শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলার ওয়াপদা ঘাটে পদ্মার ভাঙনে লঞ্চডুবিতে নিখোঁজদের মধ্যে দুইজনের লাশ পাওয়া গেছে।
Published : 13 Sep 2017, 06:21 PM
বুধবার নদীতে ভাসমান লাশ দুটি পাওয়া যায় বলে জানান চাঁদপুর নৌ-পুলিশের এসপি সুব্রত কুমার হালদার।
এদের মধ্যে একজন নড়িয়া উপজেলার লোনসিন গ্রামের মোহাম্মদ আলীর স্ত্রী পারভিন আক্তার। আরেকজনের পরিচয় জানা যায়নি।
রোববার রাতে সদর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি মৌচাক-২ এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এমভি নড়িয়া-২ ও মহানগর লঞ্চ ভোর ৪টায় ওয়াপদা ঘাটে পৌঁছে। অন্ধকার থাকায় কিছু যাত্রী লঞ্চে থেকে যায়।
পরে লঞ্চ ঘাটের পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ের সঙ্গে নোঙর করে লঞ্চে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীসহ স্টাফরা ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর ৫টার দিকে তীব্র স্রোতে বাঁশঝাড়সহ পাড় ধসে লঞ্চ তিনটি ডুবে যায়। এরপর সাঁতরে তীরে ওঠা যাত্রী ও লঞ্চের স্টাফরা ২৫ জন নিখোঁজ বলে জানালেও ১২ জনের তালিকা দেয় পুলিশ।
লঞ্চডুবির পর বিআইডব্লিউটিএ-এর উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় ও খুলনা থেকে আসা নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল নিখোঁজদের উদ্ধার ও লঞ্চের কোনো সন্ধান করতে পারেনি। বুধবার থেকে নৌ পুলিশ, নৌবাহিনীর ডুবুরিদল ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা সাউন্ড স্ক্যান পদ্ধতিতে অনুসন্ধানের কাজ শুরু করেছে।
লঞ্চডুবিতে বেঁচে যাওয়া মোহাম্মদ আলী বলেন, রাত অনুমান সাড়ে ৩টায় মৌচাক-২ লঞ্চটি পাড়ে ভেড়ে। অন্ধকার থাকায় ছোট বাচ্চা, স্ত্রী ও শাশুড়িসহ লঞ্চের কেবিনেই অপেক্ষায় থাকি।
“ভোর ৫টায় উঠে স্ত্রী পারভিনকে রেডি হতে বলে বাথরুমে যাই। এ সময় বিকট শব্দ হয়ে লঞ্চটি ডুবে যায়। আমি বাথরুম থেকে বের হয়ে কাউকেই দেখতে পাইনি।স্ত্রীর লাশ পেলেও বাচ্চা ও শাশুড়ির লাশ পাইনি।”
কে বা কারা নৌকায় করে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএ সংরক্ষণ ও পরিচালন বিভাগের পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, স্রোত এত বেশি যে ডুবুরিরা নদীর তলদেশে যেতে পারছে না। স্বাভাবিকভাবে ১ দশমিম ৫ কিলোমিটার গতির স্রোতে ডুবুরিরা কাজ করতে পারে। এখানে স্রোতের গতিবেগ ৭ কিলোমিটারের উপরে আছে।
“বুধবার সকাল থেকে সাউন্ড স্ক্যানের মাধ্যমে অনুসন্ধান কাজ শুরু হয়েছে। শনাক্ত করতে পারলে প্রত্যয় উদ্ধার কাজ করবে।”
জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হোসাইন খান বলেন, জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে নদীতে স্রোত ও নদী ভাঙনের কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটেছে।