ঢাকার সাভারে চাষিরা দিন দিন ফুল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। আগে যেখানে সবজি চাষ হত, এখন সেখানে ফুলের চাষ হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। আর ফুলের মধ্যে বেশির ভাগই জারবেরা।
Published : 20 Dec 2019, 09:20 PM
এই প্রেক্ষাপটে সম্প্রতি সাভারের আশুলিয়ায় টিস্যু কালচারের মাধ্যমে জারবেরা চারা উৎপাদনের ল্যাবরেটরি চালু করেছে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) ও পল্লী মঙ্গল কর্মসূচি।
ল্যাবরেটরির প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আতাহারুজ্জামান বলেন, “বাংলাদেশের ফুলের সবচেয়ে বড় ক্লাস্টার যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার গদখালিতে হলেও সাভারে ফুল চাষ উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
“এখানকার প্রায় ১৫০০ কৃষক এ পেশায় জড়িত। দিন দিন ফুলের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং অন্যান্য ফসলের চেয়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় তাদের আগ্রহ বাড়ছে।”
“আমাদের ল্যাবে টিস্যু কালচারের মাধ্যমে রোগমুক্ত সুস্থ সবল চারা উৎপাদন শুরু করেছি আমরা। শিগগিরই বিক্রি শুরু হবে। এখান থেকে প্রতিটা চারা ৩৫-৪০ টাকা দরে সরবরাহ করা সম্ভব হতে পারে।”
সূর্যমুখীর মতো দেখতে লাল, হলুদ, সাদা, কমলা, গোলাপিসহ বেশ কয়েকটি রঙের জারবেরার চাষ হয় সাভারে।
বিরুলিয়াল মনিরুজ্জামান পলাশ বলেন, ঢাকায় এ ফুলের পাইকারি বাজার রয়েছে। প্রতিদিন বাগান থেকে ফুল তুলে পাইকারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। পাইকারি দরে প্রতিটি ফুল বিক্রি হয় ১০ থেকে ১৫ টাকা। ফুলের দোকানে খুচড়া বিক্রি হয় ২০ থেকে ৩০ টাকা করে। তবে বিশেষ দিনগুলোয় চাহিদা বেশি থাকায় দাম বেড়ে যায়।
বিরুলিয়ায় নাসির হোসেন, ফারুক হোসেন, কামাল হোসেন, আশরাফ মিয়া, বিল্লাল হোসেন, মীর মহিউদ্দিন আহমেদসহ অনেকে জারবেরা চাষ করছেন।
“সপ্তাহে চারবার ফুল সংগ্রহের পর তা পলি দিয়ে মুড়িয়ে ও বাক্সবন্দি করে রাজধানী ঢাকার শাহবাগের পাইকারদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়। জারবেরা চাষে আমার কখনও লোকশান গুনতে হয়নি।”
আকরাইনের আইঠর গ্রামের যৌথভাবে খামার করেছেন আশরাফ মিয়া, ফারুক হোসেন ও কামাল হোসেন।
আশরাফ বলেন, “এক বিঘা জমিতে সারা বছর ফসল চাষ করে ৫০ হাজার টাকার বেশি পাওয়া যায় না। এ থেকে উৎপাদন খরচ বাদে কৃষকের লাভ খুবই কম থাকে।
“জারবেরা চাষে সমপরিমাণ জমি থেকে খরচ বাদে পাওয়া যায় প্রায় ছয় লাখ টাকা।”
লাল, হলুদ, সাদা, কমলা, গোলাপিসহ ১০-১২টি রংয়ের জারবেরা হয় বলে তারা জানান।
সাভার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নাজিয়াত আহমেদ বলেন, সাভার উপজেলায় প্রায় ১৫ হেক্টর জমিতে জারবেরা চাষ হচ্ছে। জারবেরা একটি বিদেশি ফুল।
“জারবেরার উৎপাদন কলাকৌশল ও পোকামাকড় দমন সম্পর্কে আমরা উপজেলা কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছি। জারবেরা চাষ সম্পর্কে অনেক চাষির ধারণা কম। তবে কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর সারাক্ষণই কৃষকের পাশে আছে এবং মনিটরিং করছে।