সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে আলাদা মন্ত্রণালয়সহ আট দফা দাবি তুলেছেন নেতারা।
Published : 12 Aug 2024, 12:48 AM
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সারা দেশে সহিংসতা, মন্দির ভাঙচুর ও হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে।
এসব ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে রোববার দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ এবং পূজা উদযাপন পরিষদসহ সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
কর্মসূচিতে দাবি-দাওয়া সম্বলিত ব্যানার-ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড নিয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থী-অভিভাবকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
সমাবেশ থেকে হিন্দুদের ওপর নির্যাতন বন্ধে তাদের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয়সহ আট দফা দাবি জানিয়েছেন নেতারা।
৮ দফা দাবি হলো
১. সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচারের জন্য দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনাল গঠন করে দোষীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে উপযুক্ত শাস্তি, ক্ষতিগ্রস্তদের যথোপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে।
২. অনতিবিলম্বে ‘সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন’ প্রণয়ন করতে হবে।
৩. ‘সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রণালয়’ গঠন করতে হবে।
৪. হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকে হিন্দু ফাউন্ডেশনে উন্নীত করার পাশাপাশি বৌদ্ধ ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টকেও ফাউন্ডেশনে উন্নীত করতে হবে।
৫. ‘দেবোত্তর সম্পত্তি পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ আইন’ প্রণয়ন এবং ‘অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ আইন’ যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে।
৬. প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যালঘুদের জন্য উপাসনালয় নির্মাণ এবং প্রতিটি হোস্টেলে প্রার্থনাকক্ষ বরাদ্দ করতে হবে।
৭. ‘সংস্কৃত ও পালি শিক্ষা বোর্ড’ আধুনিকায়ন করতে হবে।
৮. শারদীয় দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি দিতে হবে।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
গাইবান্ধা
গাইবান্ধা নাট্য ও সাংস্কৃতিক সংস্থার সামনে মানববন্ধন মানিক বর্মন, সৌমিক বক্সী, পূজা মহন্ত, শুভ্র দেব এবং সুব্রত দাশ বক্তব্য দেন।
সারাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর অত্যাচার, মন্দির ভাঙচুর, বাড়িঘরে হামলা, অগ্নিসংযোগ, লুটপাটসহ নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত সকল দুষ্কৃতকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি, আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং সামগ্রিকভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানান বক্তারা।
চুয়াডাঙ্গা
চুয়াডাঙ্গা বাজারপাড়া পূজা মণ্ডপ থেকে বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে শহীদ হাসান চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
সেখানে সনাতন ধর্মীয় নেতা দেবেন্দ্রলাল দোবে, কিশোর কুমার আগরওয়ালা এবং জয়ন্ত কুমার সিংহরা বক্তব্য দেন।
তারা জানান, সকল ধর্মের মানুষদের সঙ্গে মিলে মিশে তারা এ দেশে বসবাস করতে চান। সাম্প্রদায়িক সহিংসতা তারা চান না। যারা এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
বক্তাদের অভিযোগ, অতীতেও এমন সম্প্রদায়িত সহিংসতার নজির আছে। সংখ্যালঘুদের বিভিন্নভাবে দমন করার চেষ্টা করে একটি পক্ষ। কোনো নির্দিষ্ট ধর্মের মানুষের জন্য বাংলাদেশ নয়। সব ধর্মের মানুষের দেশ বাংলাদেশ। এখানে সাম্প্রদায়িক কোনো সহিংসতা না হলে, তা হবে সকলের জন্য মঙ্গল।
কুড়িগ্রাম
বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও সচেতন হিন্দু সমাজের ব্যানারে কুড়িগ্রাম শহরের শাপলা চত্বরে সমাবেশ ও মানববন্ধন হয়েছে। এতে জেলার কয়েক হাজার হিন্দু ধর্মাবলম্বী অংশ নেন।
সমাবেশ শুরুর আগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহর প্রদক্ষিণ করে কুড়িগ্রাম কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে মিলিত হয়।
এ সময় কুড়িগ্রাম জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি রবি বোস, সাধারণ সম্পাদক দুলাল চন্দ্র, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ছানালাল বকসী, সাধারণ সম্পাদক অলক সরকার এবং সাংবাদিক শ্যামল ভৌমিক বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে উলিপুর উপজেলায় বৃষ্টিতে ভিজে মানববন্ধন করেছেন সনাতন সম্প্রদায়ের পাঁচ শতাধিক মানুষ। দুপুরে পৌর শহরের গবার মোড়ে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোট ও পূজা উপযাপন পরিষদের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক উৎপল রায়, উপজেলা হিন্দু মহাজোটের সভাপতি গণেশ দত্ত, সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার সাহা এবং উপজেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক মেয়র হায়দার আলী মিঞা বক্তব্য দেন।
লালমনিরহাট
লালমনিরহাটের মিশনমোড় গোল চত্বরে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
সমাবেশে জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি হিরা লাল রায়, সম্পাদক প্রদীপ চন্দ্র, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের নেতা বিধুভূষণ রায়, ইসকন সভাপতিসহ হিন্দু মহাজোটের নেতাকর্মীরা বক্তব্য দেন।
সমাবেশ থেকে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থেকে দুষ্কৃতকারীদের প্রতিহত করার আহ্বান জানান নেতারা।
পরে লালমনিরহাট পৌর মেয়র রেজাউল করিম স্বপন ও বিএনপি নেতা এ কে এম মমিনুল হক সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য দেন।
এর আগে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে মিশনমোড়ে জড়ো হতে থাকেন। একসময় মিশনমোড় এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে পড়ে। এ সময় লালমনিরহাট-রংপুর মহাসড়কে কয়েকশ যানবাহক আটকা পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশ চলে।
পরে তারা মিছিল নিয়ে গোশালা বাজার মন্দির অভিমুখে রওয়ানা করেন। মিছিলটি শহরের নর্থ বেঙ্গল মোড় এলাকায় পৌঁছালে একটি ভবনের ছাদ থেকে মিছিলে ঢিল ছোড়ে দুর্বৃত্তরা। এতে তিনজন আহত হয়। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে সেই ভবনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। খবর পেয়ে সেনা সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
মাদারীপুর
মাদারীপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনে জেলা ও উপজেলার হিন্দু সম্প্রদায়ের কয়েকশ মানুষ অংশ নেয়।
সমাবেশে মাদারীপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রাণতোষ মণ্ডল বলেন, “স্বাধীন দেশে প্রায়ই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। অথচ জন্মগতভাবে এসব সংখ্যালঘু সবাই বাঙালি।
“কিন্তু স্বাধীনভাবে চলাচল ও বসবাস করতে চাওয়া হলেও এখন নিরাপত্তাহীনতায় আমরা। যারা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলার ঘটনায় জড়িত, তাদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।”
নেত্রকোণা
নেত্রকোণা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন, মন্দির ও আশ্রমের লোকজন ছাড়াও সনাতন ধর্মের শত শত নারী-পুরুষ অংশ নেন।
সমাবেশে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জ্ঞানেশ সরকার, সম্পাদক লিটন পণ্ডিত, জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য, সাধারণ সম্পাদক সুব্রত রায় মানিক এবং জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের প্রধান উপদেষ্টা নির্মল সেন বক্তব্য দেন।
সিতাংশু বিকাশ আচার্য্য বলেন, দেশে সরকার পরিবর্তন হলেই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নিপীড়ন নেমে আসে। এবারও দেশজুড়ে হিন্দুদের টার্গেট করে হামলা চালিয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি করা হচ্ছে। এসব ঘটনা নিরবে আর মেনে নেবে না হিন্দুরা।
অবিলম্বে সংখ্যালঘুদের ওপর চালানো নির্যাতন বন্ধসহ প্রত্যেকটি নির্যাতন ও হেনস্তার দৃষ্টান্তমূলক বিচার করতে হবে; অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
পাবনা
পাবনায় সকালে একটি বিক্ষোভ মিছিল শ্রী শ্রী জয় কালীবাড়ি মন্দিরের সামনে থেকে বের হয়ে শহরের আব্দুল হামিদ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রভাষ ভদ্র, হিন্দু মহাজোটের সভাপতি আশিস বসাক, সুস্মিতা ঘোষ এবং থানা পূজা উদযাপনের নেতা দীপংকর জিতুসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।
পটুয়াখালী
পটুয়াখালী পিডিএসএ মাঠ থেকে জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের আয়োজনে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে শহীদ মিনার চত্বরে গিয়ে মানববন্ধনে মিলিত হয়।
এ সময় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি অতুল চন্দ্র দাস, সাধারণ সম্পাদক উত্তম কুমার দাস, পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন ব্যানার্জী এবং সাধারণ সম্পাদক সঞ্জয় খাসকেল বক্তব্য দেন।
মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। পরে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক নূর কুতুবুল আলমের কাছে আট দফা সম্বলিত স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এ সময় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর কাজল বরণ দাস, ক্রীড়াবিদ ও হিন্দু নেতা বাদল হালদারসহ হিন্দু নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
সিলেট
দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে সিলেটে রোববার বিকালে সম্মিলিত সনাতনী ছাত্র সমাজের উদ্যোগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে সারা দেশে হিন্দুদের দুই শতাধিক বাড়িঘর, মন্দির ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছে।
দ্রুত এসব ঘটনার বিচারের পাশাপাশি সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কমিশন গঠনসহ আট দফা দাবি জানান তারা।
নগরীতে বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ইসকন বাংলাদেশের সহসভাপতি ও ইসকন সিলেটের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ ভক্তি অদ্বৈত নবদ্বীপ স্বামী মহারাজ বলেন, “হিন্দুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-লুটপাট চালানো হচ্ছে।
“আমরাতো এ দেশে জন্মেছি, আমরা কোথায় যাব। ক্ষমতায় যেই আসুক আমাদের নিরাপত্তা চাই। আমাদের বাসস্থান ও ধর্মীয় স্থাপনার নিরাপত্তা চাই।”
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায় বলেন, “বৈষম্যবিরোধী গণঅভ্যুত্থানে প্রধান লক্ষ্য ছিল ‘বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠা’। কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে দেখা যাচ্ছে যে, সারাদেশে সংখ্যালঘুরা নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।”
সমাবেশে সম্মিলিত সনাতনী সমাজের সদস্য গোপীনাথ দাস, রজত চক্রবর্তী, সোমা দাস এবং তুষার চক্রবর্তীসহ অনেকেই বক্তব্য দেন।
বগুড়া
বগুড়া জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের আয়োজনে শহরের সাতমাথায় বেলা ১২টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও অংশ নেয়। সমাবেশ চলার সময় সাতমাথা ও আশপাশের সড়কগুলোয় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ সময় হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের বগুড়া শাখার সভাপতি ডা. এনসি বাড়ই, সাধারণ সম্পাদক তাপস নিয়োগী, জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্মল রায়, পৌর কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার রাজ, সংগঠক ডা. সুজিত তালুকদার, সমর দাস এবং বিধান উপস্থিত ছিলেন।
ঝিনাইদহ
সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দাবিতে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলায় মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা।
রোববার সকালে উপজেলা শহরের মধুগঞ্জ বাজারে কালীগঞ্জ সনাতনী সম্প্রদায়ের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী চলা এ কর্মসূচিতে কালীগঞ্জ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি তিথি রানী ভদ্র, পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রশান্ত খা, সার্বজনীন কালীবাড়ি মন্দিরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি নিশীথ বরণ সাহা এবং সাধারণ সম্পাদক অমিলন্দন বিশ্বাস সাধন বক্তব্য দেন।
সাতক্ষীরা :
সাতক্ষীরা জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও পূজা উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্কে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি স্বপন শীল।
বক্তারা জানান, দেশে যখনই রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা দেখা দেয় তখনই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা ও নির্যাতন করা হয়। কথায় কথায় ভারতে পাঠিয়ে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের শপথ অনুষ্ঠানে গীতাপাঠ না করায় অসাম্প্রদায়িক চেতনা বিঘ্নিত হয়েছে বলে দাবি বক্তাদের।
খুলনা
দেশজুড়ে হিন্দুদের ঘরবাড়ি ও মন্দিরে হামলা এবং লুটপাটের প্রতিবাদে খুলনায় বিক্ষোভ সমাবেশ হয়েছে।
রোববার বেলা ৩টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সচেতন সনাতনী ছাত্র ও নাগরিক সমাজের ডাকা এ সমাবেশ অংশ নেয় কয়েক হাজার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
শহরের শিববাড়ী মোড় চত্বরকে কেন্দ্র করে পূর্বে জীবন বীমা ভবন, পশ্চিমে টিসিবি ভবন, দক্ষিণে হোটেল সিটি ইন মোড় পর্যন্ত ছিল লোকে লোকারণ্য। এতে কেডিএ অ্যাভিনিউ হয়ে নগরের সোনাডাঙ্গা ও নিউ মার্কেটের দিকে যাওয়ার পথে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সমাবেশে আগতরা জানান, দেশের বিভিন্ন জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। এর প্রতিবাদে তারা মাঠে নেমেছেন। এই দেশ সবার। তারা কোথাও যেতে চান না। নিজ মাতৃভূমিতে থাকতে চান।
একই দাবিতে খুলনার দাকোপ উপজেলার বাজুয়ার খুটাখালী বাজারে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।