বগুড়ায় বিএনপির সাবেক ২ নেতার মনোনয়ন বাতিল

বগুড়ার দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে।

বগুড়া প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Jan 2023, 12:03 PM
Updated : 8 Jan 2023, 12:03 PM

বগুড়ার দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল করা হয়েছে; এর মধ্যে আলোচিত বিএনপি দুই নেতাও রয়েছেন।   

মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের শেষ দিনে বগুড়া জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলাম জানান, “বগুড়ার দুটি আসনের উপ-নির্বাচনে মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ে মোট ২২ জনের মধ্যে ১১ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে।”

এর মধ্যে বগুড়া-৪ আসনের পাঁচজন এবং বগুড়া-৬ আসনের ছয়জন প্রার্থী রয়েছেন। দুটি আসনেই বাদ পড়েছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচিত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম।

বগুড়া-৪ আসনের বাতিল হওয়া প্রার্থীরা হলেন- স্বতন্ত্র প্রার্থী গোলাম মোস্তফা, ইলিয়াস আলী, বিএনপির সাবেক নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েল, আব্দুর রশিদ ও আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলম। 

বগুড়া-৬ আসনে বাংলাদেশ কংগ্রেসের প্রার্থী মনসুর রহমান, বিএনপির সাবেক নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী সরকার বাদল, আব্দুল মান্নান আকন্দ, সৈয়দ কবির আহম্মেদ মিঠু, হিরো আলম ও রাকিব হাসান।

জেলা প্রশাসন সূত্র বলছে, হলফনামায় দেওয়া তথ্যে নানা রকম গড়মিল থাকায় প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রার্থীদের দেওয়া এক শতাংশ ভোটার তালিকা যাচাই করে একাধিক ব্যক্তির সমর্থন পাওয়া যায়নি। 

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, আশরাফুল হোসেন আলম ওরফে হিরো আলমের দুই আসনেই এক শতাংশ ভোটার তালিকায় গড়মিল পাওয়া গেছে। সেখানে কয়েকজন ভোটারের সমর্থন না পাওয়ায় মনোনয়ন বাতিল করা হয়। একই রকম গড়মিল বাতিল হওয়া অন্য প্রার্থীদের তথ্যেও পাওয়া গেছে। 

মনোনয়ন নিয়ে কারও আপত্তি থাকলে তিনি আপিল করতে পারবেন।

বিএনপির ছেড়ে দেওয়া আসনে উপ-নির্বাচনে প্রার্থী হয়ে আলোচনার জন্ম দিয়েছিলেন দলটির সাবেক দুই নেতা ও জনপ্রতিনিধি। 

এর মধ্যে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন নন্দীগ্রাম পৌরসভার সাবেক মেয়র কামরুল হাসান সিদ্দিকী। 

আর বগুড়া-৪ (সদর) আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলেন শাহজাহানপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান সরকার বাদল।

কামরুল হাসান সিদ্দিকী নন্দীগ্রাম পৌর বিএনপির সাবেক সহসভাপতি এবং বিএনপির সমর্থনে দুইবারের নির্বাচিত মেয়র। তবে এখন তিনি দলের কোনো পদে নেই।

অপরদিকে সরকার বাদল অবিভক্ত সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। পরে সদর উপজেলা ভেঙে শাহজাহানপুর উপজেলাকে আলাদা করা হয়। তখন তিনি বিএনপির সমর্থনে সেখান থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনিও এখন আর বিএনপির কোনো পদে নেই।

মনোনয়ন বাতিলের পর সাবেক বিএনপি নেতা সরকার বাদল বলেন, “এটা একটা ষড়যন্ত্র। আমি নির্বাচন কমিশনে আপিল করবো, না হলে উচ্চ আদালতে যাব।”

সাবেক বিএনপি নেতা কামরুল হাসান সিদ্দিকী জুয়েলও আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন।

কামরুল হাসান সিদ্দিকী এবং সরকার বাদল দুজনের কেউ আর বিএনপিতে নেই বলে জানিয়েছিলেন বগুড়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর হেনা।

তিনি বলেন, “তাদের দুজনকে অনেক আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বিএনপির কোনো সম্পর্ক নেই।”

চার বছর পর গত ১০ ডিসেম্বর সরকারবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে সংসদ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বিএনপি; যার অংশ হিসেবে বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ আসনের সংসদ সদস্যসহ ছয়জন পদত্যাগ করেন। এর মধ্যে একজন সংরক্ষিত মহিলা সদস্য।

নির্বাচন কমিশনের ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, পাঁচটি সংসদীয় আসনে উপ-নির্বাচনের ভোট হবে আগামী ১ ফেব্রুয়ারি।

আরও পড়ুন:

Also Read: বগুড়ায় ভোটের মাঠে বিএনপির ২ সাবেক নেতা