাদক সেবন ও ভাঙচুরের বিরুদ্ধে প্রশাসন কোনো প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হওয়া।
উপাচার্য যদি এসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তার অবস্থান পরিষ্কার না করেন তাহলে তাকে অনতিবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে ২৭ নভেম্বর বিভিন্ন অভিযোগে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সেই সময়ও তার কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণে এক মাসের সময় নেন উপাচার্য।