পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
Published : 02 Oct 2024, 01:06 PM
খাগড়াছড়ি সদরে গণপিটুনিতে শিক্ষকের মৃত্যুর ঘটনার জেরে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খাগড়াছড়ির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠনের কথা জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। একইসঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকার কথা জানান তিনি।
বুধবার সকালে প্রশাসনের ঊধ্বর্তন কর্মকর্তারাসহ খাগড়াছড়ি বাজার ও ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন শেষে এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, “আমরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখেছি। ক্ষয়ক্ষতি নিরুপনের জন্য জন্য কমিটি করা হয়েছে। নতুন করে যাতে সহিংসতা না বাড়ে সেজন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”
এর আগে মঙ্গলবার দুপুরে সপ্তম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ তুলে খাগড়াছড়ি সরকারি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের এক শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
নিহত শিক্ষকের নাম আবুল হাসনাত মুহাম্মদ সোহেল রানা; তিনি সিভিল কন্সট্রাকশন অ্যান্ড সেফটি বিভাগের ইন্সট্রাকটর ছিলেন।
এ ঘটনার পর জেলা শহরের পাহাড়ি ও বাঙালি সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। শহরের চেঙ্গী স্কয়ার, মহাজনপাড়ায় দুইপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। পরে পুলিশ, সেনাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় বিকাল ৩টা থেকে অনিদিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে জেলা প্রশাসন।
বিকালে পাহাড়ি ও বাঙালিরা খাগড়াছড়ি সদরে আবার মুখোমুখি অবস্থান নেন। দুই পক্ষই মিছিল বের করে। এ সময় মহাজনপাড়া, পানখাইয়া পাড়া সড়কে কয়েকটি দোকানেও ভাঙচুর করা হয়। কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুট করা হয়।
খাগড়াছড়িতে শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যা, থমথমে পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা
এদিকে, খাগড়াছড়ি টেকনিক্যাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে এবং সরকারি কাজে বাধা ও হামলার ঘটনায় দুইটি মামলা হলেও এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, “শিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তা মোকাবেলায় অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। আইন কোনোভাবে নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না।”
তিনি আরও বলেন, “এখন পর্যন্ত দুটো মামলা হয়েছে। শিক্ষক হত্যার ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি। নিহতের পরিবারের সদস্যরা এখনো খাগড়াছড়ি এসে পৌঁছায়নি। তারা আসলে মামলা হবে।”