“একজন প্রার্থী রক্তাক্ত হয়েছেন এটা অনাকাঙ্ক্ষিত; শুনেছি সেখানে তাদের ভেতরে হঠাৎ করে অরাজকতা হয়েছে।“
Published : 12 Jun 2023, 06:15 PM
বরিশালে ইসলামী আন্দোলনের মেয়র পদপ্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’; তবে এর সঙ্গে নিজেদের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ।
ক্ষমতাসীন দলটি বরং প্রশ্ন তুলেছে, ভোট চলাকালে চোরমোনাইয়ের পীরের দলটির সমর্থকরা কীভাবে লাঠিসোটা ও অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে নগরীতে প্রবেশ করতে পারল?
সোমবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত নগরীর ১২৬ কেন্দ্রে টানা ভোটগ্রহণ হয়। এরপরই সংবাদ সম্মেলেনে এসে এই প্রশ্ন তুলেন নৌকা প্রতীকের মেয়র পদপ্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাতের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আফজালুল করিম।
সার্কিট হাউজের বিপরীতে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, “বরিশালে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশালবাসী ও গণমাধ্যমকর্মীরা সহযোগিতা করেছেন। ভোটাররা লাইনে দাড়িয়ে সুন্দরভাবে ভোট প্রদান করেছেন।”
সকাল থেকে ছোটখাট কিছু অভিযোগের বাইরে ভোটগ্রহণ মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবেই চলছিল। কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটারদের লাইনও ছিল।
এর মধ্যেই হাতপাখার প্রার্থী ফয়জুল করীমের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ও মহানগর পুলিশ কমিশনারের কাছে দেওয়া অভিযোগে ফয়জুল করীম অভিযোগ করেছেন, ৩০-৪০ জন ‘নৌকা সমর্থক’ অতর্কিতভাবে এই হামলা চালায়। হামলায় তিনি রক্তাক্ত হয়েছেন। এ সময় সঙ্গে থাকা নেতাকর্মীরাও হামলার শিকার হয়েছেন।
বরিশালে লাঠি হাতে হাতপাখা কর্মীদের শহরে ঢোকার চেষ্টা, থামাল পুলিশ
হাতপাখার ফয়জুলের ওপর হামলাকারীকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ ইসির
বরিশালে ‘ঘুষিতে’ রক্তাক্ত হাতপাখার প্রার্থী
সংবাদ সম্মেলনে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে নৌকা প্রার্থীর প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট আফজালুল করিম বলেন, “একজন প্রার্থী রক্তাক্ত হয়েছেন এটা অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। আমরা শুনেছি যেটা, সেখানে তাদের ভেতরে হঠাৎ করে অরাজকতা। আমার মনে হয়, তাদের সুপরিকল্পিত কোনো পরিকল্পনা থাকতে পারে শহরের ভেতরে অরাজকতা সৃষ্টি করতে। আমাদের দিক থেকে তাদের সঙ্গে কোনো বৈরিতা নেই, ছিল না, থাকবেও না।”
এ ধরনের অভিযোগকে ‘সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “গত কয়েকদিন ধরে তারা নানানভাবে মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আসছে। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শেষ পর্যন্ত আমাদের সঙ্গে তাদের কোনো ধরনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেনি।“
ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীদের কাছে প্রার্থী ফয়জুল করীমের ওপর হামলার খবর পৌঁছার পর পরই উত্তেজনা দেখা দেয়। তারা বিভিন্ন জায়গা থেকে লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে নগরীর ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুর বাজার এলাকায় জড়ো হতে থাকেন বলে পুলিশ জানায়।
একপর্যায়ে সেখান থেকে শত শত মানুষ মিছিল নিয়ে নগরীর ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তখন পুলিশ তাদের বাধা দেয় এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সেখানেই থামিয়ে দেয়। বিক্ষোভকারীরা হামলার প্রতিবাদ, হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও সরকারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন।
নৌকা প্রতীকের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়, হাতপাখার প্রার্থীরা তখন অস্ত্র বহন করছিল এবং এর প্রমাণ তাদের কাছে আছে। সাংবাদিকদের সেই ছবিও দেখানো হয়।
আওয়ামী লীগ নেতা আফজালুর রহমান বলেন, “আমি ছবিসহ নির্বাচন কমিশনে এ ব্যাপারে অভিযোগ দিয়েছি। সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচন চলাকালীন সময়ে কিভাবে তারা লাঠি, রামদা, অস্ত্র নিয়ে মহড়া দেয়?
“আমরা মনে করি, শান্তিপূর্ণ নির্বাচনকে ব্যাহত করার জন্য তারা এভাবে করছে। শহরের বাইরের লোকজন মিছিল সহকারে শহরের ভেতরে ঢুকছে। আমাদের বহিরাগত থাকলে নির্বাচন আইনে তাদের আইনের আওতায় আনা হত।”
কেন্দ্র থেকে ইসলামী আন্দোলনসহ অন্য প্রার্থীদের এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে আফজালুর রহমান বলেন, “ওখানে প্রত্যেক কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের লোক আছে তারা তো দেখছে। এ ধরনের অভিযোগ সত্য নয়।
সংবাদ সম্মেলনে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেনসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতার ছিলেন।