গোবিন্দগঞ্জে ব্যবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা

নিহত মাসুদ একটি হোসিয়ারি কারখানায় শীতবস্ত্র উৎপাদনের পাশাপাশি একটি কলেজে ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করতেন।

গাইবান্ধা প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 01:39 PM
Updated : 29 Nov 2022, 01:39 PM

গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলায় এক ব্যাবসায়ীকে গলা কেটে হত্যা করেছে অজ্ঞাত হামলাকারীরা।

সোমবার রাতে উপজেলার কোচাশহর ইউনিয়নের নয়ারহাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মাসুদ রহমান (৪০) কোচাশহর বাজারে ন্যাশনাল হোসিয়ারি নামে একটি কারখানায় শীতবস্ত্র উৎপাদনের পাশাপাশি গোবিন্দগঞ্জ কারিগরী কলেজে ল্যাব সহকারী পদে চাকরি করতেন। তিনি কোচাশহর ইউনিয়নের কানাইপাড়া গ্রামের আজিজার রহমানের ছেলে।

স্বজনদের বরাতে গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি মো. ইজার উদ্দিন জানান, তিনি ওইদিন রাত ৮টার দিকে বাড়ি থেকে নয়ারহাট বাজার মসজিদে যাবার পথে অজ্ঞাত হামলাকারীরা জবাই করার চেষ্টা করে। এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় দৌড়ে এসে রাস্তায় লুটিয়ে পড়েন। তার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন ছুটে যান। তখন তিনি চিৎকার দিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন।

“তাকে প্রথমে গোবিন্দগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে পৌঁছার আগেই রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি মারা যান।”

ওসি জানান, রাতেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক ও  হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরিটি মসজিদের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। স্বজনদের পক্ষ থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, এই ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবদুল মোমিন নামে একজনকে আটক করেছে পুলিশ। সোমবার রাতে বাজারের বিভিন্ন দোকানের সিসিটিভির ফুটেজে গতিবিধি দেখে ওই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।

আটক মোমিন নিহতের খালাতো ভাই ও তার দোকানের কর্মচারী বলে পুলিশ জানিয়েছে।

মোমিনের বাড়ি পার্শ্ববর্তী শালমারা ইউনিয়নের মিরাপাড়া গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে।

পরিবারে চলছে আহাজারি

মঙ্গলবার দুপুরে কানাইপাড়া গ্রামে নিহতের বাড়ি গিয়ে দেখা গেছে, বাড়িজুড়ে শোকের মাতম। নিহত ব্যবসায়ী মাসুদ রহমানের কলেজ পড়ুয়া ছেলে ইব্রাহিম, দুই মেয়ে নবম ও তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নাজনিন ও সুমাইয়া কান্নাকাটি করছেন। পাশে নিহতের বাবা ও মা শোকস্তব্ধ; যেন জীবন্ত লাশ।

নিহত মাসুদ রহমানের স্ত্রী নারগিস বেগম (৩২) আহাজারি করছিলেন।

তিনি বলে, “হামার সোয়ামি নমাজ পড়তে যাচ্চিল। সে কী দোষ করচিল। কেটা হামার সোয়ামিক মারি ফেলাল, তোমরা হামার সোয়ামিক আনি দ্যাও। হামি জানি হত্যার বিচার পাই।”

এ সময় নিহতের ছেলে-মেয়েরাও হত্যায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।