“মাসুদের শরীরের ৩০ শতাংশ ও ছেলের শরীর ২৭ শতাংশ পুড়ে গেছে। মাসুদের অবস্থা আশংকাজনক। তবে ছেলে আব্দুল রাশেদ শংকামুক্ত।”
Published : 24 Apr 2024, 10:04 AM
গোপালগঞ্জে সদর উপজেলায় বাড়ির সামনে দুর্বৃত্তদের ছোড়া বোমায় এক ব্যক্তি ও তার শিশু সন্তান মারাত্মক আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে উপজেলার লতিফপুর ইউনিয়নের ঘোষেরচর উত্তরপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আনিচুর রহমান।
গুরুতর আহতরা হলেন মাসুদ শেখ (৪৫) ও তার চার বছর বয়সী ছেলে আব্দুল রাশেদ শেখ। মাসুদ ওই গ্রামের মন্টু শেখের ছেলে। তিনি গোপালগঞ্জ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা প্রহরী পদে চাকরি করেন।
ওসি আনিচুর জানান, রাতে মাসুদ শেখ ছেলেকে নিয়ে মোটরসাইকেলে গোপালগঞ্জ শহর থেকে বাড়ি পৌঁছালে চার থেকে পাঁচ দুর্বৃত্তের একটি দল তাদের লক্ষ্য করে শক্তিশালী দুটি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমাগুলির বিস্ফোরণে বাবা-ছেলে দু’জনেই মারাত্মক আহত হন।
বিস্ফোরণের শব্দে স্থানীয়রা ছুটে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে প্রথমে গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক গাজী মো. আশিকুজ্জামান বলেন, রাত সাড়ে ৯টার দিকে মাসুদ শেখ ও তার ছেলে আব্দুল রাশেদকে জরুরি বিভাগে নিয়ে আসা হয়।
“মাসুদ শেখের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ক্ষত হয়েছে। বাম পায়ের লিগামেন্ট ছিঁড়ে গেছে ও হাড় কেটে গেছে। পেটে বড় ইনজুরি রয়েছে। আমার ধারণা তার পেটের মধ্যে কিছু রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে তাকে অপারেশন করিয়ে পেট থেকে সেটা বের করতে হবে।
“এ ছাড়া মাসুদের শরীরের ৩০ শতাংশ ও ছেলের শরীর ২৭ শতাংশ পুড়ে গেছে। মাসুদের অবস্থা আশংকাজনক। তবে ছেলে আব্দুল রাশেদ শংকামুক্ত। তাদের দুজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ”
আহত মাসুদ শেখের ভাবী ফরিদা বেগম বলেন, “রাতে আমরা ঘরে ভাত খাচ্ছিলাম। এ সময় লোডশেডিংয়ে চারদিক অন্ধকার হয়ে যায়। এর মধ্যে বিকট শব্দে শুনে ঘর থেকে দৌড়ে বের হই।
“এসে দেখি মাসুদ ও তার ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার উপর পড়ে আছে। একটু পাশে তার মোটরসাইকেল পড়ে আছে। মোটরসাইকেল থেকেও আগুনের ধোঁয়া বের হচ্ছিল। ঘরের দরজায় বড় ছিদ্র হয়েছে।”
ফরিদা বেগম আরও বলেন, “কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তা জানি না। তবে দ্রুত তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানাই।”
ওসি আনিচুর জানান, ঘটনার পর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার লুৎফুল কবির চন্দনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এছাড়া গোপালগঞ্জ পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন টিম কাজ করছে।
তিনি আরও বলেন, “আহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে এখনো কোনো অভিযোগ দেয়নি, তারপরও আমরা তদন্ত শুরু করেছি। জড়িতদের খুঁজে বের করতে অভিযান শুরু করা হয়েছে। দ্রুত আমরা এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করতে পারব।”