পাহাড়ের আঞ্চলিক একটি সংগঠন এতে জড়িত থাকতে পারে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
Published : 17 Apr 2025, 06:21 PM
খাগড়াছড়িতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের ৩০ ঘণ্টা পরও তাদের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা।
বুধবার ভোর সাড়ে ৬টায় সদর উপজেলার গিরিফুল এলাকা থেকে তাদের অপহরণ করা হয় বলে জানিয়েছেন খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল।
বৃহস্পতিবার বিকালে তিনি বলেন, “পাহাড়ের আঞ্চলিক একটি সংগঠন এতে জড়িত থাকতে পারে। মোবাইল প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপহৃতদের শনাক্ত করে উদ্ধারের চেষ্টা করছি।”
এ ঘটনায় ইউপিডিএফকে দায়ী করা হলেও, সংগঠনটি তা অস্বীকার করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুণ ত্রিপুরা বলেন, “বুধবার ভোর সাড়ে ৬টার দিকে পিসিপি চবির শাখা সদস্য রিশন চাকমা ও তার চার বন্ধুকে জোর করে তুলে নেওয়া হয়। ইউপিডিএফ (প্রসীত) এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
“আমরা তাদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। সেইসঙ্গে তাদেরকে সুস্থ অবস্থায় মুক্তি দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।”
রিশন চাকমা ছাড়া অপহরণের শিকার অন্য শিক্ষার্থীরা হলেন- চবির চারুকলা বিভাগের শিক্ষার্থী মৈত্রীময় চাকমা, নাট্যকলা বিভাগের দিব্যি চাকমা, প্রাণিবিদ্যা বিভাগের লংঙি ম্রো এবং চারুকলা বিভাগের অলড্রিন ত্রিপুরা। তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
তবে অপহরণের ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউপিডিএফের জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা। তিনি বলেন, “এ ঘটনায় আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এই ধরনের প্রতিহিংসা পরায়ণ রাজনীতি আমরা করি না। আমরা সবসময় ভ্রাতৃঘাতি সংঘাত বন্ধের পক্ষে।”
সন্তানদের অপহরণের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকরা। দিব্যি চাকমার মা ভারতী চাকমা বুধবার সন্তানদের মুক্তি চেয়ে ফেইসবুকে একটি পোস্ট করেন; যা মুহূর্তেই ছড়িয়ে পড়ে।
পোস্টে তিনি লেখেন, “প্লিজ কারোর মায়ের বুক খালি না করে, সন্তান হারানোর বেদনা যেন কারো বুকে না লাগে। আমি হাত জোড় করছে, ফিরিয়ে দেন আমাদের সন্তানদের।”
শিক্ষার্থীদের মুক্তির বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফ বলেন, “অপহরণের বিষয়টি শোনার পরই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। উপাচার্য স্যার নিজেই প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগ করেছেন।”
এদিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ শিক্ষার্থীকে অপহরণের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও অপহৃতদের দ্রুত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে অধ্যয়নরত ‘আদিবাসী’ শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, বুয়েট, চুয়েটসহ বিভিন্ন কলেজে অধ্যয়নরত ১৮৪ শিক্ষার্থী।
পাঁচ শিক্ষার্থীর মুক্তি চেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত ‘আদিবাসী’দের বিবৃতি
'বিঝু' শেষে ফেরার পথে চবির ৫ শিক্ষার্থী 'অপহরণ', ইউপিডিএফের অস্বীকার