“দখলমুক্ত করার কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুক্ত নয়। তবে দলের অনেকেই শিক্ষার্থী, তাই তারা সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেটি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন।”
Published : 19 Mar 2025, 11:22 AM
খুলনা নগরের শান্তিধাম মোড়ে ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাব দখল করে বানানো গণ অধিকার পরিষদের কার্যালয় উচ্ছেদ করেছে স্থানীয় ‘ছাত্র-জনতা’, যারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নতুন দল জাতীয় নাগরিক পার্টির কর্মী বলে পুলিশের ভাষ্য।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে এ ঘটনার সময় দুপক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। পরে ভবনটি ‘দখলমুক্ত’ হয় বলে খুলনা সদর থানার ওসি হাওলাদার সানোয়ার হুসাইন মাসুম জানান।
ওসি বলেন, “গণপূর্তের ভবনটি গণ অধিকার পরিষদ দখল করে নিয়েছিল। হঠাৎ করে এনসিপি দলের নেতা-কর্মীরা সেটি দখলমুক্ত করতে আসে। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে কিছুটা পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষের অনেকেই আহত হয়েছেন বলে শুনেছি।
“ভবনটির পাহারায় এখন পুলিশ আছে। পরে গণপূর্তের কাছে হস্তান্তর করা হবে।”
স্থানীয়রা বলছেন, শান্তিধাম মোড়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাবটির কার্যক্রম যে ভবনে পরিচালনা করা হত, সেটি মূলত গণপূর্তের একটি দোতলা ভবন। দ্বিতীয় তলায় ক্লাবের কার্যক্রম চলত। নিচতলায় ছিল আরও কিছু কার্যালয়।
২০১০ সালের দিকে গণপূর্ত বিভাগ থেকে নিজেদের নামে বরাদ্দ নিয়ে আসে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র। এরপর ১৪ বছর ধরে সেখানে ক্লাবের কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছিল।
গত ২৭ জানুয়ারি দুপুরের দিকে গণ অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা তালা ভেঙে সেখানে প্রবেশ করে তা দখলে নেন। সেদিনই পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের সাইনবোর্ড খুলে ফেলে সেখানে ‘গণ অধিকার পরিষদ, খুলনা নগর ও জেলা কার্যালয়’ লেখা একটি ব্যানার টানিয়ে দেওয়া হয়।
ক্লাব ভবন দখল করে নিজেদের কার্যালয় করার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ওই দিন রাতেই গণ অধিকার পরিষদের খুলনা নগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলামকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি।
স্থানীয়দের ভাষ্য, তারপরও রাশেদুল কার্যালয়টি ‘দখলে রেখে’ সেখানে দলীয় কার্যক্রম চালাতেন।
এ বিষয়ে রাশেদুল বলেন, মঙ্গলবার রাতে কার্যালয়ের মধ্যেই তারা তারাবি নামাজ পড়ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের’ নেতাকর্মীরা সেখানে হামলা করেন। তারা কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর ও তাদের মারধর করে সেখান থেকে বের করে দেয়।
রাশেদুলের ভাষ্য, এ সময় তিনিসহ অন্তত ১০ জন আহত হন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সহসমন্বয়ক ও খুলনা জেলার সদস্যসচিব সাজিদুল ইসলাম বাপ্পী বলেন, “ভবনটি সরকারি। সেখানে ইজারা নিয়ে পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র ক্লাব কাযক্রম পরিচালনা করত। সেই ক্লাব দখল নিয়ে রাজনৈতিক কার্যালয় বানানো হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত ছাত্র-জনতা ওই ভবনটি দখলমুক্ত করতে এসেছিল।”
এ সময় গণ অধিকার পরিষদের নেতা-কর্মীদের হামলায় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হয়েছেন বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন বাপ্পী।
বাপ্পী বলছেন, “দখলমুক্ত করার কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুক্ত নয়। তবে দলের অনেকেই যেহেতু শিক্ষার্থী, তাই তারাও সাধারণ মানুষের সঙ্গে সেটি দখলমুক্ত করতে গিয়েছিলেন।”
এ বিষয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টির বক্তব্য জানতে পারেনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম।