নীলফামারীর সদর উপজেলায় এক কিশোরীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে সালিশে জরিমানার পর বিষপানে আত্মহত্যা করেছে এক কলেজছাত্র।
Published : 11 Jul 2018, 09:00 PM
উপজেলার রামনগর ইউনিয়নের বাহালিপাড়া গ্রামে এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে ওই ছাত্রের কাকা আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আটজনকে আসামি করে মামলা করেছেন বলে নীলফামারী থানার ওসি বাবুল আকতার জানান।
মৃত সবুজ চন্দ্র রায় (২০) চাঁদেরহাট ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিলেন।
মামলার নথির বরাত দিয়ে ওসি জানান, বাহালিপাড়া গ্রামের এক কিশোর-কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে। গত ৬ জুলাই দুপুরে তাদের একটি পাটক্ষেতে দেখতে পেয়ে মেয়ের দাদাকে জানায় সবুজ। এ সময় মেয়েটির পরিবারের লোক সবুজকে আটকে রেখে তার বিরুদ্ধে ওই কিশোরীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ তোলে।
“পরে এ নিয়ে গ্রাম্য সালিশে সবুজের পরিবারের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করে পরদিন ভোরে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।সেখান থেকে ছাড়া পেয়ে দুপুরে কীটনাশক পান করে সবুজ। পরে তাকে নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়।”
সেখান থেকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৯ জুলাই সন্ধ্যায় তার মৃত্যু হয় বলে জানান ওসি।
সবুজের কাকা মামলার বাদী নরেশ চন্দ্র রায় বলেন, “মিথ্যা ওই অপবাদ সইতে না পেরে সবুজ আত্মহত্যা করেছে। কীটনাশক পানের আগে সে তার ডায়েরির পাতায় মিথ্যা অপবাদ, গ্লানির কথা লিখে সালিশকারীদের বিচার দাবি করেছে।
প্রায় পাঁচ বছর আগে সবুজের বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর অভিভাবক হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ওসি বাবুল বলেন, সবুজের সুইসাইড নোটটি উদ্ধার করা হয়েছে। আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে আটজনের নামে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
এদিকে এ ঘটনায় বুধবার বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শর করেন জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদ সভাপতি খোকারাম রায়, সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি রায় ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রমেন্দ্র নাথ বর্ধন।
ঘটনাস্থল পরিদর্শর শেষে জেলা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্ট্রান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মৃণাল কান্তি রায় বলেন, ‘মিথ্যা অপবাদে সবুজকে ফাঁসানো হয়েছে। সালিশকারীরা তাকে আত্মহত্যার দিকে ঠেলে দিয়েছেন। আমরা এর সঠিক বিচার দাবি করছি।”