নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদীতে মালবাহী কার্গো জাহাজের চাপায় ডুবে যাওয়া লঞ্চটিকে শনাক্ত করেছে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ডুবুরিরা।
Published : 20 Mar 2022, 08:03 PM
রোববার সন্ধ্যায় ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর রহমান শীতলক্ষ্যা পাড়ে গণমাধ্যমকে বলেন, “লঞ্চটি পানির ২৫ মিটার (প্রায় ৫৫ হাত) গভীরে ডুবে আছে। দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে।
“বিআইডব্লিউটিএর একটি উদ্ধারকারী জাহাজ ও একটি বার্জের সহায়তায় লঞ্চটিকে উঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। রাতের মধ্যেই উদ্ধারকারী জাহাজ ঘটনাস্থলে আসবে”, বলেন পরিচালক।
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক শাহজাহান সিকদার রাতে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, উদ্ধারকাজ আপাতত স্থগিত রাখা হয়েছে। তবে একটি টিম দুর্ঘটনাস্থলে সংরক্ষণ করা হয়েছে।
“ডুবন্ত জাহাজ পানির ওপরে তোলা হলে তার ভেতরে তল্লাশি চালানো হবে। পানির নিচে উদ্ধার অভিযান আগামীকাল (সোমবার) পুনরায় শুরু হবে।”
ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর বলেন, ফায়ার সার্ভিসের দুটি দলের পাঁচজন ডুবুরি এখানে কাজ করছেন। তারা পানির নিচ থেকে দুর্ঘটনায় নিহত পাঁচজনের লাশ উদ্ধার করেছেন। আর একজন লঞ্চ যাত্রী সাঁতার কেটে ফিরে আসার পর মারা যান।
কতজন নিখোঁজ রয়েছে জানতে চাইলে লেফটেন্যান্ট কর্নেল জিল্লুর বলেন, “লঞ্চের যাত্রীদের ভাষ্য অনুযায়ী, সেখানে ৪০ থেকে ৫০ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে ২০ থেকে ২৫ জন তীরে উঠতে পেরেছেন। ছয় জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
“ধারণা করা হচ্ছে, এখনও ১৫ থেকে ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। তবে এখন পর্যন্ত কোনো স্বজন নিখোঁজ থাকার বিষয়ে অভিযোগ জানাননি।”
ফায়ার সার্ভিসের একজন ডুবুরি বলেন, “এ রকম দূষিত পানিতে উদ্ধার অভিযান চালানো বেশ কষ্টসাধ্য ।“
এ ঘটনায় নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আ ন ম বজলুর রশীদকে আহ্বায়ক করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অন্য দুই সদস্য হলেন- ক্যাপ্টেন আবু সাইদ মোহাম্মদ দেলোয়ার রহমান ও বিআইডব্লিউটিএ এর পরিচালক (নৌনিরাপত্তা ও ট্রাফিক)।
আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে কমিটিকে নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
এ ছাড়া লঞ্চডুবির ঘটনায় জরুরি যোগাযোগের জন্য বিআইডব্লিউটিএ একটি ‘হটলাইন’ খুলেছে; যারা নম্বর-১৬১১৩।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য সিটি গ্রুপের পরিচালক পরিচালক বিশ্বজিত সাহাকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।
রাকিব আল রাজু নামে একজন কাছের আরেকটি লঞ্চ থেকে ওই ঘটনার ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে ফেইসবুকে দিলে তা ভাইরাল হয়ে যায়। সেখানে দেখা যায়, রূপসী-৯ জাহাজটি একপাশ থেকে চলন্ত লঞ্চটির ওপর চেপে বসে। লঞ্চের আতঙ্কিত যাত্রীরা নদীতে লাফিয়ে পড়তে শুরু করেন। এ অবস্থা চলে প্রায় ২৫ সেকেন্ড। এক পর্যায়ে লঞ্চটি ডুবে যায়।
ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি নৌ পুলিশ ও বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধারকাজে অংশ নিচ্ছে।
আরও পড়ুন