রাজধানীর হাজারীবাগ থেকে চামড়াশিল্প-কারখানা স্থানান্তরে বেঁধে দেওয়া সময় পেরিয়ে গেলেও সাভারের হেমায়েতপুরের হরিণধরা এলাকায় চামড়া শিল্পনগরীর নির্মাণকাজ শেষ হয়নি এখনও।
Published : 02 Apr 2016, 11:47 PM
শুধু তাই নয়, কেন্দ্রীয় বর্জ্য শোধনাগারের (সিইটিপি) নির্মাণকাজ বন্ধ রয়েছে গত এক মাস ধরে।
শনিবার সরজমিনে ওই এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে সিইটিপির নানা যন্ত্রাংশ।
নির্মাণকাজের দায়িত্বরত প্রকৌশলী একরামুল শেখ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চারটি ক্যাটাগরিতে সিইটিপি নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে দুটি ক্যাটাগরির ৪০ শতাংশ এবং দুটি ক্যাটাগরির ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হলেও আর্থিক কারণে কাজ বন্ধ রয়েছে।
“বিষয়টি জানিয়ে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরে একাধিকবার চিঠি দেওয়া হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। ফলে কাজ বন্ধ থাকায় খোলা আকাশের নিচে রোদ-বৃষ্টিতে নষ্ট হচ্ছে মূল্যবান যন্ত্রাংশ।”
দফায় দফায় সময় দিয়েও ঢাকার ট্যানারিগুলোকে সাভার চামড়া শিল্পনগরীতে পাঠাতে না পেরে শেষ পর্যন্ত শুক্রবার হাজারীবাগে কাঁচা চামড়ার প্রবেশ ঠেকাতে বসানো হয় পুলিশি পাহারা।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু ট্যানারি স্থানান্তরে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দিয়েছিলেন মালিকদের।
এদিকে হাজারীবাগ থেকে সরে যেতে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও সাভারে ওই শিল্পনগরীর কয়েকটি কারখানা বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেও কোনা কারখানায় এখনও লাগেনি পানি ও গ্যাস সংযোগ।
যাদের ভবনের কাজ শেষ পর্যায়ে তাদের মধ্যেও অনেকেই এখনও বিদ্যুৎ-গ্যাস ও পানির সংযোগ পায়নি বলেও স্বীকার করেন তিনি।
পঞ্চাশের দশকে নারায়ণগঞ্জ থেকে সরে আসা হাজারীবাগ ট্যানারি শিল্পের বয়স অর্ধ শতকের বেশি। দীর্ঘ সময় পরিবেশ দূষণের বিষয়টি নিয়ে তেমন উচ্চবাচ্য না হলেও ১৯৮৬ সালে সবচেয়ে বেশি দূষণকারী শিল্প হিসেবে হাজারীবাগের ট্যানারি কারখানাগুলো চিহ্নিত হয়।
এরপর ২০০১ সালে দূষণ বন্ধে উচ্চ আদালত থেকে আসে নির্দেশনা। ২০০৩ সালের ১৬ অগাস্ট একনেক সভায় চামড়া শিল্পনগরী প্রকল্পের অনুমোদনের পর প্রায় এক যুগ লেগে যায় তা বাস্তবায়নে।
হাজারীবাগ থেকে সব ট্যানারিকে সাভারে নিয়ে যেতে ব্যর্থ হয়ে ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছিল।
এরপর সময় বাড়ানো হলেও অসম্পূর্ণ সিইটিপি ও শিল্পনগরী পূর্ণাঙ্গ রূপ না পাওয়ায় সেখানে যেতে অস্বীকৃতি জানিয়ে আসছিল হাজারীবাগের কারখানা মালিকরা।
শনিবার ১৯৯ দশমিক ৪০ একর জমিতে চামড়া শিল্পনগরীতে গিয়ে দেখা যায়, হাতেগোণা কয়েকটি কারখানার দুই থেকে তিন তলা পর্যন্ত সম্পন্ন হয়েছে।
বেশির ভাগ প্লটে পাইলিংয়ের কাজ চলছে। কিছু প্লটে আবার কাজ শুরু হয়েও বন্ধ রয়েছে।
লিমন এন্টারপ্রাইজের মালিক শাহ আমান পাটওয়ারী অভিযোগ করেন, “সরকার আমাদের প্লট রেজিস্ট্রি করে দেয়নি। লে-আউট দেখিয়ে ১৭০ টাকা স্কয়ার ফিট দরে বিক্রি করেছে।
“জমির কাগজপত্র না থাকায় ব্যাংক আমাদের লোন দিচ্ছে না। লোন না পেলে কীভাবে কারখানা স্থানান্তর করব? তাছাড়া প্লটে গ্যাস-বিদ্যুৎ আসেনি এখনও।”