মানিকগঞ্জের সবচেয়ে বড় আড়তে পেয়াঁজের দাম মণে কমেছে ৯০০ টাকা

আগে এই আড়তে প্রতিদিন ৩০ টনের মতো পেঁয়াজ কেনাবেচা হতো, যা এখন কমে দাঁড়িয়েছে ১৫-২০ টনে।

মানিকগঞ্জ প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 June 2023, 11:22 AM
Updated : 7 June 2023, 11:22 AM

আমদানির খবরে দেশের বিভিন্ন মোকাম ও পাইকারি বাজারের মতো মানিকগঞ্জের বাজারেও কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম।

হরিরামপুরে জেলার অন্যতম বড় আড়ত ঝিটকা বাজারে পেঁয়াজের দাম মণপ্রতি সর্বোচ্চ ৯০০ টাকা কমেছে।

এদিকে, দাম পড়ে যাওয়ার পর বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহও কমে গেছে।

ঝিটকা বাজারের আড়ত ঘুরে জানা যায়, আমদানির ঘোষণার পরের দিনই বাজারের সবচেয়ে ভালো পেঁয়াজ প্রতি মণ ৩ হাজার ৬০০ টাকা থেকে কমে ২ হাজার ৭০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত রোববার পাইকারি পেঁয়াজের দাম ওঠে ৩ হাজার ৪৫০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা। তবে মঙ্গলবার পেঁয়াজ বিক্রি হয় আড়াই হাজার থেকে ২ হাজার ৭০০ টাকায়।

আড়তদাররা বলছেন, আগে এই আড়তে প্রতিদিন ৩০ টনের মতো পেঁয়াজ কেনাবেচা হতো। তবে এবার উৎপাদন কম হওয়ায় কৃষকরাও আগের মতো পেঁয়াজ নিয়ে বাজারে আসেন না। ফলে এখন প্রতিদিন ১৫-২০ টন পেঁয়াজ কেনা হয়। আমদানির ঘোষণার পর থেকে কৃষকের পেঁয়াজ বিক্রির পরিমাণ আরো কমেছে।

উপজেলার বাল্লা ইউনিয়নের বাস্তা এলাকার পেঁয়াজ চাষি শাহজাহান ও বাদল বলেন, পেঁয়াজের ফলন এবার কম হয়েছে। আবার উৎপাদন খরচও বেশি। আমদানিকৃত পেঁয়াজের কারণে যেহেতু দাম পাওয়া যাচ্ছে না, তাই বাজারেও কম পেঁয়াজ নিচ্ছেন তারা।

গালা ইউনিয়নের গাঙ ধুসরিয়া এলাকার পেঁয়াজ চাষি আলাল খাঁও এ বছর কম উৎপাদনের কথা বললেন।

তিনি জানান, এ এলাকায় কোনো কোনো জমিতে গত বছরের তুলনায় পেঁয়াজের ফলন অর্ধেক হয়েছে। প্রতি মণ পেঁয়াজ উৎপাদনে ২ হাজার ২০০ থেকে ২ হাজার ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। শুরুতেই যদি লোকসানে বিক্রি করেন তাহলে কীভাবে চলবে, প্রশ্ন রাখেন তিনি।

৬০ শতাংশ জমিতে পেঁয়াজ রোপন করে আশা অনুযায়ী ফলন পাননি বলে জানালেন গোপীনাথপুর ইউনিয়নের চাষি ফারুক মল্লিক।

ঝিটকা বাজারের পেঁয়াজের আড়তদার মোল্লা অ্যান্ড সন্সের রাজ্জাক আলী বলেন, “বাইরের মোকামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের পেঁয়াজ কিনতে হয়। দামের ব্যাপারে আমাদের কোনো হাত নেই। তবে লোকসান হয় গুনতে হয় ঠিকই। গত রোববার ৮০ বস্তা পেঁয়াজ কিনে এখন আমার দেড় লাখ টাকা লোকসান হয়েছে। সোমবার এ কারণে আর পেঁয়াজ কিনি নাই।”

আড়ত ব্যবসার পাশাপাশি নিজে চার বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছিলেন জানিয়ে তিনি বলেন, সেইসব পেঁয়াজ উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে মাত্র ১ হাজার ৫৮০ টাকা মণ দরে বিক্রি করেছেন।

এ বছর বৃষ্টি কম হওয়ায় পেঁয়াজ উৎপাাদন কম হয়েছে বলে জানালেন হরিরামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গাফফার।

তিনি জানান, এ বছর হরিরামপুর উপজেলায় ২ হাজার ৮৩০ হেক্টর জমিতে মোট উৎপাদন হয়েছে ৫৯ হাজার ১১৭ দশমিক ৪ মেট্রিক টন পেঁয়াজ।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মানিকগঞ্জ জেলার উপপরিচালক আবু মো. এনায়েত উল্লাহ জানান, মানিকগঞ্জে মোট ৭ হাজার হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ করা হয়েছে। জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ চাষ হয়েছে হরিরামপুর, শিবালয় ও ঘিওর উপজেলায়।