কুড়িগ্রামে গত ২৪ ঘণ্টায় ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে, দুর্ভোগে মানুষ।
Published : 05 Oct 2024, 07:19 PM
কুড়িগ্রামে দুই দিনের টানা বৃষ্টিতে নদ-নদীর পানি বেড়ে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শনিবার কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রামে ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় কুড়িগ্রাম শহরের বিভিন্ন রাস্তা ও অফিস চত্বরে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
এ সমস্ত রাস্তা দিয়ে হাঁটু পানি ভেঙে চলাচল করছেন মানুষ।
শহরের অনেক দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাইরে বের হচ্ছেন না।
এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া ও দিনমজুর শ্রেণির মানুষ।
কুড়িগ্রাম পৌর শহরের রিকশাচালক আপেল বলেন, শুক্রবার বিকাল থেকে প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে। শনিবার সকাল থেকে তিনি রিকশা নিয়ে বসে আছেন; রাস্তায় কোনো মানুষের দেখা নেই।
কুড়িগ্রামের রাজারহাট আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ১৫৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। বৃষ্টি আগামী ৯ অক্টোবর পর্যন্ত থেমে থেমে অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসান বলেন, টানা বৃষ্টিপাতের কারণে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে।
ধরলা, দুধকুমার ও ব্রহ্মপুত্রের পানি ধীরগতিতে বাড়লেও তিস্তার পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি অবস্থান করছে।
ভারি বৃষ্টির কারণে কুড়িগ্রাম শহরের ডিসির কার্যালয় চত্বর, ফায়ার সার্ভিস চত্বর, টাপু ভেলাকোপা, চর হরিকেশ, হাটিরপাড়, তালতলা ও রৌমারীপাড়াসহ কয়েকটি এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হতে দেখা গেছে।
কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী জিঞ্জিরাম নদীর পানি দুই কূল ছাপিয়ে রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলার ১০টি গ্রামের নিচু এলাকার আমন ও বাদাম ক্ষেত তলিয়ে গেছে।
এর মধ্যে রৌমারী উপজেলার চর লাঠিয়াল, চান্দারচর, ভন্দুরচর, বড়াইবাড়ী এবং রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারি, শিবেরডাঙি ও নয়ারচর রয়েছে।
গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে তিস্তা ও ধরলার নিচু এলাকায় প্রায় ৫০০ হেক্টর জমির আমন ক্ষেত তলিয়ে থাকায় ফসল নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার মদাজালফাড়া গ্রামের কৃষক বাচ্চু মিয়া বলেন, “২০ শতক জমি আবাদ করিচ্ছি। সেই ধান পানির নিচোত পড়ি আছে। এখন বউ-বাচ্চা নিয়া খামো কী?”
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান বলেন, পানি-হ্রাস বৃদ্ধির মধ্যে থেমে নেই নদ-নদীর ভাঙন।
তিস্তার ভাঙনে রাজারহাটের গতিয়াশাম, চর গতিয়াশাম ও ধরলার ভাঙনে বেগমগঞ্জ, সারডোবসহ কয়েকটি এলাকা নদী গর্ভে বিলীন হচ্ছে।
গত এক সপ্তাহে এসব এলাকায় গৃহহীন হয়েছে অন্তত ৩ শতাধিক পরিবার। বেগমগঞ্জে নদী ভাঙনে বিলীন হয়েছে একটি কমিউনিটি ক্লিনিক ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র। ঝুঁকিতে পড়েছে বিদ্যালয়।