জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বিদ্যালয়গুলোর তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ করে পাঠদান উপযোগী করার আবেদন করা হয়েছে।
Published : 06 Sep 2024, 10:14 PM
এবার কুমিল্লার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টিতেই ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এতে এক হাজার ১১৭টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরের দেওয়া তথ্যমতে, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ, কারিগরি প্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা মিলিয়ে ৪৭৮টি এবং ৬৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সংস্কার ছাড়া পাঠদান শুরু করা যাবে না এমন মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কলেজ ও মাদ্রাসার সংখ্যা ৩২৮টি; প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে প্রায় ৩০০।
এরই মধ্যে দু’টি দপ্তর থেকেই বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে জানানো হয়েছে।
জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, “কুমিল্লা জেলায় মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ রয়েছে ৭২৪টি। এর মধ্যে ১৪ উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় ২৮৬টি প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বর্তমানে সংস্কার ছাড়া পাঠদান শুরু করা যাবে না এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ২০৫টি। বন্যায় এসব প্রতিষ্ঠানে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৩ কোটি ৮৪ লাখ ৪৩ হাজার টাকা। এখনো অনেক প্রতিষ্ঠান বানের পানিতে তলিয়ে রয়েছে।”
তিনি বলেন, “জেলায় কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও মাদ্রাসা রয়েছে ৪১৩টি। এর মধ্যে ১৯২টি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। কয়েকটি কারিগরি প্রতিষ্ঠান ছাড়া ক্ষতিগ্রস্ত বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানটি মাদ্রাসা।”
সংস্কার ছাড়া পাঠদান করা যাবে না, এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ১২৩টি। এগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ২ কোটি ২৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
রফিকুল ইসলাম বলেন, “জেলার বন্যাকবলিত ১৪টি উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট, লাকসাম, মনোহরগঞ্জ, ব্রাহ্মণপাড়া ও বুড়িচং উপজেলার প্রতিষ্ঠানগুলো। আমরা এরই মধ্যে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। পানি নেমে গেলে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। চেষ্টা করা হবে দ্রুত পাঠদান শুরু করার।”
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জেলার মোট প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ২ হাজার ১০৭টি। এর মধ্যে বন্যায় ৬৩৯টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
বানের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় ৬৮টি সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, লাকসাম উপজেলায় ৬৭টি, কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলায় ১৮টি, ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় ১২টি, বুড়িচংয়ে ৬৭টি, নাঙ্গলকোটে ৮০টি, মনোহরগঞ্জে ১১টি, লালমাই উপয়েজলায় ১১টি প্রাথমিক বিদ্যালয় পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এছাড়া মুরাদনগর, তিতাস ও বরুড়ার ১৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরুর আগেই সংস্কার কাজ করতে হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সফিউল আলম বলেন, “ক্ষতিগ্রস্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোর তালিকা এরই মধ্যে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের সংস্কার কাজ করে পাঠদান উপযোগী করার আবেদন করা হয়েছে। এখনো অনেক বিদ্যালয়ে পানি রয়েছে। পানি নেমে গেলে বাকি কার্যক্রম শুরু হবে।”