এবার বান্দরবানে ‘পানিবাহিত রোগে’ দুজনের মৃত্যু

বান্দরবানে এবার পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে; এতে শিশুসহ দুজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

উসিথোয়াই মারমা বান্দরবান প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 19 April 2020, 06:54 PM
Updated : 19 April 2020, 09:46 PM

সোমবার পানিবাহিত রোগের প্রকোপ দেখা দেওয়া এলাকায় স্বাস্থ্যকর্মীরা যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা।

এ রোগে মৃতরা হলেন লংথাংপাড়া তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র ডালুং খুমি (১০) এবং সাংকিং পাড়ার বাসিন্দা নাংলং খুমি (৭০)। তারা উপজেলার বেতছড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।

আমাশয় আক্রান্ত হয়ে সম্প্রতি এ দুজন পেট ব্যথা, বমি ও ডায়রিয়ায় শরীর দুর্বল হয়ে মারা যায় জানিয়ে লংথাং পাড়ার কারবারী (গ্রামপ্রধান) থেউলাং খুমি জানান, এই এলাকার খুমি সম্প্রদায়ের তিনটি পাড়ায় হঠাৎ আমাশয় প্রকোপ দেখা দেয়।

অন্য আক্রান্তরা হলেন অংথাং পাড়ার বাসিন্দা কাইং হয় খুমি (৭২), থাংঅং খুমি (৭০), সুইচেং খুমি (৬৯), থংহ্লা খুমি (২২) এবং থৈতাং খুমি (২৫)। এছাড়া সাংকিং পাড়া ৬ জন ও অংতং পাড়া তিন জন আক্রান্ত রয়েছে।

“এতে বান্দরবানে রোয়াংছড়ি উপজেলার কয়েকটি পাড়ার বাসিন্দা আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে।”

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ইউএইচএফপিও) ডা. মংহ্লাপ্রু মারমা জানান, এরা মূলত দূষিত পানি পান করে টাইফয়েড, ডায়রিয়া ও আমাশয়সহ পানিবাহিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

“বছরে এ সময় এসব রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়।”

লংথাং খুমি পাড়া

পাড়া থেকে নদীপথের এলাকা বেতছড়া বাজার কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ওষুধ নেওয়ার কথা বলা হয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানা, সোমবার ওই ক্লিনিক থেকে প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়া এলাকায় দুজন স্বাস্থ্যকর্মী পাঠানো হচ্ছে।

আক্রান্তদের একজন থৈতাং খুমি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “তিন দিন ধরে তার ডায়রিয়া ও পেট ব্যথা হচ্ছে। প্রথম দিনে প্রায় বিশ বারের মত ডায়রিয়া হয়েছে। সাথে বমিও ছিল।

তবে ওষুধ খাওয়ার পরে একটু সুস্থ বোধ করছে বলে জানান তিনি।

সাংকি পাড়ার বাসিন্দা লংনে খুমি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানিয়েছেন, তার পাড়ায়ও এখন পাঁচজন আক্রান্ত রয়েছে। আক্রান্তদের দূরের একটি বাজার থেকে ওষুধ কিনে দেওয়া হয়েছে।

সামাজিক সংগঠন খুমি সোশাল কাউন্সিলের নেতা সিংয়ং খুমি জানান, ওই এলাকায় কয়েক কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে পাঁচটি পাড়ায় ৯২টি খুমি পরিবার রয়েছে। পাড়াগুলো খুব উঁচু এবং কিছুটা দুর্গম।

এসব পাড়ার অবস্থান রোয়াংছড়ি উপজেলা হলেও চিম্বুক পাহাড়ের পাদদেশে। এর বাইরে এ উপজেলার আর কোথাও খুমি সম্প্রদায় নেই বলেও জানান তিনি।

এর আগে পাহাড়ে হামে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বেশ কয়েকজন শিশুকের গ্রাম থেকে উদ্ধার করে হাসপাতালে এনে চিকিৎসাও দেওয়া হয়।