নড়িয়ায় লঞ্চডুবি: উদ্ধার হয়নি কেউ

শরীয়তপুরের নড়িয়া ওয়াপদা ঘাটে লঞ্চডুবির ঘটনায় নিখোঁজদের কাউকে দুইদিনেও উদ্ধার করা যায়নি।

শরীয়তপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 12 Sept 2017, 03:19 PM
Updated : 12 Sept 2017, 03:19 PM

তীব্র স্রোতের কারণে মঙ্গলবার বিকালে উদ্ধারকারী জাহাজ প্রত্যয় শনাক্ত করা লঞ্চ মৌচাক-২ উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে।

এদিকে মঙ্গলবার সকাল থেকে নিখোঁজদের ছবি হাতে পদ্মার পাড়ে ভিড় করে স্বজনরা।

সোমবার ভোরে নড়িয়ার ওয়াপদা ঘাটে বাঁশঝাড়সহ নদীর তীর ভেঙে পড়ে তিনটি লঞ্চডুবি হয়। এরপর সাঁতরে তীরে ওঠা যাত্রী ও লঞ্চের স্টাফরা ২৫ জন নিখোঁজ বলে জানালেও ১২ জনের তালিকা দেয় পুলিশ।

নৌ-বাহিনীর ডুবুরি দলের প্রধান লেফটেন্যান্ট কায়সার ইসলাম বলেন, স্রোতের কারণে উদ্ধার অভিযান ব্যাহত হচ্ছে। আপাতত শনাক্ত করা মৌচাক-২ উদ্ধারের কাজ বন্ধ রেখে বাকি দুটি লঞ্চ সন্ধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

মঙ্গলবার বিকালে বিআইডব্লিউটিএ উদ্ধারকারী জাহাজ ‘প্রত্যয়’ দুলারচরে মৌচাক-২ নামের লঞ্চটি উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। এর আগে সোমবার বিকালে তারা লঞ্চটি উদ্ধারের চেষ্টা করে ফিরে আসে।

মৌচাক-২ লঞ্চের দোকানি লিটন সেখের স্ত্রী ফাতেমা বেগম সুরেশ্বর এলাকায় পদ্মাপাড়ে স্বামীর ছবি ও কোলের বাচ্চা নিয়ে আহাজারি করছেন।

তিনি বলেন, “ঘটনার দিন রাত ৩টায় সে বাড়ি থেকে লঞ্চে ফিরে আসে। এরপর তার আর কোনো খোঁজ নেই। আমি আমার স্বামীর লাশটা চাই।”

নড়িয়া-২ লঞ্চের যাত্রী নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী রিপন দাসের আত্মীয় দিলীপ কুমার বলেন, রিপন নড়িয়া বেড়াতে এসেছিল। লঞ্চডুবির পর থেকে তার মোবাইল বন্ধ। গত দুদিন তার কোনো খোঁজ নেই।

মৌচাক-২ লঞ্চের বাবুর্চি মানিক মাদবরের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, “আমার স্বামীর লাশটা ফেরত চাই, যাতে আমার সন্তানরা বাবার কবরটা দেখে শান্তি পায়।”

নড়িয়া থানার ওসি মো. আসলাম উদ্দিন বলেন, গত দুদিন ধরে উদ্ধার কাজ চালিয়ে  ডুবুরিরা কোনো লাশ বা নিখোঁজ যাত্রীদের কাউকেই উদ্ধার করতে পারেনি।

ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক মাহবুবা আকতার বলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.  মিজানুর রহমানকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের কমিটিকে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হলেও তারা রিপোর্ট জমা দেয়নি।

রোববার রাতে সদর ঘাট থেকে ছেড়ে আসা লঞ্চ এমভি মৌচাক-২ এবং নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা এমভি নড়িয়া-২ ও মহানগর লঞ্চ ভোর ৪টায় ওয়াপদা ঘাটে পৌঁছে। অন্ধকার থাকায় কিছু যাত্রী লঞ্চে থেকে যায়।

পরে লঞ্চ ঘাটের পাশে একটি বাঁশ ঝাড়ের সঙ্গে নোঙর করে লঞ্চে অপেক্ষায় থাকা যাত্রীসহ স্টাফরা ঘুমিয়ে পড়ে। ভোর ৫টার দিকে তীব্র স্রোতে বাঁশঝাড়সহ পাড় ধসে লঞ্চ তিনটি ডুবে যায় বলে জানান তারা।