শেখ হাসিনার সরকারের পতনের একদিন আগে এই থানায় ওসিসহ ১৫ পুলিশ সদস্যকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
Published : 18 Aug 2024, 08:04 PM
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বিক্ষোভ মিছিল থেকে এসে ১৫ পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা, হামলা-ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ১৪ দিন পর সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার কার্যক্রম একটি ভাড়া করা ভবনে শুরু হয়েছে।
রোববার বিকালে থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত নতুন ওসি হাসিবুল্লাহ হাসিব জানান, ক্ষতিগ্রস্ত থানার দক্ষিণে কেজির মোড় এলাকায় বেসরকারি সংস্থা ‘মানবমুক্তি’র একটি ভবনের সাতটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে এনায়েতপুর থানার কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের একদিন আগে ৪ অগাস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় এই থানাটি আক্রান্ত হয়। সিরাজগঞ্জের চৌহালী ও শাহজাদপুর উপজেলার চারটি ইউনিয়ন নিয়ে এনায়েতপুর থানা গঠিত। হামলার সময় এই থানায় ৫৯ জন পুলিশ সদস্য কর্মরত ছিলেন।
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে ১৩ পুলিশকে পিটিয়ে হত্যা
রায়গঞ্জে আওয়ামী লীগের অফিসে হামলা করে ছয় জনকে হত্যা
ওসি বলেন, “রুমগুলো ব্যবহার উপযোগী এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম গোছানোর কার্যক্রম চলছে। থানায় ব্যবহারের জন্য একটি পুলিশ পিকআপ বরাদ্দ পাওয়া গেছে। নতুন-পুরাতন জনবল দিয়ে আমরা কার্যক্রম শুরুর চেষ্টা করছি। এখনও মাঠ পর্যায়ের কার্যক্রম শুরু হয়নি।”
আন্দোলনকারীরা সেদিন থানা ভবন ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেয়। এ সময় থানার ভেতরে থাকা পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত ৪০টি মোটরসাইকেল ও তিনটি পুলিশ পিকআপ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পুরো থানা ভবন।
ওইদিন আন্দোলনকারীদের মারধরে ওসিসহ ১৫ পুলিশ সদস্য এবং গুলিতে দুই শিক্ষার্থী ও এক ব্যবসায়ী মিলে ১৮ জনের মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় ১০ অগাস্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর সদস্যদের উপস্থিতিতে আন্দোলনকারীদের নিয়ে থানা অভ্যন্তরে সভা হয়। সভায় আন্দোলনকারীরা থানা পরিচালনায় সহযোগিতার আশ্বাস দেন।
সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল বলেন, এনায়েতপুর থানা নতুন করে যাত্রা শুরু করছে। তবে হামলার সময় খোয়া যাওয়া অস্ত্র, গুলি ও অন্যান্য সরঞ্জামগুলোর বিষয়ে এখনও পুরোপুরি ধারণা পাওয়া যায়নি। সেগুলোর হিসাব নিরূপণে কাজ চলছে।
সিরাজগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংঘর্ষে নিহত ৩
সিরাজগঞ্জে এমপি হেনরির বাসায় অগ্নিসংযোগ, ২ মরদেহ উদ্ধার
এনায়েতপুর থানায় হামলার দিনে উল্লাপাড়া উপজেলা এবং সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশনের থাকা দুইটি ট্রাফিক বক্স ভাঙচুর ও আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয় আন্দোলনকারীরা। কোর্ট চত্বরে পুলিশ সার্জেন্ট অফিসে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করার সময় তিনটি মোটরসাইকেল পুড়ে গেছে।
এ ছাড়া হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানায় হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট করা হয়েছিল। এসব স্থানে দায়িত্বে থাকা পুলিশ ও সার্জেন্টরা নানা সমস্যার মধ্যেও তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
আরও পড়ুন: