উপজেলার কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হিসেবে বৃহস্পতিবার শপথ নিয়েছেন শেখ উপরু মিয়া মহালদার নামের এই ব্যক্তি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকম জানান, নির্বাচন কমিশনের গেজেট পেয়ে তিনি বিধি মোতাবেক উপরু মিয়ার শপথবাক্য পাঠ করিয়েছেন।
২০১৬ সালের ২৮ মে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সদস্য পদে নির্বাচন করেন শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্তমান ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক শেখ উপরু মিয়া মহালদার। নির্বাচনের দিন ভোট গ্রহণ শেষে প্রথমে বিজয়ী হিসেবে তার নাম ঘোষণা করা হয়। কিন্তু কিছু সময় পর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মুকিতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
এরপর উপরু মিয়া আদালতে যান এবং গত পাঁচ বছর আদালতে দীর্ঘ লড়াই চলে। সবশেষে আদালতে উপরু মিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করে।
শেখ উপরু মিয়া মহালদার বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তার ওয়ার্ডের ভোট সেন্টারে তাকে বিজয়ী ঘোষণা করার পরপরই তার বদলে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আব্দুল মুকিতকে বিজয়ী ঘোষণা করে। সঙ্গে সঙ্গে উপরু মিয়া কেন্দ্রের প্রিসাইডিং অফিসারের কাছে ভোট পুনঃগণনার আবেদন করলে তা নাকচ হয়; উপজেলায় পুনঃগণনা হবে জানিয়ে ব্যালেট পেপার উপজেলায় পাঠিয়ে দেন।
পরবর্তীতে উপজেলায়ও আব্দুল মুকিতকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়।
উপরু মিয়া বলেন, আদালতের দীর্ঘ বিচারকার্যের পরিপ্রেক্ষিতে উভয়ের আইনজীবীর উপস্থিতিতে ভোট পুনঃগণনা করে উপরু মিয়ার মোরগ মার্কা ৬ ভোট বেশি পাওয়ার প্রমাণ মেলে।
এরপর আব্দুল মুকিত প্রথমে জজ আদালতে আপিল করে হারেন; পরে হাই কোর্টে আপিল করেও হারেন। সবশেষে আপিল বিভাগের চেম্বার জজও আব্দুল মুকিতের আবেদন খারিজ করে দেন।
উপরু মিয়া বলেন, এরপর তিনি আদালতের রায়ের কপি নির্বাচন কমিশনে জমা দেন। নির্বাচন কমিশন আব্দুল মুকিতের বিজয়কে অবৈধ ঘোষণা এবং উপরু মিয়াকে বিজয়ী ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উপরু মিয়ার শপথ পাঠ করান।
উপরু মিয়া মহালদার আদালত ও নির্বাচন কমিশনের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
উপরু মিয়াই সদস্য হিসেবে শপথ নেওয়ার খবরে শুভানুধ্যায়ীরা তার বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছো জানান।
এ ব্যাপারে কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান মুজুল বিডিনিউজ টেয়েন্টিফোর ডটকম বলেন, উপরু মিয়ার দায়িত্বকাল শেষ হয়ে গেছে। মাস দুয়েকের মধ্যে আগামী নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ার কথা। তবে যে কয়দিনই আছে সেই সময়ের জন্যই তারা তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেবেন।
কালাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১ নম্বর ওয়ার্ডের ভোটার রাসেল আহমদ, সাজান আহমদ রানা জানান, তাদের ওয়ার্ডের জনপ্রতিনিধিদের বেলায় একটি কালি লাগানো হয়েছিল। আদালতের ন্যায় বিচারে সত্য প্রতিষ্ঠা পাওয়ায় তারা খুশি।
এ ব্যাপারে আব্দুল মুকিতের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।