এসআই খোরশেদ বলেন, “সেখানে গিয়ে দেখি চারজন এক সঙ্গে নদীর পাশ থেকে চেলোপাড়া চাষিবাজারে হেঁটে উঠছেন।”
Published : 26 Jun 2024, 04:48 PM
বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ ফুটো করে পালিয়ে যাওয়া চার ফাঁসির আসামি বাইরে গিয়ে খুব বেশি সময় মুক্ত থাকতে পারেননি। পুলিশ মাত্র ১৫ মিনিটের মধ্যেই তাদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
বুধবার ভোর রাতে খবর পাওয়ার পর পরই জেলা পুলিশের সদস্যরা আসামিদের গ্রেপ্তার করতে তৎপরতা শুরু করেন। রাতের পালায় যারা দায়িত্বে ছিলেন তাদেরসহ অন্যদেরও নামানো হয় অভিযানে।
এদিন রাতের পালায় দায়িত্ব পালন করছিলেন বগুড়া সদর ফাঁড়ির এসআই খোরশেদ আলম। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে অভিযান চালিয়ে তার দল চারজনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
পুলিশ জানায়, বুধবার ভোররাত ৩টা ৫৫ মিনিটে কারাগারের জাফলং ভবনের কনডেম সেলের চার আসামি পালিয়ে কারাগার থেকে পালিয়ে গেলেও মাত্র ১৫ মিনিটের মাথায় পুলিশ তাদের আটক করতে সক্ষম হয়।
এই চার আসামি হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী থানার আজিজুল হকের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম মঞ্জুর (৬০), বগুড়া জেলার সদর থানার মো. ইসমাইল শেখের ছেলে মো. ফরিদ শেখ (২৮), কাহালু থানার মো. আব্দুল মান্নানের ছেলে মো. জাকারিয়া (৩১) ও নরসিংদী জেলার মাধবদী থানার ইসরাফিল খার ছেলে আমির হামজা (৩৮) ।
পুলিশ ও জেলা প্রশাসন জানায়, কারাগারের ওই ভবনটি খুবই পুরনো। ভবনের ছাদে কোনো রড নেই; এটি চুন ও সুরকি দিয়ে তৈরি। আসামিরা এক মাস ধরে বালতির হাতল দিয়ে ছাদ ফুটো করেন। কারাগারের প্রাচীর টপকে পালিয়ে যাওয়ার জন্য তারা নিজেদের গামছা, চাদর ও পুরনো কাপড় জোড়া দিয়ে রশি তৈরি করেন।
আসামিদের গ্রেপ্তারে বগুড়া পুলিশের যে কটি দল কাজ শুরু করে তাদের একটি নেতৃত্বে ছিলেন এসআই খোরশেদ আলম।
তিনি দুপুরে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “চার আসামি পালানোর পরই পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী স্যার বিষয়টি ডিউটিরত সব টিম, সদরের ওসি, ডিবিকে জানান গ্রেপ্তার অভিযানে নামতে। তাদের সঙ্গে অতিরিক্ত টিম নামানোরও নির্দেশ দেন পুলিশ সুপার। ওই নির্দেশনা পেয়ে আমার ফোর্স নিয়ে আসামিদের খুঁজতে থাকি।
“সাধারণভাবে চিন্তা করে দেখলাম, পালিয়ে যাওয়া আসামিরা কখনও সদর সড়ক ব্যবহার করবে না। জেলখানা যেহেতু করতোয়া নদীর ধারে এবং এখন করতোয়া নদীও খনন হয়েছে। তাই নদীর দুই পাড় দিয়ে যাতায়াতের একটা সুযোগ হয়েছে। আসামিরা নদীর নিচু পাড় ব্যাবহার করতে পারে।
এসআই খোরশেদ আলম বলেন, “আমি ও আমার ফোর্স নির্দেশ পাওয়ার পর জেলখানা থেকে প্রায় এক কিলোমিটার উত্তরে ফতেহ আলী বাজারের পাশে করতোয়া নদীর ধারে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি চারজন এক সঙ্গে নদীর পাশ থেকে চেলোপাড়া চাষিবাজারে হেঁটে উঠছেন।
“তখনই আমার সন্দেহ হয়। কারণ, আমাদের জানানো হয়েছে চারজন পালিয়েছে। এরাও তো চারজন। তখন আমি ও টিমের অন্যরা দ্রুত সেখানে গিয়ে তাদের ঘিরে ফেলি। তাদেরকে নানা প্রশ্ন করি কিন্তু তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
এসআই বলেন, “তখন তাদের দেহ তল্লাশি করে জেলখানার একটি কাগজ পাই। এতে আমরা নিশ্চিত হই এরাই সেই আসামি, যারা জেল থেকে পালিয়েছে। তখন বিষয়টি আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাই এবং তাদের সবাইকে থানায় নিয়ে আসি।”
কারাগার থেকে পালানো জাকারিয়া কাহালুর মেয়রের ছেলে
বগুড়া কারাগার: বালতির হাতল দিয়ে এক মাস ধরে ছাদ ফুটো করেন চার আসামি
বগুড়া জেলা কারাগারের ছাদ ফুটো করে ৪ ফাঁসির আসামির চম্পট, পরে ধরা