আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে এ উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
Published : 14 May 2024, 12:28 AM
ইউপি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ না করেই উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে অংশ নিতে পারা, না পারার আইনি জটিলতায় আটকে গেছে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা পরিষদের ভোট।
সোমবার হাই কোর্টের নির্দেশনায় নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের নির্বাচন পরিচালনা-২ এর উপসচিব মো. আতিয়ার রহমান স্বাক্ষরিত এক চিঠির মাধ্যমে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
ফলে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত চান্দিনা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন হচ্ছে না।
সোমবার বিকালে নির্বাচন স্থগিত করে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা।
আগামী ৫ জুন চতুর্থ ধাপে এ উপজেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
এর আগে ৬ মে রাত ১০টায় নির্বাচনের প্রচারণা শেষ হওয়ার দুই ঘণ্টা আগে কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন স্থগিত করে নির্বাচন কমিশন। ৮ মে নাঙ্গলকোটের নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল।
প্রথম ধাপে নাঙ্গলকোট ও চতুর্থ ধাপে চান্দিনা উপজেলা নির্বাচন স্থগিত হল।
চান্দিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ সোমবার রাতে বলেন, “চান্দিনা উপজেলার মাইজখার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহ সেলিম প্রধান পদত্যাগ না করে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন।
“রোববার ছিল মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের দিন। বাছাই চলাকালীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগেই উচ্চ আদালতের আদেশ উপস্থাপন করেন তিনি। এতে বলা হয়, সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার জন্য। পরে নির্বাচন কমিশনে সেটি পাঠানো হলে কমিশন নির্বাচন স্থগিত করে।”
নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চান্দিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে সাতজন মনোনয়নপত্র জমা দেন। এর মধ্যে ছয়জনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। সেলিম প্রধানের মনোনয়নপত্র সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য রাখা হয়। সেলিম প্রধান মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের আগেই ৮ মে উচ্চ আদালত থেকে আদেশ নিয়ে আসেন তার মনোনয়নপত্র গ্রহণের জন্য।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা যায়, চতুর্থ ধাপে চান্দিনা উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান শাহ সেলিম প্রধানসহ পদে সাত প্রার্থী। কিন্তু রোববার মনোনয়নপত্র বাছাইকালে শাহ সেলিম প্রধান ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান পদে বহাল থাকা এবং হাই কোর্টের রিটের ‘প্রয়োজনীয় কাগজপত্র’ না থাকার কথা জানিয়ে তার মনোনয়নপত্র স্থগিত করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা ও কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ শামসুল তাবরীজ। এ নিয়ে দেখা দেয় বিপত্তি।
শাহ সেলিম প্রধান বলেন, “বাছাইয়ের দিন আমি উচ্চ আদালতের নির্দেশনার সকল কাগজপত্র জমা দিয়েছিলাম, কিন্তু রিটার্নিং অফিসারের ভুল ব্যাখ্যায় জটিলতা তৈরি করে আমার মনোনয়নপত্র প্রথমে বাতিল ও পরে স্থগিত রাখা হয়।”
তিনি আরও বলেন, “মনোনয়নপত্র বাতিল হতে পারে এমন আশঙ্কায় গত ৭ মে উচ্চ আদালতে একটি রিট পিটিশন দায়ের করি। এতে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদে বহাল থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য ‘উপজেলা পরিষদ আইন ১৯৯৮ এর ধারা-৮ এর উপধারা-২ (চ)’ কে চ্যালেঞ্জ করি। গত ৮ মে বিচারপতি মো. ইকবাল কবির ও বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের বেঞ্চ আমার মনোনয়নপত্র গ্রহণ এবং নিয়মানুযায়ী প্রতীক বরাদ্দের জন্য নির্দেশনা দেন।”
তিনি বলেন, “এছাড়া সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে চার সপ্তাহের মধ্যে রিট পিটিশনের জবাব দিতে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। আশা করি, উচ্চ আদালত ও ইসি থেকে ন্যায় বিচার পাব।”
কুমিল্লার জ্যেষ্ঠ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বলেন, “কমিশন পরবর্তী সময়ে যে নির্দেশনা দেবে, সেই আলোকে নির্বাচন হবে।”
আরও পড়ুন: