আদালতের আদেশে কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর লাশ কবর থেকে তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করার আড়াই মাস পর পুলিশের কাছে প্রতিবেদন দিয়েছেন চিকিৎসকরা।
Published : 12 Jun 2016, 11:37 AM
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের দুইজন অফিস সহকারী রোববার বেলা ১১টায় সিআইডি কার্যালয়ে গিয়ে ওই প্রতিবেদন দিয়ে আসেন। তাদের কাছ থেকে প্রতিবেদনটি বুঝে নেন এ এসআই মোশাররফ।
তবে দ্বিতীয় দফা প্রতিবেদনে কী আছে, তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ চিকিৎসকরা পেয়েছেন কি না- সে বিষয়ে পুলিশে পক্ষ থেকে কিছু বলা হয়নি।
এএসপি কাজী মো. মোজাম্মেল হক বলেন, “মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক কাজী মো. ইব্রাহিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলবেন।”
গত ২০ মার্চ খুনের পর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার পর সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুনিরা তনুকে ধর্ষণও করেছিল; তার ডিএনএ নমুনা তারা পেয়েছেন।
আলোচিত এই খুনের প্রথম ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা।
তারপর দীর্ঘ সময়েও তারা প্রতিবেদন দিতে না পারায় সমালোচনা হয়। তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ওই চিকিৎসকদের উকিল নোটিসও পাঠান।
চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তনুর দাঁত ও লালা পরীক্ষার প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কাছে। তখন সিআইডি বলেছিল, এগুলোর আলাদা কোনো প্রতিবেদন তারা করেনি।
এই প্রেক্ষাপটে কুমিল্লার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জয়নাব বেগম পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চিকিৎসকদের সরবরাহের নির্দেশ দেন। চিকিৎসকার ওই প্রতিবেদন হাতে পান গত ৭ জুন।
সেনানিবাস বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে তনু গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে নিজেদের কোয়ার্টার থেকে অন্য কোয়ার্টারে ছাত্র পড়াতে গিয়ে খুন হন।
ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ধর্ষণের সন্দেহের কথা জানালেও প্রথম ময়নাতদন্তের পর চিকিৎসকরা ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানান। এ নিয়ে সারাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে আদালতের নির্দেশে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত হয়।
আর সেনানিবাসের ভেতরে তনুর লাশ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা চালায় সিআইডি।