জামালপুরের তারাকান্দিতে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমায়েত হওয়ায় এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তারের পর একটি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে হামলা হয়েছে; এতে ছয় পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।
Published : 07 Jan 2022, 07:44 PM
শুক্রবার সকালে যমুনা সার কারখানা এলাকা থেকে মোর্শেদ নামের ওই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটে।
তারাকান্দি পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ আব্দুল লতিফ বলেন, ”মোর্শেদ তিন মামলার আসামি। তার নেতৃত্বে ৬০-৭০ জন লোক সার কারখানা এলাকায় দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে জমায়েত হয়। সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে তারা পুলিশের ওপর চড়াও হয়।”
পরে মোর্শেদকে গ্রেপ্তার করা হলে তারা তদন্তকেন্দ্র ঘেরাও করে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে বলে জানান আব্দুল লতিফ।
এ সময় তিনিসহ ছয় পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত অন্য সদস্যরা হলেন- এসআই শফিউল আলম সোহাগ, এসআই সুলতান মাহমুদ, এএসআই মেহেদী হাসান, কনস্টেবল খোকনুজ্জামান ও সোলায়মান। আহতদের অবস্থা গুরুতর নয়।
এ ঘটনায় এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলেও তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ জানান।
এ ব্যাপারে জামালপুরের পুলিশ সুপার নাছির উদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “সার কারখানার ডে-লেবারের কাজের নিয়ন্ত্রণ নিতে স্থানীয় দুটি পক্ষের মধ্যে গত কয়েকদিন ধরে উত্তেজনা চলছিল। তারই অংশ হিসেবে মোর্শেদের নেতৃত্বাধীন লোকজন এই জমায়েতে অংশ নেন। মোর্শেদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা রয়েছে। তাকে গ্রেপ্তারের পর তার লোকজন পুলিশের ওপর চড়াও হওয়ার চেষ্টা করে।”
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ এক নেতা জানান, সরিষাবাড়ী উপজেলার তারাকান্দি এলাকা সাবেক তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মুরাদ হাসানের নির্বাচনী এলাকা। এখানে আওয়ামী লীগের মধ্যে বিভক্তি রয়েছে। সরিষাবাড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম রফিক সংসদ সদস্যের বিরোধী লোক হিসেবে পরিচিত।
গতকাল মুরাদ হাসানের বিরুদ্ধে রাজধানীর ধানমন্ডি থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তার স্ত্রী।
এ খবর পাওয়ার পর রফিকুল ইসলাম রফিকের সমর্থকরা আনন্দে রাতভর তারাকান্দি এলাকায় আতশবাজি পোড়ায় বলে জানান এই নেতা।
এরপরই যমুনা সার কারখানা এলাকায় অস্ত্রসহ জমায়েত, মোর্শেদের আটক ও তদন্তকেন্দ্রে হামলার ঘটনা ঘটে।
এদিকে স্থানীয়রা জানান, পুলিশ তদন্তকেন্দ্রে হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার দুপুরে তারাকান্দিতে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের কর্মী-সমর্থকরা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। মিছিলকারীরা রফিকুল ইসলাম রফিক ও মোর্শেদের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয় এবং রফিককে তার পদ থেকে বহিষ্কার দাবি করে।
তবে রফিকুল ইসলাম রফিক তদন্ত কেন্দ্রে হামলার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছেন।
তিনি মোবাইলে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “এসব ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। আমাকে জড়িয়ে বিরোধী পক্ষ অপপ্রচার করছে।”