“উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও এখনও কেউ আসেনি।”
Published : 02 Jul 2024, 04:46 PM
কয়েকদিনের টানা বর্ষণে পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ির কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে প্রায় ১০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
এদিকে বাঘাইহাটে সড়কের পানি ওঠার কারণে সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে পর্যটন উপত্যকা সাজেক। ফলে সেখানে বেড়াতে যাওয়া কয়েক’শ পর্যটক আটকা পড়েছে।
সাজেক কটেজ মালিক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা জানান, মঙ্গলবার সকালে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বাঘাইছড়ি-বাঘাইহাট সড়ক তলিয়ে যায়। ফলে সাজেকে ছোট-বড় মিলে ১২৫ গাড়ির পর্যটক আটকা পড়ে।
তিনি বলেন, “সোমবার যেসব গাড়ি এসেছে তাদের সবাই সাজেকে অবস্থান করছে। পানি যেভাবে বাড়ছে তাতে আজকে গাড়ি চলাচল করা সম্ভব হবে বলে মনে হয় না।
“অন্যদিকে সকালে খাগড়াছড়ি থেকেও কোনো গাড়ি সাজেকে প্রবেশ করতেও পারবে না। ফলে যারা আছেন তাদের কোনো রুম ভাড়া লাগবে না। তারা শুধুমাত্র পানির খরচ দিলেই হবে।”
বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানান, পাহাড়ি ঢলের কারণে বাঘাইছড়ি উপজেলায় কাচালং নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
এতে সদর, বারবিন্দুঘাট, লাইল্যাঘোণা, মাস্টারপাড়া, উলুছড়ি, এফব্লক, মুসলিক ব্লক, রূপকারি, পুরাতন মারিশ্যা ও বাঘাইহাটসহ বিভিন্ন নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে দশ হাজার পরিবার পানিবন্দি রয়েছে।
তিনি বলেন, “উপজেলায় ৫৫টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হলেও কেউ আসেনি। আর বাঘাইহাট সড়ক পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাজেকে পর্যটকরা আটকা পড়েছে। পানি না নামা পর্যন্ত কেউ বের হতে পারবে না।"
আটকা পড়া পর্যটকরা সুস্থ আছেন বলে সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল চাকমা জন জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “বৃষ্টি কমলে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে পানি নেমে যাবে বলে আশা করছি। তারপর পর্যটকরা নিজ নিজ গন্তব্যে ফিরতে পারবেন।”
এদিকে টানা কয়েকদিন বৃষ্টির ফলে কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার কাপ্তাই কর্ণফুলি বিদ্যুৎকেন্দ্রের উৎপাদন বেড়েছে।
মঙ্গলবার সকালে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, সকাল ৯টা পর্যন্ত এই কেন্দ্রের ৫টি ইউনিটের মধ্যে ৪টি ইউনিট থেকে ১ শত ৬৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে।
এর মধ্যে ১ নম্বর ও ২ নম্বর ইউনিট থেকে ৪২ মেগাওয়াট করে ৮৪ মেগাওয়াট এবং ৪ নম্বর ও ৫ নম্বর ইউনিট থেকে ৪০ মেগাওয়াট করে ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে।
এটি চলতি বছরে কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্রের সর্বাধিক উৎপাদন জানিয়ে তিনি বলেন, “পানির পরিমাণ যদি বাড়তে থাকলে বিদ্যুৎ উৎপাদন আরও বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
এদিকে টানা বৃষ্টির কারণে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি এড়াতে নিজেদের সর্বোচ্চ প্রস্তুতির কথা জানিয়েছেন রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান।
ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট সবগুলো বিভাগের সঙ্গে সমন্বয় সভা করেছেন এবং অন্তত ২৬৭টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার কথা জানিয়েছেন তিনি।