যদিও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সাপাহার ও মান্দা বিএমডিএ এর সহকারী প্রকৌশলী।
Published : 05 Jan 2025, 09:02 PM
সেচকাজের নলকূপের অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এনে নওগাঁর সাপাহার উপজেলায় বিক্ষুব্ধ কৃষক ও জনতা বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের কার্যালয়ে তালা দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন।
একই অভিযোগে মান্দা উপজেলার কার্যালয়ও ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন কৃষকরা।
রোববার দুপুর ১২টায় সাপাহার উপজেলা বরেন্দ্র বহুমূখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-বিএসডিএ এর সহকারী প্রকৌশলীর কার্যালয়ে তালা লাগিয়ে কৃষক-জনতা মানববন্ধন করেন।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দা বাবুল আকতার জানান, উপজেলার ৩২৩টি গভীর নলকূপ ও ৭২টি এলএলপিসহ মোট ৩৯৫টি নলকূপের অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষা বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হয়। রাতে এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
কৃষক মো. জালাল উদ্দীন, মতিউর রহমান, কামরুজ্জামান, মোশারফ হোসেন অভিযোগ করে বলেন, অবৈধভাবে টাকার বিনিময়ে এই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারা এই নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের দাবি জানান। নাহলে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বিক্ষোভ চলাকালে বিএমডিএ কার্যালয়ে অফিস সহকারী ও আনসার সদস্য ছাড়া কোনো কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন না।
তবে অপারেটর নিয়োগে অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিএমডিএ সাপাহারের সহকারী প্রকৌশলী তরিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, “ঊর্ধ্বতন কার্যালয়ের কর্মকর্তা এবং সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এই নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। এতে কোনো ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি। যাদের নিয়োগ হয়নি তারা হয়ত এটা বলছে।”
এদিকে, বেলা ১১টার দিকে মান্দা উপজেলা বিএমডিএর কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন কৃষকরা। এ সময় সেখানে অপারেটর নিয়োগ পরীক্ষায় বঞ্চিতরাও অংশ নেন।
এ সময় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। শুধু কার্যালয় সহায়ক উপস্থিত ছিলেন।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, আবেদনের সময় প্রতিটি ফরমে এক হাজার টাকা করে নেওয়া হয়েছে। অনেক আবেদনকারী মৌখিক পরীক্ষায় অংশ না নিলেও অপারেটর পদে নিয়োগ পেয়েছেন। চাষযোগ্য জমি না থাকলেও অর্থের বিনিময়ে নিয়োগ পেয়েছেন কেউ কেউ।
বিএমডিএ কার্যালয় থেকে জানা গেছে, মান্দা উপজেলায় ৪৮৪টি গভীর নলকূপ রয়েছে। আবেদন ফরম বিক্রি হয় ৭৬৪টি। এর মধ্যে গভীর নলকূপের একক আবেদন পড়ে ২৮৯টি, ১৬৫টি এলএলপির বিপরীতে আবেদন পড়ে ৪৭৫টি। ৩০টি নলকূপের বিপরীতে কোনো আবেদন না পড়ায় সেগুলো স্থগিত রাখা হয়েছে। ১৬৫টি নলকূপে নতুন অপারেটর নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
উপজেলার বাঙালপাড়া গ্রামের কৃষক শামীম হোসেন বলেন, “গভীর নলকূপের অপারেটর নিয়োগে ব্যাপক অনিয়ম ও কারচুপি করা হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষা অংশ নেননি এমন ব্যক্তিরাও নিয়োগ পেয়েছেন টাকার বিনিময়ে। চাষযোগ্য জমি না থাকলেও অনেককেই অপরারেটর পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।”
যদিও নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মান্দা বিএমডিএ এর সহকারী প্রকৌশলী এস এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, “তথ্য সংক্রান্ত জটিলতার কারণে অনেক আবেদন বাতিল হয়েছে। মৌখিক পরীক্ষায় অংশ না নেওয়া কাউকেই নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তারা কী কারণে অফিস ঘেরাও করে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা করেছে এটি আমার জানা নেই।”