একদিন আগে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি হস্তান্তর করা হয়।
Published : 06 Oct 2023, 07:14 PM
বিশেষ নিরাপত্তায় ঢাকা থেকে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের জন্য ইউরেনিয়ামের দ্বিতীয় চালান পাবনার ঈশ্বরদীতে প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে।
চালানটি সড়ক পথে বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে নাটোরের বনপাড়া দিয়ে শুক্রবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে গন্তব্যে পৌঁছায় বলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক শৌকত আকবর জানান।
এরআগে বৃহস্পতিবার দুপুরে রাশিয়া থেকে একটি চার্টার্ড বিমান তেজস্ক্রিয় জ্বালানির দ্বিতীয় চালান নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় বলে প্রকল্পের অন্যতম প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রাজ্জাক জানান।
প্রকল্প পরিচালক শৌকত আকবর বলেন, পর্যায়ক্রমে দেশে আরও পাঁচটি চালান আসবে। প্রাথমিক পর্যায়ে মোট সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছরে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে।
এর আগে ২৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশে এসে পৌঁছায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের জ্বালানির প্রথম চালান। পরদিন বিশেষ নিরাপত্তায় জ্বালানি প্রকল্প এলাকায় নেওয়া হয়।
শৌকত আকবর আরও বলেন, বৃহস্পতিবার বিকালে ভিডিও কনফারেন্সে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে জ্বালানি হস্তান্তর করা হয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশ বিশ্বের ৩৩তম দেশ হিসেবে পারমাণবিক বিদ্যুৎ ক্লাবে প্রবেশ করে।
“প্রথম ইউনিটের নির্মাণ কাজের সব ধরনের যন্ত্রপাতি বসানো শেষ হয়েছে। রাশিয়া প্রতিটি মালামাল ও যন্ত্রপাতি বুঝিয়ে দিচ্ছে। এখন কমিশনিং শুরু হবে। সংশ্লিষ্ট সনদ লাভের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলও প্রস্তুত করে তাদের পদায়ন করা হবে।
“রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি, পরিবহন ও রক্ষণাবেক্ষণসহ সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে। এতে কোনো ত্রুটি রাখা হয়নি। তাই নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার সুযোগ নেই।”
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প সূত্রে জানা গেছে, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে; তা চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) এবং পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পরপর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে।
ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে প্রথম চালানের আনুষ্ঠানিকতা শেষ হতে না হতেই দ্বিতীয় চালানের জ্বালানি পাঠায় রাশিয়া।
রাশিয়ার সহযোগিতায় রূপপুরে এক লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটি হচ্ছে। এই ব্যয়ের ৯০ শতাংশই রাশিয়ার ঋণ হিসেবে পাচ্ছে বাংলাদেশ।
এই বিদ্যুৎকেন্দ্রের দুই ইউনিটে দুই হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হবে; যা ২০২৫ সালে পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন-