২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রেজাউল। ৯ মার্চ মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তি হিসেবে তার গলিত লাশ উদ্ধার হয়।
Published : 15 Mar 2025, 04:21 PM
গাজীপুরের শ্রীপুরে এক পোশাক শ্রমিকের গলিত লাশ উদ্ধারের ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ছিনতাইয়ে বাধা দেওয়ায় ওই ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছিল বলে দাবি পুলিশের।
শনিবার বেলা ১১টায় শ্রীপুর থানায় এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানিয়েছেন শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল।
গ্রেপ্তাররা হলেন, নেত্রকোণা সদর থানার টেংগা গ্রামের আলী ওসমানের ছেলে জুলহাস (৩৪), শ্রীপুরের উজিলাব গ্রামের আফাজ উদ্দিনের ছেলে নুরুল ইসলাম (৫২) ও শ্রীপুর পৌর এলাকার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড গ্রামের বকুলতলা এলাকার আলতাফ হোসেনের ছেলে শাহাদত হোসেন শান্ত (২৫)।
নিহত রেজাউল করিম (৪০) বাঘেরবাজার এলাকায় এইচ.পি গার্মেন্টস্ নামের একটি কারখানায় অপারেটর পদে চাকুরি করতেন।
রেজাউল নেত্রকোণা সদর থানার দুর্গাশ্রম গ্রামের ইসহাক মুন্সীর ছেলে। তিনি স্ত্রী হালিমা আক্তার ও ১২ বছর বয়সি মেয়ে সুমাইয়া আক্তারকে নিয়ে শ্রীপুরের গিলারচালা গ্রামের নতুন বাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।
গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন রেজাউল। তার সন্ধান না পেয়ে শ্রীপুর থানা পুলিশের সহযোগিতা নেন স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে শ্রীপুর থানার ওসি মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন মণ্ডল বলেন, গত ৯ মার্চ বিকালে শ্রীপুরের গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি ঢালে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহটি পঁচে-গলে যাওয়ায় পরিচয় শনাক্ত সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানা পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেন।
পরে নিহতের ভাগিনা রিমন মরদেহের গায়ে থাকা শার্ট দেখে উদ্ধার হওয়া লাশটি তার মামা রেজাউল করিমের বলে শনাক্ত করেন। এরপরই শ্রীপুর থানার পুলিশের একাধিক টিম হত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে।
পরে শুক্রবার পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
ওসি জয়নাল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানিয়েছে ২৭ মার্চ রাতে গড়গড়িয়া মাস্টারবাড়ি ঢালে মহাসড়কের পাশে নির্জন জায়গায় রেজাউলের গতিরোধ করেন শান্ত, নুরুল, জুলহাসসহ চারজন।
তারা রেজাউলের টাকা ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। পরে তাকে সড়কের পাশে নিয়ে গলায় গামছা পেঁচিয়ে হত্যা করে মরদেহ ফেলে চলে যায় চারজন।
শ্রীপুর থানার এসআই সুজন কুমার পণ্ডিত বলেন, “তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় প্রথমে জুলহাসকে শ্রীপুরের আনসার রোড এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে নুরুল ইসলাম ও শান্তকে গ্রেপ্তার করা হয়।”
এ ঘটনায় আরও একজন জড়িত আছে; তদন্তের স্বার্থে তার নাম-পরিচয় প্রকাশ করা হচ্ছে না বলেও জানান এসআই সুজন।
ওসি বলেন, গ্রেপ্তারদের শনিবার আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। বাকী আসামিকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (কালিয়াকৈর সার্কেল) আফজাল হোসেন, থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শামীম ও পরিদর্শক (অপারেশন) নয়ন কর উপস্থিত ছিলেন।