শনিবার ৪৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল; রোববার সেই সংখ্যা কমে এসেছে ২০টিতে।
Published : 15 Sep 2024, 08:34 PM
সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে শান্ত পরিস্থিতিতে কাজে ফিরেছেন শ্রমিকরা। কয়েকটি কারখানা বন্ধ থাকলেও ধীরে ধীরে সবগুলো খুলে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
চলমান শ্রমিক অসন্তোষের মধ্যে সাভারের আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিরতা বিরাজ করছিল। এর মধ্যে দফায় দফায় বৈঠকের পরও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছিল না। কোনো কারখানায় অস্থিরতা হলে তা অনির্দিষ্টকালের জন্যে বন্ধের হুঁশিয়ারি দেয় বিজিএমইএ।
ফলে রোববার পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। এদিন দুপুর পর্যন্ত অনিদিষ্টকালের জন্য বন্ধ আছে ১৮টি কারখানা। আর দুটি কারখানায় সাধারণ ছুটি ছিল।
এদিকে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটি আশুলিয়ার কয়েকটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেছে বলে আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম জানিয়েছেন।
শুক্রবার আশুলিয়ার স্থানীয় নেতা ও মালিকদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিজিএমইএ সব পোশাক কারখানা খোলা রাখার সিদ্ধান্ত নেয়। শনিবার এই অঞ্চলে সব মিলিয়ে ৪৯টি পোশাক কারখানা বন্ধ ছিল। রোববার বন্ধ কারখানার সংখ্যা কমে এসেছে ২০টিতে। এ ছাড়া এদিন কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
সকাল ৮টা থেকে কারখানার শ্রমিকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করেই কর্মস্থলে যোগ দিয়ে উৎপাদন শুরু করে।
শিল্পাঞ্চলে যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে কারখানাগুলোর সামনে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এ ছাড়া যৌথবাহিনীর টহলও অব্যাহত রয়েছে।
শিল্প পুলিশ জানায়, কাজ শুরুর প্রথম ঘণ্টায় চার-পাঁচটি কারখানায় শ্রমিকরা ভেতরে মালিকপক্ষের সঙ্গে দাবি নিয়ে আলোচনা করতে কাজ বন্ধ রাখে। পরবর্তীতে এসব কারখানার শ্রমিকরাও কাজ শুরু করেছেন।
শ্রম আইনের ১৩ (১) ধারায় বন্ধ থাকা কারখানাগুলোর মধ্যে রয়েছে জেনারেশন নেক্সট, সান সোয়েটার, মাসকট ফ্যাশন, পার্ল গার্মেন্টস, মনগো টেক্স, মারমা কম্পোজিট লিমিটেড, জিনজিয়া ব্যাগ অ্যান্ড ক্যাপস লিমিটেড।
আশুলিয়া শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম বলেন, নতুন করে কোনো কারখানা বন্ধ হয়নি। আগের বন্ধ কারখানা থেকেই বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ এর ১৩ (১) ধারায় ১৮টি কারখানা অনিদির্ষ্টকালের জন্য বন্ধ এবং দুটি কারখানায় সাধারণ ছুটি রয়েছে। এর বাইরে শিল্পাঞ্চলের সব কারখানায় উৎপাদন স্বাভাবিক রয়েছে।
এ ছাড়া শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তায় সতর্ক অবস্থানে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। যৌথ বাহিনীর টহল কার্যক্রমও অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে চলমান শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনের পরিপ্রেক্ষিতে শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যরা আশুলিয়ার কয়েকটি পোশাক কারখানা পরিদর্শন করেন। সকালে প্রথমে তারা নিশ্চিতপুর এলাকার অনন্ত গ্রুপ ও পরে হা-মীম গ্রুপে প্রবেশ করেন। ১১ সদস্যের কমিটির সদস্যরা কথা বলেন শ্রমিক-মালিকসহ পোশাক খাতে জড়িত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে।
পর্যবেক্ষণ কমিটির নেতৃত্বে থাকা শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সবুর হোসেন বলেন, “আশা করছি, আজ থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হবে। সব কারখানা ধীরে ধীরে খোলে দেওয়া হবে।”
তিনি বলেন, “কোনো দাবিতে সড়ক অবরোধ কিংবা কাজ বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। সব অভিযোগ শুনতেই সরেজমিনে এসেছি। প্রয়োজনে হটলাইনেও জানাতে পারবেন অভিযোগ। শ্রম সংক্রান্ত অভিযোগ পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্যরা মালিক শ্রমিক উভয় পক্ষেরই অভিযোগ শুনে সরকারকে অবহিত করবেন। যেসব দাবি পূরণ করা যায় তা দ্রুত বাস্তবায়ন করা হবে।”