“এটি আম-মজলিস। এখানে সব দলের লোকই আছে। তাই বিতর্ক এড়াতে নির্দিষ্ট দলের কারো নাম উল্লেখ করা উচিত হবে না ভেবেই তা করিনি৷”
Published : 31 Mar 2025, 04:33 PM
ঈদ জামাত শেষে দোয়ায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ না করায় নারায়ণগঞ্জ সদরে এক ইমামকে চাকরিচ্যুত করার হুমকি দিয়েছেন স্থানীয় যুবদল নেতা৷
সোমবার সকাল পৌনে ৮টায় উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নে কাশীপুর কেন্দ্রীয় ঈদগাহের দ্বিতীয় জামাতের পর এ ঘটনা বলে অভিযোগ করেছেন ফতুল্লার চরকাশীপুরের আঞ্জুবাহার জামে মসজিদের খতিব মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক৷
ইমদাদুল বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির প্রচার ও দাওয়াহ বিষয়ক সম্পাদক।
তার অভিযোগ, তিনি ওই ঈদগাহের দ্বিতীয় জামাতে ইমামতি করেছিলেন। নামাজ শেষে তাকে হেনস্থা ও তার চাকরি কেড়ে নেবার হুমকি দিয়েছেন ফতুল্লা থানা যুবদলের সাবেক সহ-সম্পাদক সৈকত হাসান ইকবাল৷
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, দ্বিতীয় জামাত শেষে ইমাম ইমদাদুল হক দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনায় মোনাজাত করেন৷ এ সময় শারীরিকভাবে অসুস্থ সবার সুস্থতা কামনা দোয়া করেন তিনি৷ তবে, বিশেষ কারও নাম উল্লেখ করেননি৷
মোনাজাত শেষে ইমামকে ঘিরে ধরেন সৈকত হাসান ইকবাল ও তার অনুসারীরা৷ অনুরোধের পরেও বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার নাম উল্লেখ করে দোয়া না করায় ইমামের সঙ্গে তিনি উচ্চবাচ্য করতে থাকেন৷ পরে সাধারণ মানুষের প্রতিবাদের মুখে যুবদল নেতা ও তার অনুসারীরা সরে যান।
এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পোস্ট করেছেন ইমদাদুল। ‘ঈদের দিনে ঈদগাহ থেকে মনে কষ্ট নিয়ে বাড়ি ফিরলাম...’ শিরোনামে ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করেন৷
সেখানে স্থানীয়রা অনেকে যুবদল নেতার নেতিবাচক আচরণের জন্য নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন৷
পরে মুফতি মুহাম্মদ ইমদাদুল হক বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, নামাজ শুরুর আগে বিএনপি-সমর্থক স্থানীয় এক ব্যক্তি (যিনি ঈদগাহ কমিটিরও সদস্য) তাকে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করে দোয়া করতে অনুরোধ জানান৷ কিন্তু তিনি দোয়ায় অসুস্থ সকলের আরোগ্য কামনা করেন, বিশেষ কারও নাম উল্লেখ করেননি৷
তিনি বলেন, “কারণ এটি আম-মজলিস। এখানে সব দলের লোকই আছে। তাই বিতর্ক এড়াতে নির্দিষ্ট দলের কারো নাম উল্লেখ করা উচিত হবে না ভেবেই তা করিনি৷ তাছাড়া, উনি (খালেদা জিয়া) রাষ্ট্রীয় কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদেও নেই, সুতরাং তার নাম উল্লেখে কোনো বাধ্যবাধকতাও নেই৷
“কিন্তু নামাজ শেষে যুবদল নেতা ইকবাল আমার চাকরি খেয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন৷ আমি অনুরোধের পরও কেন তার নাম নেইনি সেজন্য তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন৷ খুবই আগ্রাসী আচরণ ছিল তার৷ মুসুল্লিরা তখন প্রতিবাদ জানালে থামেন তিনি৷”
যুবদল নেতার ‘দুর্ব্যবহারের’ জন্য ব্যবস্থা নিতে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন ইমদাদুল হক৷
এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুবদল নেতা সৈকত হাসান ইকবাল বলেন, “আমি তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করি নাই৷ আমি তাকে শুধু বললাম, অনুরোধের পরও আপনি কেন খালেদা জিয়ার নাম নিলেন না৷
“উনি বললেন, উনি বাধ্য না৷ তখন উনি কই চাকরি করেন জানতে চাই৷ জানলাম, উনি যেই মসজিদে চাকরি করেন সেই মসজিদের সভাপতি আমাদের ছোটভাই৷”
ইমামের চাকরি কেড়ে নেবার হুমকির অভিযোগও অস্বীকার করে তিনি বলেন, “আমি চাকরি খেয়ে দেবার কোনো কথা বলিনি।”