“নির্জন খুব সাহসী ছিলো। দেশের আইন অনুসারে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
Published : 24 Sep 2024, 07:53 PM
কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলায় অভিযানের সময় ‘ডাকাতের ছুরিকাঘাতে’ প্রাণ হারানো সেনাবাহিনীর লেফটেন্যান্ট তানজিম ছারোয়ার নির্জনের লাশ টাঙ্গাইলে দাফন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বাদ আসর টাঙ্গাইলের বোয়ালী মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তার লাশ স্থানীয় কবরস্থনে দাফন করা হয় বলে নির্জনের মামা আশরাফ আলী খান জানান।
সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার বিপুল সংখ্যক মানুষ জানাজায় অংশ নেন। এর আগে সোমবার রাত ৩টার দিকে চকরিয়া উপজেলার ডুলহাজরা ইউনিয়নের পূর্ব মাইজপাড়া এলাকায় ছুরিকাঘাতের নিহত হন তিনি।
এর আগে বেলা সাড়ে ৩টায় তরুণ এই সেনা কর্মকর্তার লাশ বহনকারী সেনাবাহিনীর একটি হেলিকপ্টার টাঙ্গাইল জেলা সদর হেলিপ্যাডে অবতরণ করে। সেনাবাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নির্জনের লাশ গ্রহণ করেন। নিহতের পরিবারের কয়েকজন সদস্য এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
হেলিকপ্টার থেকে লাশ নামিয়ে লাশবাহী ফ্রিজিং গাড়িতে তুলে সরাসরি নিয়ে যাওয়া হয় সদর উপজেলার করের বেতকায় তার নিজ গ্রামে। বাড়িতে লাশ পৌঁছার পর সেখানে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। স্বজনদের আহাজারিতে ভারি হয়ে ওঠে পরিবেশ।
একমাত্র ছেলেকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ বাবা-মা। ভাইকে হারিয়ে পাগলপ্রায় একমাত্র বোন সূচি। নির্জনের হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান সবাই।
নির্জনের মামা আশরাফ আলী খান বলেন, “মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৬টায় সেনাবাহিনী থেকে ফোন করে আমাদের জানানো হয় নির্জন অসুস্থ, আপনারা চট্টগ্রাম আসেন। আমরা রওনা হয়ে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর পর্যন্ত গেলে তারা আবার ফোন করে নির্জনের মৃত্যুর খবর জানান।”
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, সোমবার রাত ৩টার দিকে পূর্ব মাইজপাড়া গ্রামে ডাকাতির খবর আসে। ঘণ্টা খানেকের মধ্যে চকরিয়া আর্মি ক্যাম্পের সদস্যরা সেখানে পৌঁছায়।
অভিযানের সময় ৭-৮ সদস্যের ডাকাত দলটির কয়েকজনকে তাড়া করেন লেফটেন্যান্ট নির্জন। এ সময় ডাকাতরা নির্জনের ঘাড়ে ছুরিকাঘাত করলে প্রচুর রক্তক্ষরণ শুরু হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে মালুমঘাট মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মেধাবী এই সেনা কর্মকর্তা টাঙ্গাইল শহরের বিন্দুবাসিনী সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন। পরে পাবনা ক্যাডেট কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমি থেকে ২০২২ সালের ৮ জুন আর্মি সার্ভিস কোরে (এএসসি) কমিশন লাভ করেন।
ঘাটাইল এরিয়ার ১৯ পদাতিক ডিবিশনের জিওসি জেনারেল হুসাইন মোহাম্মদ মাসীহুর রহমান বলেন, “নির্জন খুব সাহসী ছিলো। তার এই ঘটনায় দেশের আইন অনুসারে জড়িতদের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।”
কক্সবাজারে ‘ডাকাতের ছুরিকাঘাতে’ সেনা কর্মকর্তা নিহত