“ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। মামলার সাতজন এজাহার ভুক্ত আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।”
Published : 26 Dec 2024, 04:38 PM
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের একটি পাড়ায় অগ্নিসংযোগের ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে বান্দরবানের পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গ্রেপ্তাররা হলেন- লামার সরই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ছবি ছন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা জগমন ত্রিপুরার ছেলে স্টিফেন ত্রিপুরা ও যোয়াকিম ত্রিপুরা, একই ওয়ার্ডের টংগ্যাঝিড়ি পাড়ার বাসিন্দা গোবিন্দ্র ত্রিপুরার ছেলে মশৈম্যা ত্রিপুরা ও ওমর আলীর ছেলে মো. ইব্রাহিম।
এর আগে বুধবার গভীর রাতে সরই ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওর্য়াডে নতুন পূর্ববেতছড়া ত্রিপুরা পাড়ায় এ ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন লামা থানার ওসি এনামূল হক ভূঞা।
ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল উদ্দিন বুধবার বলেন, “বড়দিন উপলক্ষে বুধবার রাতে পাশের টংগ্যাঝিরি পাড়ায় অনুষ্ঠান চলছিল। পূর্ববেতছড়া পাড়ার বাসিন্দা সবাই সে অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। তখন আগুনে বেতছড়া পাড়ার ১৯টি ঘরের মধ্যে ১৭টিই পুড়ে যায়।”
স্থানীয়রা বলছে, পাড়ার সব ঘরবাড়ি বাঁশ ও শনের তৈরি। টংগ্যাঝিরি থেকে পূর্ববেতছড়া পাড়ায় আসতে আধা ঘণ্টার মত সময় লাগে। আগুন লাগার বিষয়টি টের পেয়ে সবাই এসে দেখেন, ১৭টি ঘর পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে পুলিশ সুপার বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। ভুক্তভোগী গুঙ্গামানি ত্রিপুরার দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযান পরিচালনা করে বুধবার রাতে মামলার সাত জন এজাহার ভুক্ত আসামির মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেপ্তার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।”
এর আগে এ ধরনের ঘটনা ঘটে থাকলে যথাযথ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতিবার সকালে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিনও ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “পাড়ায় ১৯টি পরিবারের মধ্যে ১৭টি ঘর আগুনে পুড়ে গেছে।
“পুলিশ সুপার সঙ্গে আছেন, এটা তদন্ত করে দোষীদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
বুধবার রাতে লামা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) পক্ষ থেকে কম্বল কাপড়-চোপর, চাল, কিছু শুকনা খাবার সহায়তা করা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ সময় পূর্ববেতছড়া পাড়ার প্রধান (কার্বারী) পাইসাপ্রু ত্রিপুরা বলেন, “টংগ্যাঝিড়ি এলাকার নতুন পাড়া পূর্ববেতছড়া পাড়া নামে পরিচিত। পাড়াবাসীদের বেদখল হওয়া জায়গা থেকে অবৈধ দখলদার লোকজন চলে যাওয়ার পর ১৯টি ত্রিপুরা পরিবার সেখানে বসবাস করে। তারা সবাই পুরনো টংগ্যাঝিড়ি পাড়ার বাসিন্দা।
“বড়দিন উপলক্ষ্যে পূর্ববেতছড়া পাড়ার বাসিন্দারা বড়দিন উদযাপনের জন্য ঘরবাড়ি খালি রেখে মঙ্গলবারে সবাই পুরনো টংগ্যাঝিড়ি পাড়ায় যায়। কারণ পূর্ববেতছড়া পাড়ায় কোনো গীর্জা নেই। রাতে মানুষ শূন্য পাড়ায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। দুটি ঘর বাদে পাড়ার ১৭টি ঘরবাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।”
ত্রিপুরা পাড়ায় অগ্নিসংযোগ, 'তীব্র নিন্দা' প্রধান উপদেষ্টার