কুমিল্লার নিহত কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর দ্বিতীয় ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আগামী রোববার দিতে পারবেন বলে আশা করছেন তদন্ত দলের সদস্যরা।
Published : 07 Jun 2016, 06:25 PM
মঙ্গলবার তনুর ডিএনএ পরীক্ষার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পাওয়ার পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাংবাদিকদের একথা বলেন।
তিনি বলেন, “তনুর পূর্ণাঙ্গ ডিএনএ প্রতিবেদন আমরা হাতে পেয়েছি। তদন্ত বোর্ডের সদদ্য ডা. ওমর ফারুক মামলায় সাক্ষ্য দিতে কুমিল্লার বাইরে রয়েছেন।
“তবে উক্ত রিপোর্ট বিশ্লেষণ করে গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সভায় সিদ্ধান্ত নিয়ে আগামী রোববার দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দিতে পারব বলে আশা করছি।”
মঙ্গলবার দুপুরে সিআইডির এসআই মোশাররফ হোসেন ও কনস্টেবল শাহ আলম ডিএনএ রিপোর্ট জমা দেন।
গত ২০ মার্চ খুনের পর প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে চিকিৎসকরা বলেছিলেন, তনুকে হত্যার আগে ধর্ষণের কোনো প্রমাণ তারা পাননি।
কিন্তু ডিএনএ পরীক্ষার পর সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়, খুনিরা তনুকে ধর্ষণও করেছিল; তার ডিএনএ নমুনা তারা পেয়েছেন।
আলোচিত এই খুনের প্রথম ময়নাতদন্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর আদালতের নির্দেশে লাশ তুলে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করেন কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের চিকিৎসকরা।
তারপর দুই মাস গড়ালেও প্রতিবেদন দিতে পারেননি ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা, যা নিয়ে সমালোচনা রয়েছে। তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ওই চিকিৎসকদের উকিল নোটিসও পাঠিয়েছেন।
ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক দলের সদস্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রধান কামদা প্রসাদ বলে আসছিলেন, সিআইডির ডিএনএ টেস্টের প্রতিবেদন পেলেই তারা প্রতিবেদন দিতে পারবেন।
চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে তনুর দাঁত ও লালা পরীক্ষার প্রতিবেদন চাওয়া হয়েছিল মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডির কাছে। তখন সিআইডি বলেছিল, এগুলোর আলাদা কোনো প্রতিবেদন তারা করেনি।
এই প্রেক্ষাপটে রোববার কুমিল্লার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম জয়নাব বেগম পূর্ণাঙ্গ ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন চিকিৎসকদের সরবরাহের নির্দেশ দেন।
গত ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতরে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী তনুর লাশ যেখানে পাওয়া গিয়েছিল, সেখান থেকে আলামত সংগ্রহ করে তার পরীক্ষা চালায় সিআইডি।
সেনানিবাস বোর্ডের কর্মচারী ইয়ার হোসেনের মেয়ে তনু নিজেদের কোয়ার্টার থেকে অন্য কোয়ার্টারে ছাত্র পড়াতে গিয়ে খুন হন।
লাশ উদ্ধারের সময় পুলিশ ধর্ষণের সন্দেহের কথা জানালেও ২১ মার্চ ময়নাতদন্তের পর ধর্ষণের প্রমাণ না পাওয়ার কথা জানান চিকিৎসকরা।
এ নিয়ে সারাদেশে ক্ষোভ-বিক্ষোভের মধ্যে আদালতের নির্দেশে ৩০ মার্চ কবর থেকে তনুর লাশ তুলে দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত করা হয়।