“সোনার বাংলার যে স্বপ্ন রবীন্দ্রনাথ দেখেন, তা বাস্তবায়ন করেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে।”
Published : 08 May 2024, 07:53 PM
রবীন্দ্রনাথ বাঙালির জাতীয় চেতনার উন্মেষ ঘটান এবং কবিগুরু যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন তার বাস্তবায়ন শুরু হয় জাতির পিতার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে।
বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে চট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথা বলেন।
'সোনার বাংলার স্বপ্ন ও বাস্তবতা রবীন্দ্রনাথ থেকে বঙ্গবন্ধু' শীর্ষক আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে কবিগুরুর জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়।
আলোচনা পর্বে মুখ্য আলোচক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার সাঈদ বলেন, “রবীন্দ্রনাথ আমাদের চিত্তের যে বিকাশ ঘটিয়েছেন তা অতুলনীয়। প্রাদেশিক একটি ভাষা বাংলাকে তিনি বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন।
“সোনার বাংলার যে স্বপ্ন রবীন্দ্রনাথ দেখেন, তা বাস্তবায়ন করেন বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তি সংগ্রামের মাধ্যমে একটি স্বাধীন জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মধ্যে দিয়ে।”
তিনি বলেন, “জাতির পিতার চেতনায় জাগরুক ছিলেন রবীন্দ্রনাথ। জেলে যাবার সময় প্রতিবার তিনি রবীন্দ্রনাথের বই নিয়ে যান। উনার প্রিয় বই ছিল 'সঞ্চয়িতা'। 'আমার সোনার বাংলা' গানটি বঙ্গবন্ধু অনেক আগে থেকে হৃদয়ে ধারণ করেছেন। রবীন্দ্রনাথ ভারতে জন্মেছিলেন কিন্তু তার রচনায় চিরকাল বাংলার সুর ধ্বনিত হয়েছে। ১২ বছর তিনি পূর্ববঙ্গে কাটিয়েছেন, যা ছিল সৃষ্টিতে পরিপূর্ণ এক সময়।”
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার মো. তোফায়েল ইসলাম বলেন, “বাংলা সাহিত্যের সকল শাখার উৎকর্ষ সাধন করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তিনি যে সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠায় আমরা এগিয়ে চলেছি বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে।
“বিবিসি বাংলার জরিপে শ্রেষ্ঠ দুই বাঙালি বঙ্গবন্ধু এবং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমাদের ভাবনায়, আবেগে, মুক্তি সংগ্রামে ও জাতীয় জীবনে তাদের দুজনের অবদান সবচেয়ে বেশি।”
বিশেষ অতিথি সিএমপি কমিশনার কৃষ্ণপদ রায় বলেন, “রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে আমাদের জানাশোনা শুরু উনার কবিতা পড়ে ও গান শুনে। বিশ্বকবি শিক্ষার উপর জোর দিয়েছিলেন। শিশুবেলা থেকেই সঠিক শিক্ষাদানে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলায় তিনি জোর দেন। বঙ্গবন্ধু যে সোনার বাংলা বাস্তবায়ন শুরু করেছিলেন তার স্বপ্ন দেখেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর।”
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান বলেন, “পরাধীন জাতির সোনার বাংলা ফিরে পাবার স্বপ্ন ফুটে ওঠে রবীন্দ্রনাথের রচনায়। আর এই জনপদকে স্বাধীন করতে আমাদেরকে জাতিসত্তা হিসেবে ধীরে ধীরে গড়ে তোলেন জাতির পিতা। তিনি দেশের স্বাধীনতা এনেছেন।
“জাতির পিতার অসম্পূর্ণ কাজ বাস্তবায়নে কাজ করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কবিগুরু ও জাতির পিতার চেতনা ধারণ করে সেই লক্ষ্য অর্জন করতে পারলেই তাদের প্রতি যথাযথ সম্মান জানানো সম্ভব হবে।”
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি নুরে আলম মিনা ও চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এস এম শফিউল্লাহ, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার একে এম সারোয়ার কামাল ও মোজাফফর আহমদ।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পর্বে আবৃত্তি শিল্পী ফারুক তাহেরের সঞ্চালনায় দলীয় সঙ্গীত পরিবেশন করে অভ্যুদয় সঙ্গীত অঙ্গন, সঙ্গীত তীর্থ, জাতীয় রবীন্দ্র সঙ্গীত সম্মেলন পরিষদ চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ রবীন্দ্র সঙ্গীত শিল্পী সংস্থা, রক্তকরবী ও জেলা শিল্পকলা একাডেমি সঙ্গীত দল।
দলীয় নৃত্য পরিবেশন করে ওডিসি অ্যান্ড টেগোর ডান্স মুভমেন্ট সেন্টার, জেলা শিল্পকলা একাডেমি নৃত্যদল, বাংলাদেশ নৃত্য শিল্পী সংস্থা চট্টগ্রাম ও নৃত্যশিল্পী সংসদ চট্টগ্রাম। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী শুভাগত চৌধুরী, অনুরিনা চৌধুরী, অনিন্দিতা মুৎসুদ্দী ও বহ্নিশিখা রক্ষিত।
আবৃত্তি করেন শামীমা ইয়াছমিন মুন্নী, মিশফাক রাসেল, তানিয়া ও মো. মুজাহিদুল ইসলাম।