আট মাসের মধ্যে এই সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করার কথা। তবে নির্ধারিত সময়ের চার মাস পেরিয়ে গেলেও মাত্র ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
Published : 11 Nov 2024, 10:11 AM
দীর্ঘদিন বেহাল থাকার পর চলতি বছরের জুলাই শুরু হয়েছিল পাবনার গুরুত্বপূর্ণ টেবুনিয়া-হামকুড়িয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের সংস্কার কাজ। কিন্তু ৫ অগাস্ট থেকে তা বন্ধ হয়ে আছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার মানুষ।
স্থানীয়দের অভিযোগ আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর সংস্কার কাজের ঠিকাদার মো. আজাদ গা ঢাকা দেওয়ায় কারণেই কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে রাজধানীর যোগাযোগের এই বিকল্প মহাসড়কের কাজ বন্ধ হয়ে গেছে।
২০০৯ সালে পাবনার চাটমোহর ও নাটোরের গুরুদাসপুরের চলনবিলের বিচ্ছিন্ন দুই প্রান্তের সংযোগ স্থাপন করে ১৮ কিলোমিটারের আঞ্চলিক মহাসড়কটি নির্মাণ করা হয়। পরে সড়কটি পাবনা সদর, আটঘরিয়া, চাটমোহর, ভাঙ্গুড়াসহ কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগের বিকল্প পথ সৃষ্টি করে।
স্থানীয়রা জানান, এ পথে ঢাকা যেতে এক দেড় ঘণ্টা সময় কম লাগায় দিন দিন এর ব্যবহার বেড়েছে। এতে কৃষি ও মৎস্য সম্পদ নির্ভর অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন দেখা দেয়।
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, চাটমোহরসহ আশপাশের জেলা-উপজেলার লোকজন সড়কটি ব্যবহার করে। হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলাসহ চাটমোহরের সবগুলো ইউনিয়নের মানুষ কৃষির ওপর নির্ভরশীল। এখানকার মানুষ আঞ্চলিক মহাসড়কটি দিয়ে মাছসহ কৃষিপণ্য নিয়ে ঢাকা ও উত্তরবঙ্গে সহজে যাতায়াত করতে পারেন।
তবে দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংস্কার ও প্রশস্তকরণের অভাবে চাটমোহরের নতুন বাজার থেকে হান্ডিয়াল বাজার পর্যন্ত সড়কটি বেহাল হয়ে পড়েছিল। যাত্রী-চালকদের ভোগান্তি শুরু হয়।
সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ জানায়, চলতি বছরের জুলাই মাসে ১৬ কোটি ৪২ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২ দশমিক ৫ কিলোমিটার সড়ক মেরামতের কাজ শুরু হয়। কাজ পায় সিরাজগঞ্জের তূর্ণা কনস্ট্রাকশন।
আট মাসের মধ্যে এই সড়কের সংস্কার কাজ শেষ করার কথা। তবে নির্ধারিত সময়ের চার মাস পেরিয়ে গেলেও মাত্র ১০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সংস্কারের জন্য চাটমোহরের নতুন বাজার এলাকা থেকে কয়েক কিলোমিটার সড়কের পিচ খুলে ফেলা হয়েছে। কিন্তু পুনরায় কাজ শুরু না হওয়ায় সড়কের পুরো অংশজুড়ে শত শত গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
এতে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে সড়ক। পিচ উঠে সড়কে প্রচুর ধুলাবালি উড়ছে। এতে সড়কে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বেড়েছে।
ওই সড়কে চলাচল করা মাইক্রোবাস চালক সাহাব উদ্দিন বলেন, “আগে কোনোমতে কষ্ট করে চলাচল করলেও, সংস্কার শুরুর পর তা অসম্ভব হয়ে পড়েছে, এখন কাজ বন্ধ। কবে শুরু হবে তা কে জানে।”
ভাঙা চোরা রাস্তায় কয়েকবার তার গাড়ির চাকা নষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
ট্রাকচালক আবু হানিফ বলেন, “এ রাস্তা দিয়ে সিরাজগঞ্জ হয়ে ঢাকা যাওয়া সহজ। প্রায় ৫০ কিলোমিটার পথ কম হওয়ায় সময় ও তেল কম লাগে। এজন্য এ রাস্তাটি ব্যবহার করি। কিন্তু সড়কের যে হাল হয়েছে তাতে এ রাস্তা আর ব্যবহার করা যাবে বলে মনে হচ্ছে না।”
এ বিষয়ে জানতে তূর্ণা কনস্ট্রাকশন থেকে সরবরাহ করা ঠিকাদার মো. আজাদের মোবাইলে একাধিকবার কল করা হলেও সেটি বন্ধ পাওয়া গেছে।
তবে পাবনা সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল মনসুর আহমেদ বলেন, “ঠিকাদার মো. আজাদ পালিয়েছেন কিনা সেটা বলতে পারব না। তবে তার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। দ্রুতই কাজ শুরু করবেন বলে তিনি জানিয়েছেন। অন্যথায় আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব।”