আধিপত্য বিস্তারের জেরে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলায় সংঘর্ষের সময় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে; এতে আহত হয়েছেন আরও ছয়জন, যাদের তিনজন গুলিবিদ্ধ।
Published : 18 Feb 2022, 12:47 PM
শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলার চণ্ডীপুর পুঠিমারী বিলের চরে নজরুল ইসলাম মালিথা এবং ইউপি সদস্য এনামূল ইসলাম মণ্ডলের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে জানিয়েছেন ভেড়ামারা থানার ওসি মজিবর রহমান।
নিহত সিদ্দিকুর রহমান মণ্ডল (৫০) চাঁদগ্রাম ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি চরপাড়া গ্রামের ওমর মণ্ডলের ছেলে এবং ইউপি সদস্য এনামূল ইসলাম মণ্ডলের আপন ছোট ভাই।
ভেড়ামারা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. নুরুল আমীন দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, সকালে মোট সাতজনকে হাসপাতালে আনা হয়। তাদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ। এরা হলেন- ইউনুস আলী (৪৫), বাদশা মণ্ডল (৩০), রানা মণ্ডল (৩০) ও সিদ্দিকুর। হাসপাতালে আনার পরই সিদ্দিকুরকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
আহতদের বরাত দিয়ে ওসি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আধিপত্য নিয়ে দুই পক্ষের বেশ কিছুদিন ধরেই দ্বন্দ্ব ছিল। সকালে পুঠিমারী বিলের চরে দুপক্ষের সমর্থকরা সংঘর্ষে জড়ায়। সংবাদ পেয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন স্বাভাবিক রয়েছে। এখনও কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান ওসি।
স্থানীয়রা জানান, নজরুল ইসলাম মালিথা জাসদের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত; অপরদিকে এনামূল ইসলাম মণ্ডল আওয়ামী লীগের অনুসারী। তিন-চার দিন আগে ইউপি সদস্য এনামূল মণ্ডলের সমর্থকরা গ্রামের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া জিকে খালে মাছ ধরতে যায়। তখন নজরুল মালিথার লোকজন তাদের ধাওয়া দিয়ে তাড়িয়ে দেয়।
এ নিয়ে উত্তেজনার মধ্যে শুক্রবার সকালে এনামূল মণ্ডলের সমর্থকরা ফের সেখানে মাছ ধরতে গেলে দুপক্ষ তখন সংঘর্ষে ও গোলাগুলিতে জড়ায়।
চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বুলবুল কবীরের অভিযোগ, “জাসদ অনুসারী নজরুল মালিথার লোকজন অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে খাল এলাকায় ওত পেতে ছিল এবং এনামূলের লোকজনের ওপর হামলা করে।
“তখন এনামূলের লোকজন চিৎকার করে। তাতে বাড়ি থেকে আরও বেশকিছু লোকজন সেখানে যায় আহতদের উদ্ধার করতে। কিন্তু এ সময় নজরুলের লোকজন গুলিবর্ষণ শুরু করে।“
অভিযোগ অস্বীকার করে চাঁদগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হাফিজ তপন বলেন, “এ এলাকায় মণ্ডল এবং মালিথা গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রায় ৬০ বছরের। মাঝে মাঝেই তাদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও হামলার ঘটনা ঘটে। একাধিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনাও ঘটেছে।”
নিহতের ভাই এনামূল ইসলাম মণ্ডলের অভিযোগ, “নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নজরুলের সঙ্গে বিরোধের সৃষ্টি। তারই জের ধরে পরিকল্পিতভাবেই আমার ভাই ও লোকজনের ওপর হামলা হয়েছে। প্রকাশ্যে সবার সামনের নজরুল মালিথার ছেলে রনি আমার লোকজনের ওপর গুলি চালিয়েছে।”
এ ব্যাপারে কথা বলার জন্য চেষ্টা করেও নজরুল ইসলাম মালিথার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।