গণশুনানির নোটিশ পেয়েও উপস্থিত না থাকায় ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক।
সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত নগরীর টাউনহলের তারেক স্মৃতি অডিটরিয়ামে দুদকের গণশুনানি হয়। এতে ওই স্টেশনের তত্ত্বাবধায়ক এসএম নাজমুল হক খানকে উপস্থিত থাকার নোটিশ দেয় দুদকের বিভাগীয় ও জেলা সমন্বিত কার্যালয়।
কিন্তু নোটিশ পেয়েও তিনি সেখানে যাননি। যেকারণে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় বলে দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. আবুল হোসেন জানান।
এদিকে, ময়মনসিংহে অনিয়ম, দুর্নীতিসহ দায়ের হওয়ায় ৬০টি সুনির্দ্দিষ্ট অভিযোগের গণশুনানি করেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক। এতে জেলা ও বিভাগীয় প্রশাসনের সব দপ্তরের কর্মকর্তারা অংশ নেন।
শুনানিতে বিচারপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের জবাবদিহি কর্মকর্তারা উপস্থিত হলে বেশির ভাগ অভিযোগের নিস্পত্তি হয়।
এ সময় ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় কারাগার, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা, সদর সাব রেজিস্ট্রার, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রেলওয়ে, সহকারী কমিশনার (ভূমি), সোনালি ও কৃষি ব্যাংক, জেলা প্রশাসন, বিআরটিএ ও সমাজসেবা কার্যালয়ের বিরুদ্ধে উত্থাপিত বেশ কিছু অভিযোগ আগামী সাতদিনের মধ্যে নিস্পত্তির নির্দেশ দেওয়া হয়।
সেইসঙ্গে যেসব অভিযোগ ও ঘটনার সঙ্গে আদালতের আদেশ ও নির্দেশনা আছে তা খতিয়ে দেখে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে পালন করারও নির্দেশ দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত)।
এ গণশুনানির মডারেটর ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. মোস্তাফিজার রহমান।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দুদক জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের উপ পরিচালক মো. আবুল হোসেন।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন দুদক কমিশনার (তদন্ত) মো. জহুরুল হক।
তিনি বলেন, “প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। এ পাচারের সঙ্গে যারা জড়িত, সমাজে তারা ভিআইপি ও সিআইপি হিসেবে পরিচিত। এ অবস্থায় ‘দুর্নীতি প্রতিরোধের চেয়ে নিজেকে দুর্নীতি মুক্ত রাখব’ এই শ্লোগান বাস্তবায়নের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
“এ জন্য আমি চাই, ময়মনসিংহ দুর্নীতিমুক্ত মডেল জেলা হিসেবে দেশে পরিচিতি লাভ করুক।”
এ দুদক কর্মকর্তা আরও বলেন, “দেশে ২৭টি দফায় দুর্নীতি হয়। এর মধ্যে দুদক শুধু একটি দফা নিয়ে কাজ করতে পারে। বাকি ২৬টি দফা সরকারের অন্য দপ্তর নিয়ন্ত্রণ করে।”
তবে ২৭টি দফাই দদুকের কাছে হস্তান্তরের জন্য সম্প্রতি রাষ্ট্রপতির কাছে একটি প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে বলে গণশুনানিতে দুদক কমিশনার জানান।
শুনানিতে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ময়মনসিংহ রেঞ্জ (পুলিশ) ডিআইজি দেবদাস ভট্টাচার্য্য, দুদকের (প্রতিরোধ) মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার মো. মাছুম আহাম্মদ ভূঁঞা।
এর আগে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন দুদক ময়মনসিংহ বিভাগের পরিচালক ঋত্বিক সাহা।
এ সময় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি বিশিষ্ট চক্ষু চিকিৎসক হরিশংকর দাস।