যশোরের শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ১৬ বছর বয়সী এক কিশোর হাসপাতালে চিকিৎসা দিতে নেওয়ার পর পালিয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
Published : 28 Sep 2020, 09:19 PM
সোমবার দুপুর ১২টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতাল প্রাঙ্গণ থেকে ওই কিশোর পালিয়ে যায় বলে কোতয়ালি থানায় একটি জিডি হয়েছে।
পলাতক কিশোরের বাড়ি ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার দেবকী নন্দপুর গ্রামে। গত ২১ অগাস্ট বোয়ালমারী থানায় দায়ের করা একটি চুরি মামলার আসামি সে।
যশোর কোতয়ালি থানার ডিউটি অফিসার এসআই কামাল হোসেন জানান, যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) জাকির হোসেন ওই ঘটনায় থানায় একটি সাধারণ ডায়রি করেছেন।
“জিডিতে তিনি উল্লেখ করেন—শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের বন্দিকে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়। কিন্তু সেখান থেকে সে হারিয়ে গেছে।’
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে যোগাযোগ করা হলে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন এড়িয়ে যান এবং জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা ঘটনা সম্পর্কে পুরোপুরি অবহিত নন বলে জানান।
যশোর শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রে কর্মরত আনসারের প্লাটুন কমান্ডার (পিসি) অসিত বিশ্বাস বলেন, “গত রোববার রাতে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের ভেতর অন্য বন্দিদের সাথে এই কিশোরের মারামারি হয়। এতে সে অসুস্থ হয়ে পড়ে।
“সোমবার সকালে তার অসুস্থতা আরো বেড়ে গেলে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের একটি মাইক্রোবাসে করে বেলা ১১টার দিকে যশোর ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়।”
সেখানে জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক সোলায়মান কবির তাকে চিকিৎসা দেন। এ সময় কিশোরীটির সঙ্গে শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের মেডিকেল সহকারী নজির আহমেদ ছিলেন বলেন তিনি।
চিকিৎসা শেষে কিশোরটিকে হাসপাতাল অভ্যন্তরে রাখা মাইক্রোবাসে ওঠানো হয়। এ সময় মাইক্রোবাসে অসিত বিশ্বাস নিজেও ছিলেন।
কৌশলে দরজা খুলে তাকে ধাক্কা মেরে ওই কিশোর পালিয়ে যায়। অ্যাম্বুলেন্সের চালক পারভেজসহ তিনি কিশোরের পিছু নিয়েও ধরতে পারেননি বলছেন অসিত।
এ ঘটনা শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক (তত্ত্বাবধায়ক) জাকির হোসেনকে অবহিত করেন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল হাসপাতালে আসে। তবে পুলিশও কিশোরকে খুঁজে পায়নি বলে জানান তিনি।
এ ঘটনার হাসপাতালের কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানান, ওই কিশোরকে গাড়িতে বসিয়ে রেখে আনসার সদস্য অসিত বিশ্বাস চান পান করতে যান। পরে চা পান শেষে গাড়ির কিছু দূরে দাঁড়িয়ে ধূমপান করছিলেন। এই সুযোগে গাড়ির দরজা খুলে দৌড়ে পালিয়ে যায় কিশোরটি।
শিশু উন্নয়ন কেন্দ্রের সহকারী পরিচালক জাকির হোসেন দুপুরে বলেন, “আমি এখন একটি অনলাইন মিটিংয়ে আছি। বিকাল ৫টার পর এ বিষয়ে কথা বলব।”
কিন্তু বিকাল ৫টার পর দফায় দফায় তাকে মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ধরেননি।
জেলা সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক অসিত কুমার সাহা সাংবাদিকদের জানান, বিষয়টি সম্পর্কে ভালোভাবে খোঁজ খবর না পাওয়া পর্যন্ত কিছু বলা যাবে না।