প্রকৌশলী বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে থাকার সংখ্যাটি সাড়ে চার হাজার হবে না। বড়জোর পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ হতে পারে।”
Published : 14 Jan 2025, 07:31 PM
গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠার পর রাজশাহীতে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএমডিএ এর প্রধান কার্যালয়ের দুইটি দপ্তরে অভিযান চালিয়েছে দুদক।
মঙ্গলবার দুপুরে বিএমডিএ এর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান এবং ‘ভূগর্ভস্থ সেচ নালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শহীদুর রহমানের দপ্তরে এই অভিযান চালায় দুদক।
দলটির নেতৃত্ব দেন সমন্বিত রাজশাহী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন। অভিযানে ছিলেন উপ-সহকারী পরিচালক বোরহান উদ্দিন ও মাহবুবুর রহমান।
তারা জাহাঙ্গীর আলম খানের দপ্তরে বিএমডিএ এর গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র দেখেন।
দুদক জানায়, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের ১৬ জেলায় বিএমডিএর ১৬ হাজারের বেশি গভীর নলকূপ রয়েছে। আওয়ামী সরকারের পতনের পর সব অপারেটরের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এরপর নতুন অপারেটর নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়।
এসব নলকূপের অপারেটর হিসেবে নিয়োগ পেতে ২৩ হাজার ৭৫২ জন আবেদন করেন। মৌখিক পরীক্ষা গ্রহণের পর প্রায় আট হাজার জনকে নিয়োগের জন্য চূড়ান্ত করা হয়েছিল। এই তালিকা প্রকাশ হওয়ার পর বিভিন্ন স্থানে বিএনপির নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন।
রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও তানোরে বিএমডিএ এর জোন কার্যালয় ঘেরাও, এমনকি কার্যালয়ে তালা দিয়ে চাবি নিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। এর ফলে মনোনীত হওয়া হাজারো অপারেটরের নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেওয়া হয়েছে।
এখন আবার পুরনো আবেদন থেকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখতে এ অভিযান চালায় দুদক।
বিএমডিএ এর সেচ শাখার প্রধান তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাহাঙ্গীর আলম খান বলেন, “নিয়োগ প্রক্রিয়া আটকে থাকার সংখ্যাটি সাড়ে চার হাজার হবে না। বড়জোর পাঁচ থেকে ছয় শতাংশ হতে পারে। যাদের ব্যাপারে অভিযোগ এসেছে, সেগুলো আটকে আছে। দুদক এসে নথিপত্র দেখেছে। কিছু নথিপত্র চেয়েছেও। নথিপত্র সরবরাহের জন্য আমি একটু সময় নিয়েছি।”
এদিকে সেচ শাখার অভিযানের পর দুদক দল বিএমডিএ এর ‘ভূগর্ভস্থ সেচ নালা বর্ধিতকরণের মাধ্যমে সেচ এলাকার সম্প্রসারণ’ প্রকল্পের পরিচালক (পিডি) শহীদুর রহমানের দপ্তরে যান।
এই কর্মকর্তার অধীনে ১৯ কোটি টাকার পাইপলাইন স্থাপনের কাজের প্রক্রিয়া চলছে। যেখানে অনিয়ম হচ্ছে বলে সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে। এর ভিত্তিতেই দুদক দল সেখানেও অভিযান পরিচালনা করে।
শহীদুর রহমান বলেন, “যে ১৯ কোটি টাকার কাজ অর্থের বিনিময়ে দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে তা সঠিক নয়। কারণ, ওই টেন্ডার প্রক্রিয়ায় শেষই হয়নি। কোনো ঠিকাদারকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়নি।”
দুদক দলকে এ সংক্রান্ত নথিপত্র দেখিয়েছেন বলে জানান এই প্রকৌশলী।
সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন বলেন, কর্মকর্তারা তাদের সপক্ষে কাগজপত্র দেখিয়েছেন। অপারেটর নিয়োগ সংক্রান্ত কিছু নথিপত্র চাওয়া হয়েছে। এগুলো হাতে পাওয়ার পর বিশ্লেষণ করা হবে। এরপর প্রধান কার্যালয়ে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।
অপারেটর নিয়োগে ‘অনিয়ম’: নওগাঁয় বিএমডিএ কার্যালয়ে তালা দিয়ে বিক্ষোভ