ওই পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান থাকবে বলে জানান এসপি।
Published : 06 May 2024, 08:01 PM
এক কৃষককে ধরে মাদক মামলায় গ্রেপ্তারের ভয় দেখিয়ে দুই লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগে রাজশাহীর গোদাগাড়ী মডেল থানার পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
রোববার সন্ধ্যায় এক আদেশে তাদের প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে বলে রাজশাহী জেলা পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান।
প্রত্যাহারকৃতরা হলেন, গোদাগাড়ী মডেল থানার এসআই সত্যব্রত সরকার, আকরামুজ্জামান, এএসআই আব্দুল করিম মিন্টু, মঞ্জুরুল ইসলাম ও রঞ্জু আহমেদ।
পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান জানান, শৃংঙ্খলা পরিপন্থি কাজে জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে পাঁচ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তে এর সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর রোববার সন্ধ্যায় তাদের প্রত্যাহার করে রাজশাহী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
ওই পাঁচ পুলিশের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত চলমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
ভুক্তভোগী কৃষকের স্বজনদের বরাতে গোদাগাড়ী মডেল থানা পুলিশ জানায়, শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে গোদাগাড়ী থানার পাঁচ পুলিশ চর আষাড়িয়াদহ গ্রামে গিয়ে আব্দুস সামাদ নামের এক কৃষককে আটক করে।
আটকের পর মাদক মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে দাবি করে সামাদকে হাতকড়া পরানো হয়। এরপর তাকে একটি ফাঁকা মাঠে নিয়ে দুই ঘণ্টা বসিয়ে রেখে ৪ লাখ টাকা দাবি করেন ওই পুলিশ সদস্যরা।
টাকা না দিলে মাদক মামলায় আদালতে পাঠানোর ভয় দেখানো হয় সামাদকে।
রাত ১টার দিকে তার পরিবারের সদস্যরা নগদ ২ লাখ টাকা দিয়ে আব্দুস সামাদকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।
রোববার বিষয়টি জানাজানি হলে পুলিশ সুপারের নজরে আসে। পুলিশ সুপার প্রাথমিক তদন্তে ঘটনার সত্যতা পান। পরে পাঁচ পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহারের আদেশ জারি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে কৃষক আব্দুস সামাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
তবে চর আষাড়িয়াদহ গ্রামের তার এক আত্মীয় নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, গোদাগাড়ী থানার পুলিশ মাঝে-মধ্যেই তাদের এলাকায় গিয়ে এ ধরনের কাজ করে। যাদের আর্থিক অবস্থা কিছুটা ভালো তাদের টার্গেট করে ধরে নিয়ে যায়। এর পর মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করে।
তার দাবি, পুলিশের এই ‘আটক বাণিজ্যে’ আতঙ্কে থাকে এখানকার মানুষ।
এর আগে রোববার বিকালে উপজেলার গোগ্রাম বাজারে কাপড় ব্যবসায়ী মোর্ত্তজা আলীর ছেলে সোহানকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে গিয়ে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবির ঘটনায় প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জসহ চার পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়।
এরা হলেন, প্রেমতলী পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই রেজাউল করিম, এএসআই আনোয়ারুল ইসলাম, কনস্টেবল রেজাউল করিম ও মিলন হোসেন। তাদেরও প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়েছে।
গোদাগাড়ী মডেল থানার ওসি আব্দুল মতিন বলেন, পৃথক দুটি ঘটনায় একদিনে নয়জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। রোববার তারা সবাই থানা থেকে ছাড়পত্র নিয়ে পুলিশ লাইন্সে রিপোর্ট করেছেন।