খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থনের জন্য তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করার প্রতিবাদে যখন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মসূচি চলছে, সেই সময় উপাচার্যের দায়িত্ব শেষ করে ক্যাম্পাস থেকে বিদায় নিলেন মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান।
Published : 29 Jan 2021, 12:57 AM
ছাত্রদের শরবত খাওয়ালেন, শিক্ষকদের নিয়ে কিছুই বললেন না খুলনার উপাচার্য
খুলনার উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের অধ্যাপক ফায়েককে ২০১০ সালে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য নিয়োগ দেয় সরকার। ২০১২ সালে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। এরপর দুই মেয়াদে ১০ বছর ২ মাস উপাচার্যের দায়িত্ব পালন শেষে বৃহস্পতিবার বিকালে ক্যাম্পাস ছাড়েন তিনি।
তার মেয়াদের শেষ দিকে এসে গত বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন-ফি কমানো এবং আবাসন সংকট নিরসনসহ কয়েকটি দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের জের ধরে দুই ছাত্রকে বরখাস্ত এবং তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়।
বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে ওই দুই ছাত্র নয় দিন অনশন চালিয়ে আসার পর মঙ্গলবার তাদের শরবত খাইয়ে অনশন ভাঙান উপাচার্য ফায়েক উজ্জামান। বৃহস্পতিবার তাদের বহিষ্কারাদেশ মওকুফের কথা জানিয়ে চিঠি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
তবে যে তিন শিক্ষককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে তাদের বিষয়ে কোনো কথা বলেননি তিনি। মঙ্গলবার ছাত্রদের অনশন ভাঙানোর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, যে ইস্যুতে কথা বলছেন তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলে তিনি খুশি হবেন।
এসব কর্মসূচিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপকরা শিক্ষকদের চাকরিচ্যুত করায় উপাচার্য ফায়েক উজ্জামানের কঠোর সমালোচনা করেছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি ‘অপরাধী মানসিকতার’ পরিচয় দিয়েছেন বলে মন্তব্য করেছেন কেউ কেউ।
অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়েও এদিন তিন শিক্ষকের চাকরিচ্যুতির প্রতিবাদে কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ওই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার দাবিতে বেলা ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাখানেক পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে সমাবেশ করেন শিক্ষকেরা।
তিনি বলেন, তিন শিক্ষককে শাস্তি দেওয়ার সিন্ডিকেটের ওই সিদ্ধান্ত অবৈধ বলে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিয়েছেন দুইজন সিন্ডিকেট সদস্য। তাই অবিলম্বে ওই শিক্ষকদের সাজা প্রত্যাহার করা হোক।
অপরদিকে মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত বছরের শুরুতে ন্যায্য দাবি নিয়েই আন্দোলন শুরু করেছিলেন তারা। তাদের ওই আন্দোলনে সমর্থন দেওয়ার অভিযোগে তিন শিক্ষকের ওপর খড়্গহস্ত নেমে এসেছে, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তাদের ওই শাস্তি ইঙ্গিত দেয় পরবর্তী সময়ে কেউ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়ালে তাদেরও বরখাস্ত করা হবে।
দ্রুত ওই তিন শিক্ষকের সাজা প্রত্যাহারের দাবি জানান তারা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ‘উসকানি’ দেওয়ার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. আবুল ফজলকে বরখাস্ত এবং একই বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম ও ইতিহাসের প্রভাষক হৈমন্তী শুক্লা কাবেরীকে অপসারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক আবুল ফজল বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, এই ঘটনার তদন্ত কমিটি গঠন থেকে শুরু করে কোনো কার্যক্রমেই তাদের কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হয়নি। তদন্ত প্রতিবেদন চেয়ে লিখিত আবেদন করেছিলেন, সেটাও তাদের দেওয়া হয়নি। তারা তদন্ত কমিটির বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন, সেটাও আমলে নেওয়া হয়নি।
“সব মিলিয়ে প্রশাসন যে এমন একটি সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, তা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিল।”
বাংলা বিভাগের প্রভাষক শাকিলা আলম বলেন, তারা কর্তৃপক্ষের এই ‘অন্যায় সিদ্ধান্ত’ মানবেন না। ‘শিগগিরই’ এর বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাবেন।
দুর্নীতির অভিযোগ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবন, আবাসিক হল, গ্রন্থাগার, অতিথি ভবনসহ কয়েকটি নতুন ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ এবং শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন দাবি আদায়ে ২০১৯ সালের শেষ দিকে উপাচার্য ফায়েক উজ্জামানের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু হয়। সে বছর ডিসেম্বর মাসে ৪৫ জন শিক্ষক রেজিস্ট্রারের কাছে দুর্নীতির অভিযোগ করেন।
কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবন, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল, অপরাজিতা হল, প্রশাসনিক ভবন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, গ্রন্থাগার ভবন, অতিথি ভবনসহ কয়েকটি নতুন ভবন নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগ দেন এই শিক্ষকরা।
কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবন নির্মাণে দুর্নীতির প্রমাণ হিসেবে শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরই গঠিত তদন্ত কমিটির ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বরের প্রতিবেদন তুলে ধরেন। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, ভবনের ছাদ সাড়ে পাঁচ ইঞ্চি পুরু হওয়ার কথা থাকলেও করা হয়েছে তিন থেকে সাড়ে চার ইঞ্চি। ফলে এক বছরেই বিভিন্ন জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে।
ছাদ প্রয়োজনীয় পুরুত্বের না হওয়ায় ভবনটিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা ঝুঁকিপূর্ণ বলে মত দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এবং অভ্যন্তরীণ প্রকৌশলীদের ‘দুর্নীতিকে’ দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে তদন্ত কমিটি। কিন্তু এরপর তিন বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ব্যবস্থা নেয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে।
বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল নির্মাণেও দুর্নীতির অভিযোগ করে শিক্ষকরা। তারা দাবি করেন, দরপত্রে অনিয়ম করে বিতর্কিত ঠিকাদার জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানকে হল নির্মাণ কাজ পাইয়ে দেওয়া হয়।
দরপত্রে অনিয়ম নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠলে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর দরপত্র বাতিল করে আবার দরপত্র আহ্বান করা হয়। কিন্তু দ্বিতীয় দফায়ও জি কে শামীমের প্রতিষ্ঠানকেই কাজ দেওয়া হয়।
এই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের দিক থেকে অভিযোগ আসার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের তদন্ত কমিটি ভবন নির্মাণে ২৩টি ত্রুটির কথা উল্লেখ করে সংস্কার প্রস্তাব করে। কাজ বুঝে পাওয়া সাপেক্ষে জামানতের অর্থ ছাড় করতে বলে তদন্ত কমিটি। কিন্তু ভবনে ত্রুটি থেকে যাওয়ার পরও জামানতের বেশিরভাগ অর্থ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে ফেরত দেওয়া হয়। একইভাবে অপরাজিতা হলে স্পেসিফিকেশন অনুযায়ী মানসম্মত বৈদ্যুতিক কেবল ব্যবহার না করায় দুর্ঘটনার অভিযোগ তোলেন শিক্ষকরা।
ঠিকাদার বরাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলীর চিঠিতে এই ‘দুর্নীতির প্রমাণ থাকার কথা’ উল্লেখ করেন তারা। প্রধান প্রকৌশলী চিঠিতে লিখেছিলেন, অপরাজিতা ছাত্রী হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। এই বিষয়ে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি এবং জামানতের অর্থ ফেরত দেওয়া হয়েছে।
ওই শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবনে বৈদ্যুতিক কাজে বিপুল পরিমাণ দুর্নীতির অভিযোগ করেন। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগের প্রধান প্রকৌশলী ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর দুর্নীতি দমন কমিশনেও অভিযোগ জানান।
খুলনায় দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে তিনি অভিযোগ করেন, জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনের বৈদ্যুতিক কাজেই ৬০ লাখ টাকা দুর্নীতি হয়েছে।
“বৈদ্যুতিক কেবল টানার ঠিক আগে আমাকে একাডেমিক ভবন-৩ সহ অন্যান্য সাইট থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় এবং ঠিকাদারদের দুর্নীতির সুযোগ করে দেওয়া হয়। বৈদ্যুতিক সামগ্রী ব্যবহার না করেই একাডেমিক ভবন-৩ এর জন্য প্রায় ৩৮ লাখ টাকা অতিরিক্ত বিল নেওয়া হয়েছে।”
অভিযোগে তিনি বলেছেন, শার্লি ইসলাম লাইব্রেরিতে নতুন কেবলের বদলে ব্যবহার করা হয়েছে জাহাজের পুরানো কেবল।
অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার অধ্যাপক গোলাম কুদ্দুস বলেন, “যে অভিযোগের কথা বলা হয়েছে, তা আগেই আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়। উপাচার্যের নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি করে তার তদন্ত হয়। তৃতীয় একাডেমিক ভবনের কাজে ত্রুটি ছিল। সেসব প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে অ্যাকশন নেওয়া হয়েছে।”
শিক্ষকদের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “অভিযোগ সঠিক ছিল কি না তা বলতে পারব না। আমরা তো আগেই আইডেন্টিফাই করেছি। তারা অভিযোগ দিল বলে আমরা আইডেন্টিফাই করেছি, সেটা বলব না। প্রশাসনের কাছে ত্রুটি আগেই ধরা পড়েছিল। পরে তারা অভিযোগ দিয়েছিল, একটা কিছু দেওয়া দরকার ছিল, সেই হিসাবে।”
দুর্নীতির অভিযোগ বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাদের বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
২০১৯ এর ডিসেম্বরে রেজিস্ট্রার বরাবর শিক্ষকদের ওই অভিযোগ থেকে ‘দুর্নীতির বিষয়ে’ জানতে পারেন শিক্ষার্থীরা। ওই মাসেই কয়েকজন শিক্ষার্থী উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন।
রেজিস্ট্রারের কাছে অভিযোগকারী শিক্ষকদের একজন ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. নুরুজ্জামান বলেন, “কবি জীবনানন্দ দাশ একাডেমিক ভবনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ক্লাস করে। ওই ভবন নির্মাণে দুর্নীতির বিষয়ে টেলিভিশন টক শোতে উপাচার্যের সঙ্গে সরাসরি কথা হয়েছে। সেখানে উপাচার্যকে আহ্বান জানিয়েছি দুর্নীতির বিষয়গুলো খতিয়ে দেখতে।”
শিক্ষক অপসারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তাদের জন্য স্পেশাল সিন্ডিকেট ডাকা, তড়িঘড়ি করাটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়। মনে হয়েছে তিনজনকে শাস্তি দেওয়াটাই ছিল আসল উদ্দেশ্য।”
দুর্নীতির অভিযোগকারীদের আরেকজন ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রুমানা রহমান বলেন, “অবকাঠামো নির্মাণে দুর্নীতি হয়েছে। আমরা জানার পর প্রশাসনকে তা জানানো আমাদের দায়িত্ব মনে করেছি। তবে এর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কোনও যোগসূত্র নেই। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে আন্দোলন করেছে
“যে তিন শিক্ষককে অপসারণ করা হয়েছে, তারাও নির্মাণকাজে দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থানের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের কোনো সংযোগ আছে, সেটা ঠিক না।”
তিনি বলেন, “অপসারণ কোনো সমাধান নয়। শিক্ষকদের মধ্যে কেউ যদি অন্যায় করে, তাকে শাস্তি দেওয়ার অনেক উপায় আছে। বিশেষ করে দুই নবীন নারী শিক্ষককে সুযোগ দেওয়া উচিত ছিল বলে আমি মনে করি।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, “ছাত্র আন্দোলনের সময়ে তারা যা করেছিলেন তা উল্লেখ করেই ব্যাখ্যা চাওয়া হয়েছিল। তাদের ব্যাখ্যা সন্তোষজনক না হওয়ায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তারা তদন্ত কমিটিকে বক্তব্য দিতে হাজির হননি। সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন মেনেই যথাযথ প্রক্রিয়ায় ওই শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
তবে বৃহস্পতিবার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে এর প্রতিবাদ কর্মসূচি নিয়ে প্রতিক্রিয়া রাতে তার মোবাইলে বেশ কয়েকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।
গোপালগঞ্জের মুকসেদপুরের ফায়েক উজ্জামানের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রক্রিয়ায় স্বজনপ্রীতিরও অভিযোগ রয়েছে।
তবে সব অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেছেন, “কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে আমার জেলা বা তার আশপাশের কেউ নিয়োগ পেলে সবাই মনে করে আমার আত্মীয়। কিন্তু কয়েকটা জেলার সব লোক আমার আত্মীয় হওয়া কি সম্ভব? যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা তাদের যোগ্যতা দিয়েই এখানে এসেছেন। আর সর্বশেষ এই নিয়োগের সুপারিশ এসেছে ছাত্র বিষয়ক পরিচালকের দপ্তর থেকে।”
বিশ্ববিদ্যালয়ে মত প্রকাশে বাধা দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় মুক্তবুদ্ধি চর্চার জায়গা। আমি কখনও এখানে মত প্রকাশে বাধা প্রদান করেনি। আমি যখন এসেছিলাম তখন শিক্ষার্থীদের মাত্র ১৪-১৫টি সংগঠন ছিল, আর এখন প্রায় ৩০টা সংগঠন। ভিন্ন ভিন্ন মত থাকবে, তবে আমি চেষ্টা করেছি সবার মতকে সম্মিলিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজে লাগাতে।”
উন্নয়ন কাজে ধীর গতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামোগত উন্নয়নের জন্য ১৩৫ কোটি টাকার বাজেটকে আমরা ৩৫৫ কোটি টাকা করেছি। পাশাপাশি আগামী ১০০ বছর পরের কথা চিন্তা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন যে ভবন তৈরি হবে তার সম্প্রসারণ পরিকল্পনা করেই কাজ করেছি। এজন্য সময় কিছুটা বেশি লাগছে।
“তাছাড়া টেন্ডার ও ডিজাইন আহ্বান করে সেগুলো সঠিকভাবে যাচাই-বাছাই করতেও সময় প্রয়োজন হয়।”