“আমরা তিন প্রার্থী এক হয়েছি, আমরা বসে সিদ্ধান্ত নিয়ে একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব”, বলেন গৌরনদী উপজেলা চেয়ারম্যান।
Published : 02 May 2024, 08:56 PM
বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ঘোষণা দিয়েও মনোনয়নপত্র জমা দেননি সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ। তিনি বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর ছেলে।
বরিশাল জেলা জ্যেষ্ঠ নির্বাচন কর্মকর্তা ওহিদুজ্জামান মুন্সী সাংবাদিকদের বলেন, তৃতীয় দফায় ২৯ মে নির্বাচনের জন্য বৃহস্পতিবার শেষ দিনে এ উপজেলায় চেয়ারম্যান পদে দুজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
তারা হলেন- উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত এবং বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রি।
এ ছাড়া ভাইস চেয়ারম্যান পদে রফিকুল ইসলাম তালুকদার, মো. জসীম উদ্দিন সরদার, ফরহাদ তালুকদার, সবুজ আকন, সাহাবুদ্দিন মোল্লা ও সঞ্জয় বাড়ৈ এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে মলিনা রানী রায়, হাফিজা ইয়াসমিন, পবিত্র রানী রায়, মনিকা সরকার ও রিপা বেগম মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
৫ মে মনোনয়নপত্র বাছাই এবং প্রত্যাহারের শেষ দিন ১২ মে। আগামী ১৩ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের একজন নেতা জানান, গত রমজানে বরিশাল-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর আগৈলঝাড়ার সেরাল বাসভবনে দুই উপজেলার (আগৈলঝাড়া ও গৌরনদী) আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে এক সভা হয়। ওই সভায় গৌরনদীতে আওয়ামী লীগের একমাত্র প্রার্থী হিসেবে পৌর মেয়র হারিছুর রহমানকে এবং আগৈলঝাড়ায় সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহর নাম ঘোষণা করা হয়।
রদল থেকে কোনো প্রার্থী না দেওয়ার দলীয় সিদ্ধান্তের পরও দুই প্রার্থী চূড়ান্ত করায় দুই উপজেলায় নির্বাচনি আমেজে ভাটা পড়ে। নির্বাচনের জন্য প্রচার চালিয়েও অনেকে বসে যান। নির্বাচনি প্রচার থেকে নিজেদের গুটিয়ে নেন।
এমপি-মন্ত্রীর সন্তান, স্বজন বা নিকটাত্মীয়রা ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না- আওয়ামী লীগ থেকে বার বার এমন ঘোষণা দেওয়ার পর দুই উপজেলায় দলের নেতারা আবার সক্রিয় হতে শুরু করেন। এর মধ্যে বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ ভোটের মাঠ থেকে দূরেই রইলেন।
যাচাই-বাছাইয়ে মনোনয়নপত্র বৈধ হলে আগৈলঝাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক দুই সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে লড়াই হবে বলে ধারণা করছেন ভোটাররা।
বর্তমান চেয়ারম্যান আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাত বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর আপন চাচাত ভাই। আশিক আব্দুল্লাহ প্রার্থিতার ঘোষণা দেওয়ার পর তিনিও আর ভোটে না থাকার কথা বলেছিলেন।
আগৈলঝাড়া উপজেলায় প্রার্থী হচ্ছেন আশিক আব্দুল্লাহ
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলছিলেন, “আওয়ামী লীগের দলীয় ঘোষণা এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশের প্রতি সম্মান দেখিয়েই সেরনিয়াবাত আশিক আব্দুল্লাহ প্রার্থী হননি। তিনি প্রার্থী হবেন এটা ভেবে আমি ভোটে না থাকার কথা বলেছিলাম। এখন আশিক যেহেতু নির্বাচন করছেন না তাই আমি মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছি।”
আব্দুর রইচ সেরনিয়াবাতের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী যতীন্দ্র নাথ মিস্ত্রি উপজেলার বাকাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গৌরনদীতে একজনকে ঠেকাতে তিনজনের ‘ঐক্য’
অপরদিকে গৌরনদী উপজেলায় ১০ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। এর মধ্যে চেয়ারম্যান পদে চারজন এবং সাধারণ ভাইস চেয়ারম্যান ও সংরক্ষিত মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে তিনজন করে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- বর্তমান চেয়ারম্যান সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. হাবিবুর রহমান, তার ভাই গৌরনদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক পৌর মেয়র হারিছুর রহমান এবং পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মনির হোসেন মিয়া।
ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান ফরহাদ মুন্সী, জামাল হোসেন গোমস্তা ও কাজী মোস্তাফিজুর রহমান রনি এবং মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা হলেন- অ্যাডভোকেট সাহিদা আক্তার, শিপ্রা রাণী ও আইরিন আক্তার।
গৌরনদী উপজেলায় মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া সৈয়দা মনিরুন নাহার মেরী, মো. হাবিবুর রহমান, মনির হোসেন মিয়া- এই তিন প্রার্থী একসঙ্গে গণসংযোগ করছেন। বৃহস্পতিবার দিনভর তারা উপজেলার বাটাজোর ও মাহিলাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ডে গণসংযোগ করেন।
তিন প্রার্থীর একসঙ্গে গণসংযোগ চালানোর কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে গৌরনদী বর্তমান চেয়ারম্যান মনিরুন নাহার মেরী বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা গৌরনদীকে সন্ত্রাসমুক্ত জনপদ হিসেবে দেখতে চাই। তাই আমরা তিন প্রার্থী এক হয়েছি। আমরা বসে সিদ্বান্ত নিয়ে একজন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করব।”