স্থানীয়রা মাদরাসা ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকলে পরিচালক পেছনের গেইট দিয়ে পালিয়ে যান।
Published : 11 Oct 2023, 10:38 PM
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় ‘মোবাইল দেখার কারণে’ এক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ পাওয়া গেছে। সেই শিক্ষার্থী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি রয়েছে।
মঙ্গলবার বিকালে উপজেলার দারুল উলুম আশরাফিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে বলে ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি মো. রুহুল আমিন জানান।
তিনি আরও বলেন, এ ঘটনায় বুধবার শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে মাদরাসার পরিচালক মুফতি মতিউর রহমান এবং তার সহকারী মুফতি সাইফুল্লাহর নামে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। তবে তারা ঘটনার পর থেকে পলাতক আছেন।
অভিযোগের বরাতে পুলিশ জানায়, মাদরাসার উর্দু ফার্সি কিতাবখানা বিভাগের ওই ছাত্র (১৫) মোবাইল দেখেছিলেন। এ কারণে মাদরাসার পরিচালক ও তার সহকারী শিক্ষার্থীকে বেধড়ক পিটুনি দেন। এতে সে গুরুতর জখম হয়।
এরপর পরিচালক একটা সাদা স্ট্যাম্পে ওই ছাত্রের স্বাক্ষর রাখেন এবং এ ঘটনা কাউকে জানালে মাদরাসা থেকে বহিষ্কারের ভয়ভীতি দেখান।
কিন্তু ওই ছাত্র গোপনে তার এক আত্মীয়ের মাধ্যমে পরিবারকে খবর দেয়। বাবা-মা এসে ওই ছাত্রকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন। তখন সবাই বিষয়টি জানতে পারেন।
একপর্যায়ে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে মাদরাসা ঘেরাও করে পরিচালকের শাস্তির দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে। তখন মতিউর রহমান এবং সাইফুল্লাহ পেছনের গেইট দিয়ে পালিয়ে যান। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। মাদরাসাটি একটি ভাড়া বাসায় পরিচালিত হচ্ছিল।
নির্যাতনের শিকার ছাত্র স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সাংবাদিকদের বলেন, “প্রায় সময়ই প্রধান শিক্ষক মতিউর রহমান ছাত্রদের সামান্য কারণে মারপিট করেন এবং সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে রাখেন।”
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এ এস এম সায়েম বলেন, “ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।”
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গোলাম ফেরদৌস বলেন, “হাসপাতালে গিয়ে নির্যাতনের শিকার শিক্ষার্থীর খোঁজ-খবর নিয়েছি। প্রশাসনের পক্ষ থেকে চিকিৎসা সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।
ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান ইউএনও।
ভুরুঙ্গামারী থানার ওসি রুহুল আমিন বলেন, নির্যাতনে জড়িতদের আটকের চেষ্টা চলছে।