বরিশালে ‘পরিকল্পিত আগুনে’ পুড়ে দোকানির মৃত্যু

পুলিশ বলছে, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানোর অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বরিশাল প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 May 2023, 11:17 AM
Updated : 8 May 2023, 11:17 AM

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলায় আগুনে পুড়ে এক দোকানির মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আগুনে ছয়টি দোকান পুড়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্তরা বলছেন, প্রতিহিংসা পরায়ন হয়ে আগুন লাগানো হয়েছে।

সোমবার ভোরে উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের চামটা নতুন বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে ফায়ার সার্ভিস জানায়।  

নিহত সাগর পাল (২৮) নিয়ামতি ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড ঢালমারা এলাকার বেরলাল পাল বলাইয়ের ছেলে।

এতে দোকানীর মৃত্যু ছাড়াও প্রায় অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতির দাবি করা হচ্ছে।

পুলিশ বলছে, পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানোর অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

বাকেরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আব্দুল কুদ্দুস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ওই বাজারে এক সারিতে কাঠ ও টিন দিয়ে তৈরি মুদির দোকান, ফার্মেসি, ইলেকট্রনিক্স ও ফলের দোকান ছিল। রাত তিনটার দিকে সাগর পালের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। সাগর দোকানেই ঘুমিয়ে ছিলেন। মুহূর্তে আশে-পাশের অপর ছয়টি দোকানেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয়রা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার আগেই সাগর পুড়ে মারা যান ও সাতটি দোকান মালামালসহ পুড়ে যায়।

সাগরের মুদি দোকান ছাড়াও শংকর চন্দ্র পালের বাসুদেব ইলেকট্রনিক্স, আরিফুর রহমানের মুন্সীর ফার্মেসি, আলমগীরের ফলের দোকান, মো. ইউনুসের মুদি দোকান ইউনুস স্টোর, সামসু ফকিরের মুদির দোকান ও নওরোজ আলমের অফিস কক্ষ পুড়ে।

মুন্সী ফার্মেসির আরিফুর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাজারে সাগর পালের দোকান ভালো চলে। এ নিয়ে তার সাথে কয়েকজনের শত্রুতা ছিল। তারাই সাগরের দোকানে বাইরে থেকে তালা দিয়ে আগুন দেয়।”   

আরিফের দাবি, অগ্নিকাণ্ডের সময় সাগর চিৎকার করলেও বাহির থেকে দোকান তালাবন্ধ থাকায় তাকে রক্ষা করা যায়নি।

ক্ষতিগ্রস্ত দোকানী শংকর পাল জানান, সাগর তার ভাইয়ের ছেলে। সাগরের দোকানের পাশে তার ইলেকট্রনিক্স দোকান ছিল।

শংকর পালের অভিযোগ, সাগরের দোকানে বেশি বেচা-বিক্রি হতো। ওই দোকানে এর আগে দুবার চুরি হয়। তাই দোকানে ঘুমাতো সাগর।

কারা আগুন দিয়েছে, এমন প্রশ্নে নাম বলতে অস্বীকৃতি জানিয়ে শংকর পাল বলেন, বাইর থেকে আটকে দোকানের পেছনে পেট্রোল ঢেলে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে তাদের দোকানও পুড়েছে।

শংকর আরও বলেন, সাগরের বড় ভাই মানসিক প্রতিবন্ধী। তার এক বোন ছিল, ছোট বয়সে মারা গেছে। এ ঘটনার পর সাগরের বাবা অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন।  

ব্যবসায়ীদের অভিযোগ বিষয়ে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আব্দুল কুদ্দুস বলেন, “শুনেছি, চুরি করতে না পেরে আগুন দিয়েছে। সাগরের দোকান সম্পূর্ণ পুড়ে যাওয়ায় বাইর থেকে তালা দেওয়া ছিল কিনা তা বোঝা যায়নি। তাছাড়া ঘটনা রাতের; কেউ দেখেওনি।

“কী ঘটেছে বলতে পারবো না। তবে বৈদ্যুতিক শট সার্কিটের কারণে অগ্নিকাণ্ডের ধারণা করা হচ্ছে। লাশ উদ্ধার করে পুলিশের কাছে দেওয়া হয়েছে।

বাকেরগঞ্জ থানার ওসি এসএম মাকসুদুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। কেউ অভিযোগ করেনি; তবে এ ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।