কুশিয়ারায় হাজী আব্দুল মালেক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে কিছুক্ষণ পর পর অন্তত ১১টি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়৷
Published : 08 May 2024, 02:51 PM
নারায়ণগঞ্জের বন্দর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একটি কেন্দ্রের বাইরে অন্তত ১১টি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া গেছে৷ এ সময় কেন্দ্রটির আশপাশে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের জটলা ছিল৷ পরে তাদের সরিয়ে দেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা৷
বন্দর ইউনিয়নের কুশিয়ারায় হাজী আব্দুল মালেক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের বাইরে বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত কিছুক্ষণ পর পর এ বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়৷
বিস্ফোরণের পর কেন্দ্রটিতে ভোটার উপস্থিতি কমে যায়৷ যদিও কেন্দ্রটির আশপাশে বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী টহল দিতে দেখা গেছে৷ খবর পেয়ে কেন্দ্রটি অবস্থান নেন রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ।
এ ঘটনায় কেন্দ্রটি ঘিরে নিরাপত্তা জোরদারে অতিরিক্ত পুলিশ, বিজিবি ও ব়্যাব সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা কাজী ইস্তাফিজুল হক আকন্দ৷
সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেন তিনি৷
চিংড়ি প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী আতাউর রহমান মুকুলের অভিযোগ, দোয়াত-কলম প্রতীকের প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ রশিদের অনুসারী ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থকরা ‘হাতবোমার’ বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে৷
“এ কেন্দ্রের ভোটার আমি৷ কাছেই আমার বাড়ি৷ সকালে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট দিয়েছি৷ এ এলাকায় আমার জনপ্রিয়তা আছে, ভোটব্যাংকও বেশি৷ এ কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী ভীত হয়ে ভোটারদের মধ্যে ভীতি তৈরি করতে ছাত্রলীগের লোকজনকে দিয়ে কিছুক্ষণ পর পর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটাচ্ছেন।”
সকাল থেকে কেন্দ্রটিতে অবস্থান করে দেখা যায়, ভোট শুরুর এক ঘণ্টা ভোটার উপস্থিতি কম থাকলে সময়ের সঙ্গে ভোটারের সংখ্যা বাড়তে থাকে৷ বেলা ১১টার দিকে এম এ রশিদ কেন্দ্রটি পরিদর্শনে আসেন। এ সময় তার সমর্থকরা কেন্দ্রের বাইরে দোয়াত-কলমের পক্ষে শ্লোগান দেয়৷
তিনি কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে চলে গেলে মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাবেক সভাপতি জুয়েল হোসেনসহ প্রায় শতাধিক নেতাকর্মী নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে অবস্থান নেন।
তাদের অবস্থানকালে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম বিস্ফোরণের শব্দটি পাওয়া যায়৷ এ সময় কেন্দ্রের সামনে থাকা ভোটার ও লোকজন আতঙ্কিত হয়ে ছোটাছুটি শুরু করেন।
তবে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা হাসনাত রহমান বিন্দু বলেন, “প্রথম বিস্ফোরণের সময় আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম। পরে প্রশাসনের অনুরোধে আমরা চলে এসেছি। আমরা কেউ এ কাজ করিনি৷
“চিংড়ি প্রতীকের প্রার্থীর লোকজন নিজেরাই এমনটা ঘটিয়ে আমাদের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করছেন৷ আমাদের কাছে খবর আছে, সবগুলো কেন্দ্রেই মুকুলের লোকজন এমনটা করবে।”
প্রথম বিস্ফোরণের পর নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রসিকিউশন) আব্দুল্লাহ আল মাসুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শনে এসে সাংবাদিকদের বলেন, “এটা ককটেল কিনা নিশ্চিত নই৷ কেউ কেউ বলছেন, পটকা বা হাতে তৈরি চকলেট বোমার শব্দ৷ আবার টায়ারও ফেটে যাওয়ার কথা শুনছি। একেকজন একেক কথা বলছে। তবে, আমরা কেন্দ্রের সামনে অবস্থান নেওয়া লোকজনকে অনুরোধ করার পর তারা সেখান থেকে চলে গিয়েছে।”
এরপর আরও একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়৷ দুপুর দেড়টার দিকে পর পর তিনটি বিস্ফোরণের শব্দ পাওয়া যায়৷ যদিও ওই সময় কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি সদস্যের অবস্থান ছিল৷
জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, “কেন্দ্রের সামনে পেছনে কোথাও আমরা কাউকে দাঁড়াতে দিচ্ছি না। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্কতার সঙ্গে কাজ করছে। বিস্ফোরণের উৎস এবং জড়িতদের শনাক্তের চেষ্টা চলছে।”