শাহপরীর দ্বীপ ঘোলারচর সমুদ্র সৈকত এলাকার সাগরে ছাড়া হয় কাছিম ছানাগুলো।
Published : 14 Apr 2025, 05:06 PM
কক্সবাজারের টেকনাফে সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন হ্যাচারিতে জন্ম নেওয়া আরো ৫২১টি কাছিমছানা সাগরে লোনাজলে অবমুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার সকাল ১০টার দিকে টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ঘোলারচর সমুদ্র সৈকত এলাকার সাগরে ছাড়া হয়েছে এসব কাছিম ছানা।
নেচার কনজারভেশন ম্যানেজমেন্টের (নেকম) প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও জলবায়ু পরিবর্তন ব্যবস্থাপক আবদুল কাইয়ুম বলেন, “ওই সমুদ্র সৈকত সংলগ্ন এলাকা থেকে এবার কাছিমের ৮ হাজার ৫০০টি ডিম সংগ্রহ করা হয়। এসব ডিম থেকে জন্ম নেওয়া সাড়ে পাঁচ হাজার কাছিমছানা এরই মধ্যে কয়েক ধাপে সাগরে অবমুক্ত করা হয়েছে।
“সোমবার সকালে সাগরে অবমুক্ত করা কাছিম ছানাগুলো মাঝেরপাড়া এলাকার একটি হ্যাচারিতে ফোটানো হয়। এরপর সাগরের লোনাপানিতে ছাড়া হয়েছে।”
টেকনাফসহ পুরো জেলার ১২টি পয়েন্ট থেকে এ বছর ২৫ হাজার ৭০০টি কাছিমের ডিম সংগ্রহ করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
শাহ পরীর দ্বীপের মাঝের পাড়ার বাসিন্দা মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, “এটি খুব ভালো উদ্যোগ। কয়েক বছর আগেও শাহপরীর দ্বীপে সমুদ্র সৈকতে বালিতে মা কাছিম ডিম দিয়ে সাগরে চলে যেত। পরে ডিমগুলো কুকুর খেয়ে ফেলত ও পশুপাখি নষ্ট করে ফেলত। এই জন্য পরিবেশ খুব ক্ষতি হত। এখন সমুদ্র সৈকত থেকে ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারিতে রেখে বাচ্চা ফুটিয়ে সাগরের অবমুক্ত করা হয়।”
সংশিষ্টরা বলেন, সমুদ্রের ময়লা-আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার এবং মাছের পোনা খাদক জেলিফিশ খেয়ে সমুদ্রের জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য বজায় রাখতে অনন্য ভূমিকা পালন করে কাছিম।
আবদুল কাইয়ুম বলেন, “সংগ্রহ করা ডিমের ৮৫ শতাংশ থেকে বাচ্চা ফুটেছে। সোমবার সকালে নেকমের দুজন কর্মী আলীর জোহার ও মো. ফয়সাল মিলে বড় দুটি প্লাস্টিকের গামলা ও বালতি থেকে সমুদ্রসৈকতে ছেড়ে দিলে এক একটি করে সাগরে নেমে গেছে।”
বন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের দিকনির্দেশনায় নেকম ২০ বছর ধরে কাছিম সংরক্ষণে কাজ করে আসছে বলে জানান তিনি।
সম্প্রতি নেকমের একটি জরিপে দেখা গেছে, মাত্র ৩৪টি স্পটে সামুদ্রিক কাছিম ডিম পাড়তে আসছে, যা এক দশক আগেও ছিল ৫২টি। এ থেকে ধারণা করা হয়, সামুদ্রিক কাছিমের ডিমপাড়ার স্থানগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।