র্যাব-১৫ রামু ব্যাটালিয়ানের উপ-অধিনায়ক মেজর মো. রবিউল ইসলাম বলছেন, সোমবার ভোরে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের মোছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে।
নিহতদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। এরা হলেন কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ ব্লকের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ফারুক ডাকাত (৩৫), একই ক্যাম্পের ই-ব্লকের নূর হোসেন ওরফে নুরাইয়া ডাকাত (৩৫), আলী হোসেন ওরফে আলী ডাকাত এবং শালবাগান ক্যাম্পের মোহাম্মদ ইমরান ওরফে ইমরান ডাকাত (২২)।
বাকি তিনজনের নাম জানাতে পারেননি র্যাব কর্মকর্তারা। তবে নিহত সবাই রোহিঙ্গা নাগরিক এবং টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানান তারা।
রাতে র্যাব-১৫ রামু ব্যাটালিয়ানের দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত বিবরণ দেন উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ।
কক্সবাজারের টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প কেন্দ্রিক একাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল সক্রিয় রয়েছে; যারা ক্যাম্প সংলগ্ন বিভিন্ন গহীন পাহাড়ে আস্তানা গড়ে তুলে নানা ধরণের অপরাধ সংঘটিত করছে বলে জানিয়েছে র্যাব।
সোমবার সন্ধ্যায় র্যাব-১৫ রামু ব্যাটালিয়ান দপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন উইং কমান্ডার আজিম আহমেদ।
বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহতরা হল, টেকনাফের ২৭ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ডি-৫ বøকের বাসিন্দা মোহাম্মদ ফারুক ওরফে ফারুক ডাকাত (৩৫), একই ক্যাম্পের ই-বøকের নুর হোসেন ওরফে নুরাইয়া ডাকাত (৩৫), আলী হোসেন ওরফে আলী ডাকাত এবং শালবাগান ক্যাম্পের মোহাম্মদ ইমরান ওরফে ইমরান ডাকাত (২২)।
উইং কমান্ডার আজিম বলেন, টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন পাহাড়ি এলাকায় আস্তানা গড়ে তুলে মাদকপাচার, মানবপাচার, চাঁদাবাজি, ডাকাতি ও অপহরণসহ নানা ধরনের অপরাধ সংঘটনকারী একাধিক সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল সক্রিয় রয়েছে।
র্যাব কর্মকর্তা বলেন, রোববার মধ্যরাতে টেকনাফের জাদিমুরায় মোছনী রোহিঙ্গা ক্যাম্প সংলগ্ন গহীন পাহাড়ি এলাকায় সশস্ত্র জকির বাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছে খবরে র্যাবের একটি দল অভিযান চালায়। এক পর্যায়ে ভোর রাতের দিকে ওই এলাকায় জকির বাহিনীর আস্তানার সন্ধান পায় র্যাব।
“ঘটনাস্থলে পৌঁছলে র্যাব সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়তে থাকে ডাকাত দলের সদস্যরা। র্যাবও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি ছোড়ে।”
তিনি বলেন, ডাকাত দলের সঙ্গে র্যাবের থেমে থেমে প্রায় চার ঘণ্টাব্যাপী গোলাগুলি চলে। এক পর্যায়ে গোলাগুলি থেমে গেলে ঘটনাস্থলে সাত জনকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পাওয়া যায়। এতে বাহিনী প্রধান জকিরসহ আরও একজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছে।
এ সময় তিন জন র্যাব সদস্যও আহত হন বলে তিনি জানান।
ঘটনাস্থল থেকে তিনটি বিদেশি পিস্তল, সাতটি দেশে তৈরি বন্দুক, ১২টি পিস্তলের গুলি ও ১৩টি কার্তুজ উদ্ধার করা হয়েছে বলেও তিনি সংবাদ সম্মেলনে জানান।
“আহতদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক গুলিবিদ্ধ সাত জনকে মৃত ঘোষণা করেন।”
আজিম আরও বলেন, আহত র্যাব সদস্যদের টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সাত মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর জন্য টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
আজিম বলেন, অপরাধ সংঘটিত করে সশস্ত্র ডাকাত দলের সদস্যরা গহীন পাহাড়ি আস্তানায় আত্মগোপন করে থাকে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের আশপাশের বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় এসব ডাকাত দলের একাধিক গোপন আস্তানা রয়েছে।
“এগুলোর মধ্যে জকির বাহিনীর প্রধান জকিরের পাহাড়ি আস্তানা ছাড়াও রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরে পাঁচটি আস্তানা রয়েছে; যেগুলো এক সময় পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধের ঘটনায় নিহত রোহিঙ্গা মাদক পাচারকারী নুর মোহাম্মদ বাসা ছিল। এসব বাসা আস্তানা হিসেবে ব্যবহার করে রোহিঙ্গা ডাকাত জকির ক্যাম্পের অভ্যন্তরে অপরাধ সংঘটন করে চলছে।”
বন্দুকযুদ্ধের সময় পালিয়ে যাওয়া বাহিনী প্রধান জকিরসহ অন্যদের গ্রেপ্তারে র্যাব অভিযান অব্যাহত রেখেছে বলে জানান উইং কমান্ডার আজিম।